ঢাকা ১২:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেনজীরের রিসোর্টের আয়ের ৭ লাখ টাকা জমা সরকারি কোষাগারে

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের আলোচিত সাভানা ইকো রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্ক পরিচালনা করছে সরকারের নিয়োজিত রিসিভার কমিটি।

এ পর্যন্ত বিভিন্ন খাত থেকে আয় হওয়া প্রায় ১৩ লাখ টাকা জমা করা হয়েছে সরকারি কোষাগারে।

এদিকে বেনজীর পরিবারের আরও বেশকিছু ফ্ল্যাট, প্লট ও জমির রক্ষণাবেক্ষণে নতুন করে রিসিভার নিয়োগের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এবার এনবিআরের প্রথম সচিবের সম্পত্তি জব্দ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধের আদেশ

সংশ্লিষ্টরা জানান, সাভানা ইকো রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্কের আওতাধীন সব সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম তদারকির রিসিভার নিয়োগ করা হয়েছে। এই কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মতে ১৫ জুন থেকে পার্কের কার্যক্রম সীমিত আকারে চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক পার্কে এন্ট্রি ফি ১০০ টাকা, প্রতিটি রাইড মূল্য ১০০ টাকা, সুইমিংপুল ব্যবহারের (১ ঘণ্টা) জন্য ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পার্কটি ১৪ জুন পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়। এরপর ১৫ জুন থেকে স্বাভাবিকভাবে চলছে পার্কটি। আর ১৪ থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত ১৩ দিনে এ খাতে আয় হয়েছে ৬ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকা। ব্যয় করা হয়েছে ৮৬ হাজার ৫১৭ টাকা। নিট আয় হয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৯৪৩ টাকা।

আরও জানা গেছে, পার্কের টিকিট বিক্রির আয় ছাড়াও কাশবন বিক্রি করে ২০ হাজার, আম বিক্রির ৪৮ হাজার ২১৬ ও ধান বিক্রি করে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭২০ টাকা আয় করা হয়েছে। এই দুই খাত থেকে নিট আয় হওয়া ৭ লাখ ৫২ হাজার ৮৭৯ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে।

জানতে চাইলে রিসিভার কমিটির অন্যতম সদস্য দুদকের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মসিউর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘দুদকের জন্য এটা নতুন অভিজ্ঞতা। তবে ক্রোক করা সম্পদের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবহারের মাধ্যমে রাজস্ব আয় করে তা সঠিকভাবে সরকারি কোষাগারে জমার বিষয়টি নজির হয়ে থাকবে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত রিসিভার কমিটি এই দায়িত্ব সততার সঙ্গে পালন করে যাবে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার নতুন করে বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী জীশান মির্জার নামে থাকা ঢাকায় ৮টি ফ্ল্যাট, উত্তরা আবাসিক এলাকায় তিন কাঠার একটি প্লট, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ৬ কাঠা করে ৪টি প্লট ও বান্দরবানে ২৫ একর জায়গার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রিসিভার নিয়োগের আদেশ দেন আদালত। দুদকের অনুসন্ধানকারী টিমের প্রধান উপপরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম এসব সম্পত্তিতে রিসিভার নিয়োগের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

দুদকের প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, রিসিভার নিয়োগ হওয়া সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে বেনজীরের স্ত্রী জীশান মির্জার নামে আদাবর পিসি কালচার হাউজিংয়ে থাকা ৬টি ফ্ল্যাট, বাড্ডায় ১৪ তলা বিশিষ্ট রূপায়ন মিলেনিয়াম স্কয়ার বিল্ডিংয়ে কার পার্কিংসহ দুটি অফিস স্পেস, উত্তরা আবাসিক এলাকায় তিন কাঠার একটি প্লট, রূপগঞ্জের সাভানা ইকো রিসোর্ট ও বান্দরবান সদরের জায়গা। এর আগে ১২ জুন এসব সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত।

২৩ ও ২৬ মে দুই দফায় বেনজীর, তার স্ত্রী ও তিন কন্যার নামে থাকা প্রায় ৬১২ বিঘা সম্পত্তি ও গুলশানের চারটি ফ্ল্যাট ক্রোক ও বেশকিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার আদেশ দেন আদালত। ৬ জুন প্রথম দফায় এসব সম্পত্তির অনেকগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রিসিভার নিয়োগের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বেনজীরের রিসোর্টের আয়ের ৭ লাখ টাকা জমা সরকারি কোষাগারে

