ঢাকা ০৬:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

আমরা যুদ্ধ করছি আর মেসি-নেইমার গলা জড়িয়ে হাঁটছে: তপু

আর মাত্র দুদিন পরই শুরু হচ্ছে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল-২০২২’। এ বছর কাতারে বসছে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত এই ফুটবল মহাযজ্ঞ। ফুটবল বিশ্বকাপকে ঘিরে এখন সরগরম গোটা দুনিয়া। বরাবরের মতো বাংলাদেশও মেতেছে এই আয়োজনকে ঘিরে। তবে বিশ্বকাপে অংশ নেয়া দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের সমর্থকই বেশি। দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী রাশেদ উদ্দিন আহমেদ তপু ছোটবেলা থেকেই ব্রাজিল সমর্থক। তবে এবারের বিশ্বকাপটা আর্জেন্টিনার হাতে দেখতে চান এই তারকা! এর কারণ দলটির প্রাণভ্রোমরা বিশ্বসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি।

বৃহস্পতিবার (১৭) দুপুরে বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের মতামত জানিয়েছেন তপু। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘এবারের কাতার বিশ্বকাপ-২০২২ হতে পারে মেসির শেষ বিশ্বকাপ! মেনে নিতে কষ্ট হয়।’

তপুর কথায়, ‘২০০২ বিশ্বকাপের পর আমি ফুটবল খেলা ওভাবে আর অনুসরণ করতে পারিনি। ভাবতাম আমাদের সময়ের ফুটবলের সর্বোচ্চ সৌন্দর্য দেখা হয়ে গেছে (বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল দলের মাধ্যমে)। এর কিছু বছর পর দুটি নাম ঘুরে ফিরে কানে আসতে থাকে মেসি এবং রোনালদো। যদিও মনে মনে ভাবতাম নতুন কি দেখবো আর? কি আর দেখা সম্ভব? পেলে, ম্যারাডোনা, ইয়োহান ক্রুইফ, জর্জ বেস্ট, আলফ্রেডো দি স্তেফানোর খেলাও দেখা হয়েছে ফুটবল আর্কাইভের পুরনো ক্লিপ্সগুলো থেকে, আর নতুন কিই বা হতে পারে?’

‘এক পায়ে নূপুর’ খ্যাত এই গায়কের ভাষ্য, ‘এরপর মাঝে মাঝে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও লা’লিগা দেখা, সাথে আমার মুগ্ধতা ক্রমাগত বেড়েই চলা, আর বুঝতে পারা ফুটবল মুগ্ধতায় শেষ বলে কিছু নেই।  আমাদের বয়সের সকল ফুটবল প্রেমীর এরপরের গল্প জানা। এই দুইজন খেলোয়াড় আমাদের উপহার দিয়েছে কিছু অনিন্দ্য সুন্দর মুহূর্ত। প্রতিবছর সর্বোচ্চ গোলদাতা অথবা ব্যালন ডি’ওর যেন এই দুজনের জন্যেই বরাদ্দ ছিল।’

তপু
তপু

তপু লেখেন, ‘অনেকের মতোই আমার মনে হয় মেসি জন্মগতভাবে একজন সাবলীল ফুটবলার, আর রোনালদো হচ্ছে কঠোর পরিশ্রমে নিজেকে গড়ে তোলা একজন। তবে একান্ত নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি এবং ভালোলাগার জায়গা থেকে আমার মনে হয় মেসি সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় এবং একজন নিঃস্বার্থ, ভালো মানুষও বটে।’

মেসিকে ভালোলাগার কারণও ব্যাখা করেন তপু। কেন মেসি আমার ভালোলাগার জায়গায়? ‘মনোমুগ্ধকর ড্রিবলিং, সঠিক সময় সঠিক পাস, নিঃস্বার্থ, ফ্রি কিকে শ্রেষ্ঠত্ব, নির্ভুল পাস, দলের প্রয়োজনে নিজের অবস্থান মানিয়ে নেয়া, এছাড়াও আরও অনেক কারণে। সর্বোপরি প্রতিপক্ষের গতি প্রকৃতি সবার আগেই তার মস্তিষ্ক বুঝতে পারে এবং সেই অনুযায়ী খুব দ্রুত ড্রিবলিংই তাকে অন্যদের থেকে অনন্য করে তুলেছে, আর তার সাথে নির্ভুল পাস ও ফ্রি কিক তো আছেই।’

