ঢাকা ০৮:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ড. ইউনূসের সঙ্গে শহিদ আবু সাঈদের পরিবারের সাক্ষাৎ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ আবু সাঈদের দুই ভাই রমজান আলী ও আবু হোসেন।সাক্ষাতে তারা ড. ইউনূসকে বাবা-মায়ের সালাম ও শুভকামনা জানান।

বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ সাক্ষাৎ হয়।

গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রফেসর ইউনূস তার ঐতিহাসিক ভাষণে আবু সাঈদ ও অন্যান্য শহিদদের আত্মত্যাগের কথা যখন বলছিলেন তখন আবু সাঈদের পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়েন বলে সাক্ষাতে জানান তারা।

প্রধান উপদেষ্টাকে আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বলেন, বিপ্লবে তার (আবু সাঈদ) বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা আপনি (ড. ইউনূস) তুলে ধরেছেন এবং প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার একদিন পরই রংপুরে আমাদের গ্রামে আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন এতে আমরা সম্মানিত বোধ করেছি।

সাক্ষাতে তারা আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে জানান এবং হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।তারা শহিদ আবু সাঈদের নামে একটি ফাউন্ডেশন তৈরির কথাও জানান এবং গ্রামে একটি মডেল মসজিদ ও একটি মেডিকেল কলেজ তৈরির আশা প্রকাশ করেন। এই বিষয়ে সহায়তার জন্য দুটি মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান আবু সাঈদের দুই ভাই।

ছোট ভাই আবু হোসেন বলেন, ফাউন্ডেশনটি দরিদ্র এবং জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আহতদের জন্য কাজ করবে।

এ সময় ড. ইউনূস শহিদ আবু সাঈদের পরিবারের জন্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুলিশকে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত দ্রুত শেষ করতে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘শহিদ আবু সাঈদ জাতির জন্য যা করেছেন, তা বাংলাদেশ কখনো ভুলবে না। তার আত্মত্যাগ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে বিরাট ভূমিকা রেখেছিল।

আবু সাঈদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, তাদের জন্য তার দরজা সবসময় খোলা থাকবে।আমি সবসময় তোমাদের সঙ্গে থাকব। তোমাদের বাবা-মাকে আমার সালাম জানাবে।

এদিকে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড রেজিমেন্ট (পিজিআর) আজ প্রধান উপদেষ্টাকে গার্ড স্যালুট দেওয়ার সময় আবু সাঈদের দুই ভাইও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমরা মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলাম এবং সৈন্যরা আমাদেরকে গার্ড স্যালুট দিয়ে সম্মান জানিয়েছে, তখন আমাদের কেমন লেগেছে তা আমি বলতে পারব না।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার একদিন পর ৯ আগস্ট রংপুরে আবু সাঈদের বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। শহিদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতও করেন তিনি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ড. ইউনূসের সঙ্গে শহিদ আবু সাঈদের পরিবারের সাক্ষাৎ

আপডেট সময় ০৬:৩৮:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ আবু সাঈদের দুই ভাই রমজান আলী ও আবু হোসেন।সাক্ষাতে তারা ড. ইউনূসকে বাবা-মায়ের সালাম ও শুভকামনা জানান।

বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ সাক্ষাৎ হয়।

গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রফেসর ইউনূস তার ঐতিহাসিক ভাষণে আবু সাঈদ ও অন্যান্য শহিদদের আত্মত্যাগের কথা যখন বলছিলেন তখন আবু সাঈদের পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়েন বলে সাক্ষাতে জানান তারা।

প্রধান উপদেষ্টাকে আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বলেন, বিপ্লবে তার (আবু সাঈদ) বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা আপনি (ড. ইউনূস) তুলে ধরেছেন এবং প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার একদিন পরই রংপুরে আমাদের গ্রামে আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন এতে আমরা সম্মানিত বোধ করেছি।

সাক্ষাতে তারা আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে জানান এবং হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।তারা শহিদ আবু সাঈদের নামে একটি ফাউন্ডেশন তৈরির কথাও জানান এবং গ্রামে একটি মডেল মসজিদ ও একটি মেডিকেল কলেজ তৈরির আশা প্রকাশ করেন। এই বিষয়ে সহায়তার জন্য দুটি মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান আবু সাঈদের দুই ভাই।

ছোট ভাই আবু হোসেন বলেন, ফাউন্ডেশনটি দরিদ্র এবং জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আহতদের জন্য কাজ করবে।

এ সময় ড. ইউনূস শহিদ আবু সাঈদের পরিবারের জন্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুলিশকে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত দ্রুত শেষ করতে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘শহিদ আবু সাঈদ জাতির জন্য যা করেছেন, তা বাংলাদেশ কখনো ভুলবে না। তার আত্মত্যাগ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে বিরাট ভূমিকা রেখেছিল।

আবু সাঈদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, তাদের জন্য তার দরজা সবসময় খোলা থাকবে।আমি সবসময় তোমাদের সঙ্গে থাকব। তোমাদের বাবা-মাকে আমার সালাম জানাবে।

এদিকে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড রেজিমেন্ট (পিজিআর) আজ প্রধান উপদেষ্টাকে গার্ড স্যালুট দেওয়ার সময় আবু সাঈদের দুই ভাইও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমরা মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলাম এবং সৈন্যরা আমাদেরকে গার্ড স্যালুট দিয়ে সম্মান জানিয়েছে, তখন আমাদের কেমন লেগেছে তা আমি বলতে পারব না।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার একদিন পর ৯ আগস্ট রংপুরে আবু সাঈদের বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। শহিদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতও করেন তিনি।