প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিদের স্বার্থ রক্ষায় করপোরেট কোম্পানির সিন্ডিকেট বন্ধসহ ১০ দফা দাবি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ)। এসব দাবি না মানলে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে দেশের সব জেলা ও উপজেলায় প্রান্তিক খামার বন্ধের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে বিপিএ। রোববার বিপিএ’র সভাপতি মো. সুমন হাওলাদারের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।
সুমন হাওলাদার জানান, বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে, যাতে দেশের পোল্ট্রি শিল্পে প্রান্তিক খামারিরা টিকিয়ে থাকতে পারে। বর্তমানে করপোরেট কোম্পানির আধিপত্য ও সিন্ডিকেটের কারণে দেশের মুরগি ও ডিমের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, যার ফলে প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতির মুখে পড়ছে। এই সংকট দেশের খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান এবং অর্থনীতির জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করছে।
বিপিএ জানায়, বর্তমানে প্রায় ৫০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান এই সংকটের কারণে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যদি সরকারের তরফে পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে পোল্ট্রি খাতে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হতে পারে এবং প্রান্তিক খামারিরা তাদের উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে, যা জাতীয় অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
সুমন বলেন, বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে বারবার দাবি জানানোর পরেও সরকার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাদেরকে সহযোগিতা করছে। প্রান্তিক খামারিদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। সরকার যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তবে আমরা পহেলা জানুয়ারি থেকে দেশের সব জেলা ও উপজেলায় প্রান্তিক খামার বন্ধের কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে আছে— করপোরেট কোম্পানিগুলো শুধুমাত্র ফিড ও মুরগির বাচ্চা উৎপাদনে সীমাবদ্ধ থাকবে, করপোরেট কোম্পানির বাণিজ্যিকভাবে ডিম ও মুরগি উৎপাদন বন্ধ করতে হবে, ফিড ও মুরগির বাচ্চার সিন্ডিকেট বন্ধ করতে হবে, প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে, ক্ষুদ্র খামারিদের সহজ শর্তে ঋণ ও ভর্তুকি প্রদান করতে হবে, প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে হবে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য, আলাদা বাজার সুবিধা তৈরি করতে হবে প্রান্তিক খামারিদের জন্য, সরকারি নীতিমালা তৈরি করে করপোরেট সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের ফাঁদ বন্ধ করতে হবে, প্রান্তিক খামারিদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান করতে হবে।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন তার সদস্যদের স্বার্থে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।