তপু লেখেন, ‘অনেকেই হয়তো ভাবছেন একজন ব্রাজিল সমর্থক হয়ে কেন আমি মেসির বন্দনায় মত্ত? হ্যাঁ, আমি অবশ্যই ব্রাজিল দলের সমর্থক, তবে আমি তারচেয়েও বড় সমর্থক ফুটবল খেলার। যেই খেলোয়াড়ের খেলা আমার ছোট জীবনে এতো সুন্দর কিছু মুহূর্ত উপহার দিয়েছে তাকে অস্বীকার করাটা হবে ভণ্ডামি। আমি মনে প্রাণে চাই মেসি তার জীবনে একটা বিশ্বকাপ জিতুক, কিন্তু তা অবশ্যই ব্রাজিলকে না হারিয়ে। কী অস্বাভাবিক চাওয়া, কি অদ্ভুত দোটানায় এই মন। আমি বিশ্বাস করি আমার মতো এরকম অনেকেই আছেন, নাকি ‘সবাই কি ভাববে’ এই ভেবে চুপ করে আছেন? হা হা হা…ঝেড়ে কাশুন, বলে ফেলুন।’

এবারের বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখতে কাতার যাচ্ছেন জানিয়ে তপু লেখেন, ‘আমার অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল একটা ওয়ার্ল্ডকাপ স্বশরীরে দেখার। এইবারের বিশ্বকাপ দেখতে যাবার জন্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। যদিও ফাইনালের টিকেট পাইনি, কিন্তু ভালো কিছু খেলার টিকেট পেয়েছি, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে রাউন্ড অব ১৬ থেকে কাতার এ থাকব।’

‘যাত্রী’ ব্যান্ডের এই দলনেতা-গায়কের কথায়, ‘আমরা সারাজীবন ব্রাজিল -আর্জেন্টিনার নামে অনেক ঝগড়া, কথা কাটাকাটি দেখেছি, যা কখনোই একটা সীমারেখা অতিক্রম করা উচিত নয়। ভাবুন তো আমরা এখানে যুদ্ধ করছি আর ঐদিকে মাঠে মেসি আর নেইমার গলা জড়িয়ে হাঁটছে!’

সবশেষ তপু লেখেন ‘তবে যুক্তি-তর্ক-ঝগড়া একদম না করলে আবার বিশ্বকাপের আনন্দ থাকবে না। এবার ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার খেলা হলে আমার দেখতে খুব কষ্ট হবে। তবে এটুকু জানি শেষ পর্যন্ত ফুটবলেরই জয় হবে। সবাইকে ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২ উপভোগের আগাম শুভেচ্ছা।’

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি

আমরা যুদ্ধ করছি আর মেসি-নেইমার গলা জড়িয়ে হাঁটছে: তপু

আপডেট সময় ০৭:৪২:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২২

আর মাত্র দুদিন পরই শুরু হচ্ছে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল-২০২২’। এ বছর কাতারে বসছে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত এই ফুটবল মহাযজ্ঞ। ফুটবল বিশ্বকাপকে ঘিরে এখন সরগরম গোটা দুনিয়া। বরাবরের মতো বাংলাদেশও মেতেছে এই আয়োজনকে ঘিরে। তবে বিশ্বকাপে অংশ নেয়া দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের সমর্থকই বেশি। দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী রাশেদ উদ্দিন আহমেদ তপু ছোটবেলা থেকেই ব্রাজিল সমর্থক। তবে এবারের বিশ্বকাপটা আর্জেন্টিনার হাতে দেখতে চান এই তারকা! এর কারণ দলটির প্রাণভ্রোমরা বিশ্বসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি।

বৃহস্পতিবার (১৭) দুপুরে বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের মতামত জানিয়েছেন তপু। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘এবারের কাতার বিশ্বকাপ-২০২২ হতে পারে মেসির শেষ বিশ্বকাপ! মেনে নিতে কষ্ট হয়।’

তপুর কথায়, ‘২০০২ বিশ্বকাপের পর আমি ফুটবল খেলা ওভাবে আর অনুসরণ করতে পারিনি। ভাবতাম আমাদের সময়ের ফুটবলের সর্বোচ্চ সৌন্দর্য দেখা হয়ে গেছে (বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল দলের মাধ্যমে)। এর কিছু বছর পর দুটি নাম ঘুরে ফিরে কানে আসতে থাকে মেসি এবং রোনালদো। যদিও মনে মনে ভাবতাম নতুন কি দেখবো আর? কি আর দেখা সম্ভব? পেলে, ম্যারাডোনা, ইয়োহান ক্রুইফ, জর্জ বেস্ট, আলফ্রেডো দি স্তেফানোর খেলাও দেখা হয়েছে ফুটবল আর্কাইভের পুরনো ক্লিপ্সগুলো থেকে, আর নতুন কিই বা হতে পারে?’

