ঢাকা ০৫:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
নাটোরের সিংড়া কর্তব্যরত চিকিৎসক শিবলী নোমান শুভ নামে এক চিকিৎসককে লাঞ্ছিত ঘটনায় ২জন গ্রেতার একমাস মুম্বাইয়ে থাকবেন শাকিব, সঙ্গে কি ইধিকাও যাচ্ছেন? গাইবান্ধায় ভুয়া প্রেসক্লাব খুলে কথিত সাংবাদিকরা হেনাস্তা করছে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী ও ব্যবসায়ীদের সাবেক এমপি প্রিন্সের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা পঞ্চদশ সংশোধনী বৈধতার বিষয়ে হাইকোর্টে চূড়ান্ত শুনানি ৩০ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগের ষড়যন্ত্র জনগণ রুখে দাঁড়াবে শাহজাহান চৌধুরী দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিরোধে সিন্ডিকেট ভাঙার বিকল্প নেই আনোয়ার আলম চৌধুরী বিস্ফোরক ও হত্যা চেষ্টা মামলায় গ্রেফতার ব্যারিস্টার সুমন নিরাপদ সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থা রাষ্ট্রের অন্যতম নিয়ামক: রাষ্ট্রপতি ব্যারিস্টার সুমন ৫ দিনের রিমান্ডে

কোটা ব্যবস্থা বাতিল দাবি সড়ক ও রেলপথ অবরোধ শিক্ষার্থীদের

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে বুধবার দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজধানীর শাহবাগ মোড়, জগন্নাথের শিক্ষার্থীরা তাঁতীবাজার মোড়, শেরেবাংলা কৃষির শিক্ষার্থীরা আগারগাঁও-খামারবাড়ি সড়ক, জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে এসব সড়ক-মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। চরম ভোগান্তির শিকার হন যাত্রীরা। ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ট্রেন থামিয়ে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ করেন। একই দাবিতে এদিন রাজশাহী, বেগম রোকেয়া ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন, পদযাত্রা ও বিক্ষোভ হয়েছে। শিক্ষার্থীরা কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দাবিতে আন্দোলন করছেন। আজও এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মকসূচি পালন করবেন তারা।

শাহবাগ মোড় : বেলা আড়াইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর-টিএসসি-হাইকোর্ট-মৎস্যভবন হয়ে বিকাল পৌনে ৪টায় শাহবাগ মোড়ে যায়। শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান নিয়ে ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ,’ ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। এতে শাহবাগ মোড় অচল হয়ে পড়ে। দেড় ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত করলে যান চলাচল ফের স্বাভাবিক হয়।

তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ : বেলা সাড়ে ৩টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করেন। এ সময় তারা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘জেগেছে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘আঠারোর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার’, কোটা প্রথা নিপাত চাই, মেধাবীরা মুক্তি পাক’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। ১ ঘণ্টা পর তারা অবরোধ তুলে নিলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি কবি নজরুল কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থী জসিম উদ্দিন বলেন, আন্দোলন যতদিন না সফল হবে, ততদিন আমরা ঘরে ফিরব না।

আগারগাঁও-খামারবাড়ি সড়ক : রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে দুপুর ১২টায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার দেশ আমার মা, বৈষম্য মানি না; কোটা বৈষম্য দূর কর, নইলে বুকে গুলি কর; সারা বাংলা খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে; ইত্যাদি স্লোগান দেন। পরে আগারগাঁও-খামারবাড়ি সড়ক অবরোধ করেন শতাধিক শিক্ষার্থী। এতে সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। পরে দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক : ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ২ ঘণ্টা (বেলা ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত) ধরে অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের যুগ্ম-সম্পাদক ওমর ফারুক বান্না বলেন, বাংলাদেশের মেধাকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরকার বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। আমরা কখনোই এই বৈষম্য মেনে নেব না। এদিকে অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকাগামী লেনে আমিন বাজার পর্যন্ত এবং অপর লেনে চন্দ্রা পর্যন্ত যানজট দেখা দেয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন কয়েক হাজার যাত্রী।

অবরোধ চলাকালে নেতাকর্মীসহ আটকা পড়েন ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ-সদস্য মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। এ সময় তার অনুসারীরা গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা গাড়ি ছাড়তে অস্বীকৃতি জানান। এ সময় তিনি কিছুক্ষণ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসংলগ্ন সাভারের কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে অবস্থান করেন। এরপরেও শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই গাড়ি যেতে না দেওয়ায় একপর্যায়ে তিনি সিএন্ডবি পর্যন্ত হেঁটে গিয়ে আরেকটি গাড়িতে হেমায়েতপুরের উদ্দেশে যাত্রা করেন।

ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ : বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা দুই দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল জব্বার মোড়ে রেললাইন অবরোধ করেন। ওই সময় ১ ঘণ্টা ট্রেন অবরোধ করে রাখা হয়। দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে সমবেত হন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেআর মার্কেট হয়ে মুক্তমঞ্চে এসে শেষ হয়। সেখানে একটি প্রতিবাদ সভা করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল জব্বার মোড় পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। ওই সময় ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেন আটকে রেখে বিক্ষোভ করেন তারা। প্রায় ১ ঘণ্টা পর দুপুর ২টা ২০ মিনিটে তারা রেললাইন অবরোধ তুলে নেন। পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক : কাফনের কাপড় পরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। ববির গেটসংলগ্ন মহাসড়ক অবরোধ করে বেলা ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত অবস্থান নেন তারা। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে কয়েকশ যানবাহন আটকা পড়ে। নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনালের কাঁঠালতলা এলাকা থেকে ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার জিরো পয়েন্ট তীব্র যানজট দেখা দেয়। চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। অনেকে ব্যাগ-বস্তা মাথায় নিয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ কয়েক কিলোমিটার হেঁটে গন্তব্যে রওয়ানা দেন। পরে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক ছাড়লে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পটুয়াখালীর ইয়াসিন হাওলাদার বলেন, স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে বরিশালে এসে মহাবিপদে পড়েছি। বাসে ২ ঘণ্টা বসে থেকে বাধ্য হয়ে হাঁটা শুরু করেছি। আমার অসুস্থ স্ত্রী আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নাটোরের সিংড়া কর্তব্যরত চিকিৎসক শিবলী নোমান শুভ নামে এক চিকিৎসককে লাঞ্ছিত ঘটনায় ২জন গ্রেতার

