ঢাকা ০৯:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

খেরসনে যুদ্ধাপরাধ করেছে রাশিয়া, অভিযোগ জেলেনস্কির

টানা প্রায় নয় মাস ধরে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনা করছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রুশ এই আগ্রাসনের কারণে ইউরোপে ফিরেছে যুদ্ধ, সঙ্গে ফিরেছে সামরিক-বেসামরিক প্রাণহানিও। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া তথা প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছিল আগেই।

তবে সম্প্রতি দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন ফিরে পাওয়ার পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে আবারও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই অভিযোগ তুলেছেন। সোমবার (১৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বিবিসি জেলেনস্কির এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। তবে রুশ সৈন্যদের ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক নাগরিকদের হামলার টার্গেট করার বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে মস্কো।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে আগ্রাসন শুরুর পর মার্চের প্রথম সপ্তাহে ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান শহর এবং বন্দরনগরী খেরসন দখল করে নেয় রাশিয়া। এছাড়া প্রথম বড় কোনো ইউক্রেনীয় শহর হিসেবে খেরসন দখল করেছিল রুশ সেনারা। এর প্রায় দুই মাসের মাথায় খেরসনের পুরো অঞ্চলটি দখলে নেয় মস্কোর বাহিনী।

তবে গত শুক্রবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ইউক্রেনের দক্ষিণের খেরসন অঞ্চলের দিনিপ্রো নদীর পশ্চিম তীর থেকে রাশিয়ার সব সৈন্য প্রত্যাহার পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে।

মন্ত্রণালয় বলেছে, রাশিয়ার মোতায়েন করা সব সৈন্য ও যুদ্ধের সরঞ্জাম দিনিপ্রোর বাম অথবা পূর্ব দিকে স্থানান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার মস্কোর স্থানীয় সময় ভোর ৫টার মধ্যে খেরসন থেকে সৈন্যদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়।

এএফপি বলছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে রুশ সেনাদের দখল করা একমাত্র আঞ্চলিক রাজধানী ছিল খেরসন। শুক্রবার রুশ সেনারা সেটি পরিত্যাগ করার পর শহরের বাসিন্দারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এবং শহরের কেন্দ্রে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের স্বাগত জানান।

এদিকে গুরুত্বপূর্ণ এই শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ সেখানে কারফিউ জারি করেছে এবং খেরসনের ভেতরে ও বাইরে যাতায়াত সীমিত করেছে। রোববার রাতে দেওয়া ভিডিও ভাষণে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়ান সেনাবাহিনী আমাদের দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো খেরসন অঞ্চলেও একই নৃশংসতা রেখে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক খুনিকে খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনব। কোনো সন্দেহ নেই।’ অবশ্য চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনের বুচা, ইজিয়ুম এবং মারিউপোলসহ বিভিন্ন এলাকায় গণকবর পাওয়া গেছে। ইউক্রেন এই নৃশংসতার পেছনে রুশ সেনাদের দায়ী করেছে।

জাতিসংঘের একটি কমিশন গত মাসে জানায়, ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে এবং আক্রমণের শুরুতে ইউক্রেনে যে ‘ব্যাপক মাত্রার’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে তার জন্য রাশিয়ার বাহিনী দায়ী।

অবশ্য কিছু রাশিয়ান সৈন্য ছদ্মবেশে এখনও খেরসনে থেকে থাকতে পারে এমন আশঙ্কাও রয়েছে। আর তাই প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, এই অঞ্চলে রেখে যাওয়া রাশিয়ান সৈন্য এবং ভাড়াটে সৈন্যদের আটক অভিযান এবং নাশকতাকারীদের দমনের কাজ চলছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

খেরসনে যুদ্ধাপরাধ করেছে রাশিয়া, অভিযোগ জেলেনস্কির

আপডেট সময় ১০:০৩:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ নভেম্বর ২০২২

টানা প্রায় নয় মাস ধরে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনা করছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রুশ এই আগ্রাসনের কারণে ইউরোপে ফিরেছে যুদ্ধ, সঙ্গে ফিরেছে সামরিক-বেসামরিক প্রাণহানিও। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া তথা প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছিল আগেই।

তবে সম্প্রতি দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন ফিরে পাওয়ার পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে আবারও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই অভিযোগ তুলেছেন। সোমবার (১৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বিবিসি জেলেনস্কির এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। তবে রুশ সৈন্যদের ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক নাগরিকদের হামলার টার্গেট করার বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে মস্কো।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে আগ্রাসন শুরুর পর মার্চের প্রথম সপ্তাহে ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান শহর এবং বন্দরনগরী খেরসন দখল করে নেয় রাশিয়া। এছাড়া প্রথম বড় কোনো ইউক্রেনীয় শহর হিসেবে খেরসন দখল করেছিল রুশ সেনারা। এর প্রায় দুই মাসের মাথায় খেরসনের পুরো অঞ্চলটি দখলে নেয় মস্কোর বাহিনী।

তবে গত শুক্রবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ইউক্রেনের দক্ষিণের খেরসন অঞ্চলের দিনিপ্রো নদীর পশ্চিম তীর থেকে রাশিয়ার সব সৈন্য প্রত্যাহার পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে।

মন্ত্রণালয় বলেছে, রাশিয়ার মোতায়েন করা সব সৈন্য ও যুদ্ধের সরঞ্জাম দিনিপ্রোর বাম অথবা পূর্ব দিকে স্থানান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার মস্কোর স্থানীয় সময় ভোর ৫টার মধ্যে খেরসন থেকে সৈন্যদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়।

এএফপি বলছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে রুশ সেনাদের দখল করা একমাত্র আঞ্চলিক রাজধানী ছিল খেরসন। শুক্রবার রুশ সেনারা সেটি পরিত্যাগ করার পর শহরের বাসিন্দারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এবং শহরের কেন্দ্রে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের স্বাগত জানান।

এদিকে গুরুত্বপূর্ণ এই শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ সেখানে কারফিউ জারি করেছে এবং খেরসনের ভেতরে ও বাইরে যাতায়াত সীমিত করেছে। রোববার রাতে দেওয়া ভিডিও ভাষণে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়ান সেনাবাহিনী আমাদের দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো খেরসন অঞ্চলেও একই নৃশংসতা রেখে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক খুনিকে খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনব। কোনো সন্দেহ নেই।’ অবশ্য চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনের বুচা, ইজিয়ুম এবং মারিউপোলসহ বিভিন্ন এলাকায় গণকবর পাওয়া গেছে। ইউক্রেন এই নৃশংসতার পেছনে রুশ সেনাদের দায়ী করেছে।

জাতিসংঘের একটি কমিশন গত মাসে জানায়, ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে এবং আক্রমণের শুরুতে ইউক্রেনে যে ‘ব্যাপক মাত্রার’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে তার জন্য রাশিয়ার বাহিনী দায়ী।

অবশ্য কিছু রাশিয়ান সৈন্য ছদ্মবেশে এখনও খেরসনে থেকে থাকতে পারে এমন আশঙ্কাও রয়েছে। আর তাই প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, এই অঞ্চলে রেখে যাওয়া রাশিয়ান সৈন্য এবং ভাড়াটে সৈন্যদের আটক অভিযান এবং নাশকতাকারীদের দমনের কাজ চলছে।