ঢাকা ০১:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

বান্ধবীর বিয়েতে পরিচয়, অতঃপর যা হলো

বান্ধবীর বিয়েতে পরিচয়। অতঃপর প্রেম। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে মাদারীপুর থেকে ৯ম শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে নেওয়া হয় রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে। শিক্ষার্থীকে দুইদিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক বখাটের বিরুদ্ধে। পরে মারধর করে মেয়েটিকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় অভিযুক্তরা। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। এই ঘটনায় মামলা নিতে গড়িমসি করছে পুলিশ। অভিযুক্ত আল আমিন সরদার রাজধানী ঢাকার কদমতলীর শ্যামপুর এলাকার জুয়েল সরদারের ছেলে। কাজের সুবাধে আল আমিন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া বসবাস করে।

স্বজনরা জানান, ৮ মাস আগে বান্ধবী বিয়েতে তার মামাতো দেবর আল আমিন সরদারের সঙ্গে পরিচয় হয় ৯ম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীর। পরে ওই যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে মেয়েটি। বৃহস্পতিবার বান্ধবীর ফুফু পরিবারকে না জানিয়েই ওই শিক্ষার্থীকে বাড়ি থেকে রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়ায় নিয়ে যান। পরে আল আমিন বিয়ের আশ্বাস দিয়ে একটি রুমে নিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে মেয়েটিকে বেদম মারধর করে আল আমিন ও তার পরিবারের লোকজন। একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে শনিবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় শিক্ষার্থীকে। বাড়ি এসে পরিবারের কাছে বিষয়টি জানালে শনিবার রাতে তাকে ভর্তি করা হয় জেলা সদর হাসপাতালে। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। এদিকে ধর্ষণের ঘটনা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে হওয়ায় এ ব্যাপারে মামলা নিতে গড়িমসি করছে পুলিশ। অপরদিকে ঘটনাস্থলের শুরু মাদারীপুরে হওয়ায় সেখানেই মামলা করতে হবে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ।

সরেজমিনে দেখা যায়, নির্যাতনের দৃশ্য মনে পড়লেই কান্নায় ভেঙে পড়ছে ওই শিক্ষার্থী। ভয় আর আতঙ্কে কাতরাচ্ছে হাসপাতালের বিছানায়। মিথ্যে বিয়ের আশ্বাসে এমন ঘটনা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না।

নির্যাতিতা মেয়েটি জানায়, বান্ধবীর ফুফু প্রথমে কাউকে কিছু না বলেই তাকে ঢাকায় নিয়ে যান। সেখানে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে বিয়ের নাটক করেন আল আমিন ও তার পরিবারের লোকজন। পরে তাকে নিয়ে আল আমিন একটি রুমে আটকে শারীরিক ও পাশবিক নির্যাতন চালান। একপর্যায়ে কয়েকজন মিলে মারধর করে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এই ঘটনার বিচার দাবি করেছে ওই শিক্ষার্থী।

মেয়েটির বাবা বলেন, মাদারীপুরের পুলিশ বলে ঢাকায় গিয়ে মামলা করতে। আমরা গরীব মানুষ, কিভাবে ঢাকায় গিয়ে মামলা করব। ঘটনার শুরু তো মাদারীপুর থেকে হয়েছে। এখানে মামলা নেবে না-এর বিচার কি পাব না?

এদিকে ধর্ষণের ঘটনা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে হওয়ায় এ ব্যাপারে মামলা নিতে গড়িমসি করছে মাদারীপুর সদর মডেল থানা পুলিশ। অপরদিকে ঘটনাস্থলের শুরু মাদারীপুরে হওয়ায় সেখানেই মামলা করতে হবে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ওসি এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, ধর্ষণের অভিযোগ তো দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে। মাদারীপুরে ধর্ষণের ঘটনা না হওয়ায় এখানে মামলা নেওয়ার সুযোগ নেই। প্রেমের সম্পর্কের পর এমন ঘটনা ঘটেছে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জেই মামলা করতে হবে।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জর থানার ওসি মামুনুর রশীদ বলেন, ঘটনার শুরু যেখানে, সেখানেই মামলা করতে হবে। মাদারীপুরে মামলা হলে আমরা আসামি ধরে সহযোগিতা করব। এখানে মামলা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