কোটা ব্যবস্থা বাতিল দাবি সড়ক ও রেলপথ অবরোধ শিক্ষার্থীদের

আপডেট সময় ১২:৪৫:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে বুধবার দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজধানীর শাহবাগ মোড়, জগন্নাথের শিক্ষার্থীরা তাঁতীবাজার মোড়, শেরেবাংলা কৃষির শিক্ষার্থীরা আগারগাঁও-খামারবাড়ি সড়ক, জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে এসব সড়ক-মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। চরম ভোগান্তির শিকার হন যাত্রীরা। ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ট্রেন থামিয়ে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ করেন। একই দাবিতে এদিন রাজশাহী, বেগম রোকেয়া ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন, পদযাত্রা ও বিক্ষোভ হয়েছে। শিক্ষার্থীরা কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দাবিতে আন্দোলন করছেন। আজও এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মকসূচি পালন করবেন তারা।

শাহবাগ মোড় : বেলা আড়াইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর-টিএসসি-হাইকোর্ট-মৎস্যভবন হয়ে বিকাল পৌনে ৪টায় শাহবাগ মোড়ে যায়। শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান নিয়ে ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ,’ ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। এতে শাহবাগ মোড় অচল হয়ে পড়ে। দেড় ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত করলে যান চলাচল ফের স্বাভাবিক হয়।

তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ : বেলা সাড়ে ৩টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করেন। এ সময় তারা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘জেগেছে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘আঠারোর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার’, কোটা প্রথা নিপাত চাই, মেধাবীরা মুক্তি পাক’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। ১ ঘণ্টা পর তারা অবরোধ তুলে নিলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি কবি নজরুল কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থী জসিম উদ্দিন বলেন, আন্দোলন যতদিন না সফল হবে, ততদিন আমরা ঘরে ফিরব না।

আগারগাঁও-খামারবাড়ি সড়ক : রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে দুপুর ১২টায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার দেশ আমার মা, বৈষম্য মানি না; কোটা বৈষম্য দূর কর, নইলে বুকে গুলি কর; সারা বাংলা খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে; ইত্যাদি স্লোগান দেন। পরে আগারগাঁও-খামারবাড়ি সড়ক অবরোধ করেন শতাধিক শিক্ষার্থী। এতে সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। পরে দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক : ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ২ ঘণ্টা (বেলা ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত) ধরে অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের যুগ্ম-সম্পাদক ওমর ফারুক বান্না বলেন, বাংলাদেশের মেধাকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরকার বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। আমরা কখনোই এই বৈষম্য মেনে নেব না। এদিকে অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকাগামী লেনে আমিন বাজার পর্যন্ত এবং অপর লেনে চন্দ্রা পর্যন্ত যানজট দেখা দেয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন কয়েক হাজার যাত্রী।

অবরোধ চলাকালে নেতাকর্মীসহ আটকা পড়েন ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ-সদস্য মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। এ সময় তার অনুসারীরা গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা গাড়ি ছাড়তে অস্বীকৃতি জানান। এ সময় তিনি কিছুক্ষণ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসংলগ্ন সাভারের কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে অবস্থান করেন। এরপরেও শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই গাড়ি যেতে না দেওয়ায় একপর্যায়ে তিনি সিএন্ডবি পর্যন্ত হেঁটে গিয়ে আরেকটি গাড়িতে হেমায়েতপুরের উদ্দেশে যাত্রা করেন।

ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ : বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা দুই দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল জব্বার মোড়ে রেললাইন অবরোধ করেন। ওই সময় ১ ঘণ্টা ট্রেন অবরোধ করে রাখা হয়। দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে সমবেত হন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেআর মার্কেট হয়ে মুক্তমঞ্চে এসে শেষ হয়। সেখানে একটি প্রতিবাদ সভা করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল জব্বার মোড় পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। ওই সময় ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেন আটকে রেখে বিক্ষোভ করেন তারা। প্রায় ১ ঘণ্টা পর দুপুর ২টা ২০ মিনিটে তারা রেললাইন অবরোধ তুলে নেন। পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক : কাফনের কাপড় পরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। ববির গেটসংলগ্ন মহাসড়ক অবরোধ করে বেলা ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত অবস্থান নেন তারা। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে কয়েকশ যানবাহন আটকা পড়ে। নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনালের কাঁঠালতলা এলাকা থেকে ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার জিরো পয়েন্ট তীব্র যানজট দেখা দেয়। চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। অনেকে ব্যাগ-বস্তা মাথায় নিয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ কয়েক কিলোমিটার হেঁটে গন্তব্যে রওয়ানা দেন। পরে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক ছাড়লে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পটুয়াখালীর ইয়াসিন হাওলাদার বলেন, স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে বরিশালে এসে মহাবিপদে পড়েছি। বাসে ২ ঘণ্টা বসে থেকে বাধ্য হয়ে হাঁটা শুরু করেছি। আমার অসুস্থ স্ত্রী আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছে।