ঢাকা ০৮:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে মুক্তি পাচ্ছে ‘রুম নম্বর ২০১১’ গণতন্ত্র ও বিএনপি সমান্তরাল : মির্জা ফখরুল আ.লীগ দেশকে পরনির্ভরশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল : তারেক রহমান

কুমিল্লায় বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ১৫, ফসলের ক্ষতি ৮৪৮ কোটি

কুমিল্লায় গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে ও ফেনীর বন্যার পানিতে মারাত্মক বিপর্যস্ত জনজীবন। আকস্মিক বন্যা জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলাতেই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দিশেহারা অবস্থায় বাড়িঘর ফেলে প্রাণে বাঁচতে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন মানুষ। জেলায় ১২ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় জীবনযাপন করছেন। এখন পর্যন্ত কুমিল্লায় বন্যার পানিতে ১৫ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা। এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় কৃষি বিভাগের ৮৪৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে ৬৩ হাজার ৭৯৪ হেক্টর ফসলি জমি।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লায় মৃত ১৫ জনের মধ্যে বুড়িচং উপজেলায় শিশুসহ ৪ জন, তিতাসে ২ জন, নাঙ্গলকোটে ৩ জন, লাকসামে ৩ জন এবং মুরাদনগর, মনোহরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণপাড়ায় ১ জন করে মারা গেছেন।

কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১৪ উপজেলায় ১ লাখ ৩৫ হাজার ২৩৫ হেক্টর জমিতে ফসল আবাদ করা হয়েছিল। বন্যায় ৬৩ হাজার ৭৯৪ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব ফসলের মধ্যে রোপা আমন বীজতলা ৪ হাজার ৫১৫ হেক্টর ও ধান ২৩ হাজার ৩০৯ হেক্টর, শাকসবজি ২ হাজার ১৯ হেক্টর, রোপা আউশ ৩৩ হাজার ৫৮০ হেক্টর, বোনা আমন ৩৩৫ হেক্টর এবং ২১৬ হেক্টর আখ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার ৬৪১ হেক্টর রোপা আমন, ১ হাজার ৬১৫ হেক্টর খরিপ শাকসবজি, ২০ হাজার হেক্টর রোপা আউশ এবং ১১ হেক্টর আখ ফসলের জমি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪০৪ হেক্টর শাকসবজি, ১৩ হাজার ৪৩২ হেক্টর রোপা আউশ এবং ২০৫ হেক্টর আখ ফসলের জমি।

ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে আছে ২২৩ কোটি ৪১ লাখ টাকার রোপা আমন বীজতলা, ২৬৯ কোটি ৯৮ লাখ ৪৩ হাজার টাকার রোপা আমন, ৪৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শাকসবজি, ২৯৭ কোটি ৮৫ লাখ ৭২ হাজার টাকার রোপা আউশ এবং ৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকার আখের ফসল।

কুমিল্লা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী কালবেলাকে জানান, কুমিল্লা জেলাজুড়ে ১২৫টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছে ২ লক্ষাধিক পরিবার। জেলাজুড়ে ৭২৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা ও বন্যায় পানিবন্দিদের পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত বয়স্ক ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য ২০৭টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক আইয়ুব মাহমুদ কালবেলাকে বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। প্রতিদিনই বন্যার পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বন্যাপরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষিজমি এবং কৃষকদের পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেওয়া হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে

কুমিল্লায় বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ১৫, ফসলের ক্ষতি ৮৪৮ কোটি

আপডেট সময় ০৩:৪৫:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৪

কুমিল্লায় গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে ও ফেনীর বন্যার পানিতে মারাত্মক বিপর্যস্ত জনজীবন। আকস্মিক বন্যা জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলাতেই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দিশেহারা অবস্থায় বাড়িঘর ফেলে প্রাণে বাঁচতে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন মানুষ। জেলায় ১২ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় জীবনযাপন করছেন। এখন পর্যন্ত কুমিল্লায় বন্যার পানিতে ১৫ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা। এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় কৃষি বিভাগের ৮৪৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে ৬৩ হাজার ৭৯৪ হেক্টর ফসলি জমি।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লায় মৃত ১৫ জনের মধ্যে বুড়িচং উপজেলায় শিশুসহ ৪ জন, তিতাসে ২ জন, নাঙ্গলকোটে ৩ জন, লাকসামে ৩ জন এবং মুরাদনগর, মনোহরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণপাড়ায় ১ জন করে মারা গেছেন।

কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১৪ উপজেলায় ১ লাখ ৩৫ হাজার ২৩৫ হেক্টর জমিতে ফসল আবাদ করা হয়েছিল। বন্যায় ৬৩ হাজার ৭৯৪ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব ফসলের মধ্যে রোপা আমন বীজতলা ৪ হাজার ৫১৫ হেক্টর ও ধান ২৩ হাজার ৩০৯ হেক্টর, শাকসবজি ২ হাজার ১৯ হেক্টর, রোপা আউশ ৩৩ হাজার ৫৮০ হেক্টর, বোনা আমন ৩৩৫ হেক্টর এবং ২১৬ হেক্টর আখ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার ৬৪১ হেক্টর রোপা আমন, ১ হাজার ৬১৫ হেক্টর খরিপ শাকসবজি, ২০ হাজার হেক্টর রোপা আউশ এবং ১১ হেক্টর আখ ফসলের জমি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪০৪ হেক্টর শাকসবজি, ১৩ হাজার ৪৩২ হেক্টর রোপা আউশ এবং ২০৫ হেক্টর আখ ফসলের জমি।

ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে আছে ২২৩ কোটি ৪১ লাখ টাকার রোপা আমন বীজতলা, ২৬৯ কোটি ৯৮ লাখ ৪৩ হাজার টাকার রোপা আমন, ৪৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শাকসবজি, ২৯৭ কোটি ৮৫ লাখ ৭২ হাজার টাকার রোপা আউশ এবং ৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকার আখের ফসল।

কুমিল্লা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী কালবেলাকে জানান, কুমিল্লা জেলাজুড়ে ১২৫টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছে ২ লক্ষাধিক পরিবার। জেলাজুড়ে ৭২৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা ও বন্যায় পানিবন্দিদের পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত বয়স্ক ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য ২০৭টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক আইয়ুব মাহমুদ কালবেলাকে বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। প্রতিদিনই বন্যার পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বন্যাপরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষিজমি এবং কৃষকদের পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেওয়া হবে।