বান্ধবীর বিয়েতে পরিচয়, অতঃপর যা হলো

আপডেট সময় ০১:০৩:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪

বান্ধবীর বিয়েতে পরিচয়। অতঃপর প্রেম। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে মাদারীপুর থেকে ৯ম শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে নেওয়া হয় রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে। শিক্ষার্থীকে দুইদিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক বখাটের বিরুদ্ধে। পরে মারধর করে মেয়েটিকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় অভিযুক্তরা। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। এই ঘটনায় মামলা নিতে গড়িমসি করছে পুলিশ। অভিযুক্ত আল আমিন সরদার রাজধানী ঢাকার কদমতলীর শ্যামপুর এলাকার জুয়েল সরদারের ছেলে। কাজের সুবাধে আল আমিন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া বসবাস করে।

স্বজনরা জানান, ৮ মাস আগে বান্ধবী বিয়েতে তার মামাতো দেবর আল আমিন সরদারের সঙ্গে পরিচয় হয় ৯ম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীর। পরে ওই যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে মেয়েটি। বৃহস্পতিবার বান্ধবীর ফুফু পরিবারকে না জানিয়েই ওই শিক্ষার্থীকে বাড়ি থেকে রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়ায় নিয়ে যান। পরে আল আমিন বিয়ের আশ্বাস দিয়ে একটি রুমে নিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে মেয়েটিকে বেদম মারধর করে আল আমিন ও তার পরিবারের লোকজন। একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে শনিবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় শিক্ষার্থীকে। বাড়ি এসে পরিবারের কাছে বিষয়টি জানালে শনিবার রাতে তাকে ভর্তি করা হয় জেলা সদর হাসপাতালে। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। এদিকে ধর্ষণের ঘটনা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে হওয়ায় এ ব্যাপারে মামলা নিতে গড়িমসি করছে পুলিশ। অপরদিকে ঘটনাস্থলের শুরু মাদারীপুরে হওয়ায় সেখানেই মামলা করতে হবে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ।

সরেজমিনে দেখা যায়, নির্যাতনের দৃশ্য মনে পড়লেই কান্নায় ভেঙে পড়ছে ওই শিক্ষার্থী। ভয় আর আতঙ্কে কাতরাচ্ছে হাসপাতালের বিছানায়। মিথ্যে বিয়ের আশ্বাসে এমন ঘটনা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না।

নির্যাতিতা মেয়েটি জানায়, বান্ধবীর ফুফু প্রথমে কাউকে কিছু না বলেই তাকে ঢাকায় নিয়ে যান। সেখানে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে বিয়ের নাটক করেন আল আমিন ও তার পরিবারের লোকজন। পরে তাকে নিয়ে আল আমিন একটি রুমে আটকে শারীরিক ও পাশবিক নির্যাতন চালান। একপর্যায়ে কয়েকজন মিলে মারধর করে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এই ঘটনার বিচার দাবি করেছে ওই শিক্ষার্থী।

মেয়েটির বাবা বলেন, মাদারীপুরের পুলিশ বলে ঢাকায় গিয়ে মামলা করতে। আমরা গরীব মানুষ, কিভাবে ঢাকায় গিয়ে মামলা করব। ঘটনার শুরু তো মাদারীপুর থেকে হয়েছে। এখানে মামলা নেবে না-এর বিচার কি পাব না?

এদিকে ধর্ষণের ঘটনা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে হওয়ায় এ ব্যাপারে মামলা নিতে গড়িমসি করছে মাদারীপুর সদর মডেল থানা পুলিশ। অপরদিকে ঘটনাস্থলের শুরু মাদারীপুরে হওয়ায় সেখানেই মামলা করতে হবে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ওসি এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, ধর্ষণের অভিযোগ তো দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে। মাদারীপুরে ধর্ষণের ঘটনা না হওয়ায় এখানে মামলা নেওয়ার সুযোগ নেই। প্রেমের সম্পর্কের পর এমন ঘটনা ঘটেছে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জেই মামলা করতে হবে।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জর থানার ওসি মামুনুর রশীদ বলেন, ঘটনার শুরু যেখানে, সেখানেই মামলা করতে হবে। মাদারীপুরে মামলা হলে আমরা আসামি ধরে সহযোগিতা করব। এখানে মামলা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।