দফায় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রসহ ওয়াশিংটনের মিত্র দেশগুলোকে একের পর এক হুমকি দিয়ে চলেছে উত্তর কোরিয়া। এমনকি পশ্চিমা দেশগুলোকে ভয়াবহ সামরিক প্রতিক্রয়ার হুমকিও দিয়ে রেখেছে পিয়ংইয়ং। আর এবার যেন জাতিসংঘকেও ছাড়ল না পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি।
অর্থাৎ উত্তর কোরিয়া এবার জাতিসংঘকে লক্ষ্যবস্তু করেছে এবং সংস্থাটির প্রধানকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে আখ্যায়িত করেছে। সোমবার (২১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষাবলম্বন করার এবং নিরপেক্ষতা ও বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছেন।
রয়টার্স বলছে, সোমবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো সন হুইয়ের একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, নিজের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য অস্ত্র তৈরির অধিকার রয়েছে পরমাণু অস্ত্রে সজ্জিত উত্তর কোরিয়ার।
বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো সন হুই বলেছেন, ‘সম্প্রতি জাতিসংঘের মহাসচিবকে প্রায়শই আমি যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউস বা মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন সদস্যের মতো আচরণ করতে দেখেছি।’
চলতি বছর উত্তর কোরিয়া রেকর্ড সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাও রয়েছে এবং ওই পরীক্ষা ব্যর্থ হয়েছিল বলে মনে করা হয়। এছাড়া সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র যৌথ সামরিক মহড়া চালানোর সময় সমুদ্রে শত শত আর্টিলারি শেল নিক্ষেপ করে পিয়ংইয়ং। নিক্ষেপ করা এসব গোলাবারুদের কিছু জাপানের অংশেও পতিত হয়।
কয়েকদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রকেও সরাসরি হুমকি দেন চো সন হুই। সেসময় উত্তর কোরিয়ার এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনটি দেশের (যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া) সাম্প্রতিক ‘যুদ্ধ মহড়া’ উত্তর কোরিয়ার লাগাম টেনে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে এবং এতে করে ওই দেশ তিনটি বরং নিজেদের ওপর ‘আরও গুরুতর, বাস্তবসম্মত এবং অনিবার্য হুমকি’ ডেকে নিয়ে এসেছে।
উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ)-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেসময় এক বিবৃতিতে চো বলেন- ‘যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের রক্ষার জন্য পদক্ষেপ যত জোরদার করবে এবং তারা যত বেশি উস্কানিমূলক ও ব্লাফিং সামরিক তৎপরতা বাড়াবে… উত্তর কোরিয়ার সামরিক প্রতিক্রিয়া ও জবাব ততই ভয়াবহ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বেশ ভালোভাবেই সচেতন হবে যে, এই ধরনের কর্মকাণ্ড আসলে জুয়া এবং এর জন্য ওয়াশিংটন অবশ্যই অনুশোচনা করবে।’