আপডেট সময় ১০:১৮:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০২৪

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের আলোচিত সাভানা ইকো রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্ক পরিচালনা করছে সরকারের নিয়োজিত রিসিভার কমিটি।

এ পর্যন্ত বিভিন্ন খাত থেকে আয় হওয়া প্রায় ১৩ লাখ টাকা জমা করা হয়েছে সরকারি কোষাগারে।

এদিকে বেনজীর পরিবারের আরও বেশকিছু ফ্ল্যাট, প্লট ও জমির রক্ষণাবেক্ষণে নতুন করে রিসিভার নিয়োগের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এবার এনবিআরের প্রথম সচিবের সম্পত্তি জব্দ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধের আদেশ

সংশ্লিষ্টরা জানান, সাভানা ইকো রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্কের আওতাধীন সব সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম তদারকির রিসিভার নিয়োগ করা হয়েছে। এই কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মতে ১৫ জুন থেকে পার্কের কার্যক্রম সীমিত আকারে চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক পার্কে এন্ট্রি ফি ১০০ টাকা, প্রতিটি রাইড মূল্য ১০০ টাকা, সুইমিংপুল ব্যবহারের (১ ঘণ্টা) জন্য ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পার্কটি ১৪ জুন পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়। এরপর ১৫ জুন থেকে স্বাভাবিকভাবে চলছে পার্কটি। আর ১৪ থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত ১৩ দিনে এ খাতে আয় হয়েছে ৬ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকা। ব্যয় করা হয়েছে ৮৬ হাজার ৫১৭ টাকা। নিট আয় হয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৯৪৩ টাকা।

আরও জানা গেছে, পার্কের টিকিট বিক্রির আয় ছাড়াও কাশবন বিক্রি করে ২০ হাজার, আম বিক্রির ৪৮ হাজার ২১৬ ও ধান বিক্রি করে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭২০ টাকা আয় করা হয়েছে। এই দুই খাত থেকে নিট আয় হওয়া ৭ লাখ ৫২ হাজার ৮৭৯ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে।

জানতে চাইলে রিসিভার কমিটির অন্যতম সদস্য দুদকের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মসিউর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘দুদকের জন্য এটা নতুন অভিজ্ঞতা। তবে ক্রোক করা সম্পদের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবহারের মাধ্যমে রাজস্ব আয় করে তা সঠিকভাবে সরকারি কোষাগারে জমার বিষয়টি নজির হয়ে থাকবে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত রিসিভার কমিটি এই দায়িত্ব সততার সঙ্গে পালন করে যাবে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার নতুন করে বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী জীশান মির্জার নামে থাকা ঢাকায় ৮টি ফ্ল্যাট, উত্তরা আবাসিক এলাকায় তিন কাঠার একটি প্লট, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ৬ কাঠা করে ৪টি প্লট ও বান্দরবানে ২৫ একর জায়গার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রিসিভার নিয়োগের আদেশ দেন আদালত। দুদকের অনুসন্ধানকারী টিমের প্রধান উপপরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম এসব সম্পত্তিতে রিসিভার নিয়োগের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

দুদকের প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, রিসিভার নিয়োগ হওয়া সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে বেনজীরের স্ত্রী জীশান মির্জার নামে আদাবর পিসি কালচার হাউজিংয়ে থাকা ৬টি ফ্ল্যাট, বাড্ডায় ১৪ তলা বিশিষ্ট রূপায়ন মিলেনিয়াম স্কয়ার বিল্ডিংয়ে কার পার্কিংসহ দুটি অফিস স্পেস, উত্তরা আবাসিক এলাকায় তিন কাঠার একটি প্লট, রূপগঞ্জের সাভানা ইকো রিসোর্ট ও বান্দরবান সদরের জায়গা। এর আগে ১২ জুন এসব সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত।

২৩ ও ২৬ মে দুই দফায় বেনজীর, তার স্ত্রী ও তিন কন্যার নামে থাকা প্রায় ৬১২ বিঘা সম্পত্তি ও গুলশানের চারটি ফ্ল্যাট ক্রোক ও বেশকিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার আদেশ দেন আদালত। ৬ জুন প্রথম দফায় এসব সম্পত্তির অনেকগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রিসিভার নিয়োগের আদেশ দিয়েছেন আদালত।