অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ‘কোনো নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক নেই’ মর্মে একটি ভিডিও প্রকাশ করে বিশ্বব্যাপী তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে ইসরাইল। সম্প্রতি দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি এক্স অ্যাকাউন্টে ওই ভিডিও প্রকাশ করা হয়।
ওই ভিডিওটিতে দাবি করা হয়েছে, ইসরাইলের অভ্যন্তরে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় গাজার বহু বেসামরিক নাগরিক অংশ নিয়েছিল।
এতে আরও বলা হয়, গাজার বেসামরিক নাগরিকরা তাদের ঘরবাড়িতে ইসরাইলি নাগরিকদের আটকে রেখেছে। সেইসঙ্গে এর তীব্র নিন্দা জানানোর জন্য বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে ভিডিওতে।
৫১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দৃশ্যত ৭ অক্টোবর হামাস পরিচালিত আল-আকসা তুফান অভিযানের কিছু দৃশ্যের পাশাপাশি হামাসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া মায়া শেমের সাক্ষাৎকারের একটি অংশ জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
গত নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে মুক্তি পাওয়ার পর ডিসেম্বরে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে ফরাসি-ইসরাইলি নারী মায়া দাবি করেন, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ‘কোনো নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক নেই।’
এক্সে ভিডিওটি প্রকাশিত হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী এর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলছেন, গাজা উপত্যকায় অন্তত ৩৭ হাজার ৩০০ বেসামরিক নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরার জন্য তেল আবিব এ ভিডিও প্রকাশ করেছে।
বার্লিন-ভিত্তিক যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়েআমো ফাউন্ডেশনের গবেষক মার্ক কার্সটেন বলেছেন, ‘এটি বিরক্তিকর, নৃশংস অপরাধীরা যে ভাষায় কথা বলে, এখানে সেটাই বলা হয়েছে।’
এর আগে, গত ৭ অক্টোবর আল-আকসা তুফান অভিযান চালানোর এক সপ্তাহ পর, ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগও দাবি করেছিলেন যে, গাজায় কোনো নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক নেই।
এদিকে মায়া শেমের ওই বক্তব্য আপত্তিকর প্রমাণিত হওয়ার পর, ইসরাইলি সরকার বা এক্স নিজেই ভিডিওটি সরিয়ে ফেলেছে। যদিও এখনও একটি আর্কাইভ সাইটে ভিডিওটি দেখা যাচ্ছে।
অন্যদিকে গাজায় গত ৭ অক্টোবর থেকে চলমান যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৩০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ৮৫ হাজার ১৯৭ জন। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। সূত্র- আল জাজিরা।