জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ক্যাফেটেরিয়ায় ছাত্রদলের সাবেক-বর্তমান নেতাকর্মীদের নিয়ে পুনর্মিলনীতে দাওয়াত দেওয়াকে কেন্দ্র করে সাবেক নেতাদের আধিপত্যের লড়াইয়ে ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। ওই স্থানের পাশেই একটি বোমাসদৃশ বস্তু উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় এ ঘটনা ঘটে।
জাবি ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সাব্বির হোসাইন ‘দুপুরে ডাল- ভাতের দাওয়াত’ শীর্ষক এই কর্মসূচির আয়োজন করেন। এ সময় ছাত্রদলের সাবেক দুবারের সভাপতি পারভেজ মল্লিকের গ্রুপের সঙ্গে এ আয়োজন নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় এবং দুপক্ষে সংঘর্ষের উপক্রম হয়।
এদিকে এ আয়োজনে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বহিরাগতদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সাভারের কলমা ও রোয়ালিয়া থেকে আগত একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে বহিরাগতের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা নবিনুর রহমান নবিনের সঙ্গে তারা এই প্রোগ্রামে এসেছেন।
ছাত্রদলের এই প্রোগ্রামকে কেন্দ্র করে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করায় ক্যাফেটেরিয়ায় দুপুরের খাবার খাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন।
এদিকে ক্যাফেটেরিয়ার পাশেই অবস্থিত বিএনসিসি অফিসের পেছন থেকে বোমাসদৃশ বস্তু পাওয়া গেছে। পরে দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে আশুলিয়া থানা পুলিশ এসে সেটি উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করা হয়।
বোমা নিষ্ক্রিয়করণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এএকএম রাশিদুল আলম জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আমরা সংবাদ পাই বিএনসিসি অফিসের পেছনে বোমাসদৃশ বস্তু পাওয়া গেছে। নিরাপত্তা শাখা থেকে আমাকে কনফার্ম করামাত্র আমি আশুলিয়া থানার এডিশনাল এসপিকে অবহিত করি। এডিশনাল এসপি শাহিনুল কবিরের উপস্থিতিতে সেটি উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা বজায় রাখার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাকে সজাগ দৃষ্টি রাখার অনুরোধ করব।
আয়োজনে বহিরাগতদের উপস্থিতির প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা চাই না কোনোভাবেই এ ধরনের ঘটনা ঘটুক। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা সাবেক, অ্যালামনাই যারা আছেন তাদেরও সচেতন হওয়া উচিত। তাদের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনকানুনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে যেকোনো ধরনের প্রোগ্রাম করার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া।
আশুলিয়া থানার এডিশনাল এসপি শাহিনুল কবির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কল পেয়ে আমরা এখানে এসেছি। ঘটনাস্থল থেকে লাল টেপ দিয়ে পেঁচানো বোমাসদৃশ একটি বস্তু আমরা উদ্ধার করার পর নিষ্ক্রিয় করেছি। অবস্থাদৃষ্টে আমাদের মনে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার লক্ষ্যে কেউ এ কাজটি করেছে।
তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে সার্বিকভাবে সিসিটিভি নজরদারি বাড়ানোর জন্য। পাশাপাশি আমাদের পুলিশের পক্ষ থেকেও সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে এখানকার নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম রাশিদুল আলম প্রক্টরিয়াল বডিকে সঙ্গে নিয়ে ক্যাফেটেরিয়ার ভেতরে প্রবেশ করে নেতৃস্থানীয়দের দ্রুত আয়োজন শেষ করে স্থান ত্যাগ করার নির্দেশ প্রদান করেন।