‘এক পায়ে নূপুর’ খ্যাত এই গায়কের ভাষ্য, ‘এরপর মাঝে মাঝে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও লা’লিগা দেখা, সাথে আমার মুগ্ধতা ক্রমাগত বেড়েই চলা, আর বুঝতে পারা ফুটবল মুগ্ধতায় শেষ বলে কিছু নেই।  আমাদের বয়সের সকল ফুটবল প্রেমীর এরপরের গল্প জানা। এই দুইজন খেলোয়াড় আমাদের উপহার দিয়েছে কিছু অনিন্দ্য সুন্দর মুহূর্ত। প্রতিবছর সর্বোচ্চ গোলদাতা অথবা ব্যালন ডি’ওর যেন এই দুজনের জন্যেই বরাদ্দ ছিল।’

তপু
তপু

তপু লেখেন, ‘অনেকের মতোই আমার মনে হয় মেসি জন্মগতভাবে একজন সাবলীল ফুটবলার, আর রোনালদো হচ্ছে কঠোর পরিশ্রমে নিজেকে গড়ে তোলা একজন। তবে একান্ত নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি এবং ভালোলাগার জায়গা থেকে আমার মনে হয় মেসি সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় এবং একজন নিঃস্বার্থ, ভালো মানুষও বটে।’

মেসিকে ভালোলাগার কারণও ব্যাখা করেন তপু। কেন মেসি আমার ভালোলাগার জায়গায়? ‘মনোমুগ্ধকর ড্রিবলিং, সঠিক সময় সঠিক পাস, নিঃস্বার্থ, ফ্রি কিকে শ্রেষ্ঠত্ব, নির্ভুল পাস, দলের প্রয়োজনে নিজের অবস্থান মানিয়ে নেয়া, এছাড়াও আরও অনেক কারণে। সর্বোপরি প্রতিপক্ষের গতি প্রকৃতি সবার আগেই তার মস্তিষ্ক বুঝতে পারে এবং সেই অনুযায়ী খুব দ্রুত ড্রিবলিংই তাকে অন্যদের থেকে অনন্য করে তুলেছে, আর তার সাথে নির্ভুল পাস ও ফ্রি কিক তো আছেই।’

তপু লেখেন, ‘অনেকেই হয়তো ভাবছেন একজন ব্রাজিল সমর্থক হয়ে কেন আমি মেসির বন্দনায় মত্ত? হ্যাঁ, আমি অবশ্যই ব্রাজিল দলের সমর্থক, তবে আমি তারচেয়েও বড় সমর্থক ফুটবল খেলার। যেই খেলোয়াড়ের খেলা আমার ছোট জীবনে এতো সুন্দর কিছু মুহূর্ত উপহার দিয়েছে তাকে অস্বীকার করাটা হবে ভণ্ডামি। আমি মনে প্রাণে চাই মেসি তার জীবনে একটা বিশ্বকাপ জিতুক, কিন্তু তা অবশ্যই ব্রাজিলকে না হারিয়ে। কী অস্বাভাবিক চাওয়া, কি অদ্ভুত দোটানায় এই মন। আমি বিশ্বাস করি আমার মতো এরকম অনেকেই আছেন, নাকি ‘সবাই কি ভাববে’ এই ভেবে চুপ করে আছেন? হা হা হা…ঝেড়ে কাশুন, বলে ফেলুন।’

এবারের বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখতে কাতার যাচ্ছেন জানিয়ে তপু লেখেন, ‘আমার অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল একটা ওয়ার্ল্ডকাপ স্বশরীরে দেখার। এইবারের বিশ্বকাপ দেখতে যাবার জন্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। যদিও ফাইনালের টিকেট পাইনি, কিন্তু ভালো কিছু খেলার টিকেট পেয়েছি, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে রাউন্ড অব ১৬ থেকে কাতার এ থাকব।’

‘যাত্রী’ ব্যান্ডের এই দলনেতা-গায়কের কথায়, ‘আমরা সারাজীবন ব্রাজিল -আর্জেন্টিনার নামে অনেক ঝগড়া, কথা কাটাকাটি দেখেছি, যা কখনোই একটা সীমারেখা অতিক্রম করা উচিত নয়। ভাবুন তো আমরা এখানে যুদ্ধ করছি আর ঐদিকে মাঠে মেসি আর নেইমার গলা জড়িয়ে হাঁটছে!’

সবশেষ তপু লেখেন ‘তবে যুক্তি-তর্ক-ঝগড়া একদম না করলে আবার বিশ্বকাপের আনন্দ থাকবে না। এবার ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার খেলা হলে আমার দেখতে খুব কষ্ট হবে। তবে এটুকু জানি শেষ পর্যন্ত ফুটবলেরই জয় হবে। সবাইকে ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২ উপভোগের আগাম শুভেচ্ছা।’