ঢাকা ০৪:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাকিবের বিরুদ্ধে আইন ভঙ্গের সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কম্পানি আইপিডিসি ফাইন্যান্সের শেয়ার কারসাজিতেও উঠে এসেছে বাংলাদেশ টি-২০ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের নাম। আগে আরো পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে কারসাজির তদন্ত প্রতিবেদনে নাম এসেছিল বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের।

অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর বেনিফিশিয়ারি অ্যাকাউন্টের (বিও) মাধ্যমে ১০৪ কোটি টাকা লেনদেন করেছেন সাকিব। কিন্তু সাকিবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

তবে অন্য অভিযুক্তদের দেড় কোটি টাকা জরিমানা করে চিঠি দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সাকিব বিএসইসির শুভেচ্ছা দূত। দেশ সেরা এই ক্রিকেটারের নাম আগেও কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনে এসেছিল। বিএসইসির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সমবায় অধিদপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবুল খায়ের হিরো এবং তাঁর সহযোগীরা সিরিয়াল ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে কারসাজি করে আইপিডিসি ফাইন্যান্সের শেয়ার চলতি বছরের মার্চ থেকে এপ্রিলের মধ্যে ৬১ শতাংশ বাড়িয়েছেন। সে সময় সাকিব আল হাসান ইবিএল সিকিউরিটিজে তাঁর বিও অ্যাকাউন্ট থেকে আইপিডিসির ১১ লাখ শেয়ার কেনেন এবং ১০.৬৯ লাখ শেয়ার বিক্রি করেন।

এই কারসাজির ঘটনায় বিএসইসি সাকিবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কিন্তু আবুল খায়ের হিরো এবং তাঁর সহযোগীদের দেড় কোটি টাকা জরিমানা করে গত ৩০ অক্টোবর চিঠি দিয়েছে বিএসইসি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যখন কোনো সিকিউরিটিজ নিয়ে তদন্ত করা হয়, তখন বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে তদন্তকারী দল। সেখানে বিভিন্ন বিনিয়োগকারীর তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এই তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেকের নাম আসে। যাদের নাম থাকে সবাই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকেন না। তেমনি সাকিবের বিষয়টি নিয়ে শুনানি হয়েছে। ’

তিনি বলেন, শুনানিতে তাঁর প্রতিনিধির লিখিত বক্তব্য শোনার ও কাগজপত্র দেখার পর তাঁর বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যে কারণে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

বিএসইসি সূত্র জানায়, আইপিডিসির শেয়ার কারসাজি করে হিরো এবং তাঁর সহযোগীরা ১৪ কোটি টাকা মুনাফা করেছেন। ওই সময় আইপিডিসি ফাইন্যান্সের মোট শেয়ার লেনদেনের ৪৫ শতাংশই করেছেন হিরো এবং তাঁর সহযোগীরা। সেখানে সাকিবের অংশ ১.৮০ শতাংশ। সাকিব আল হাসান ছাড়াও আইপিডিসির শেয়ার কারসাজির তদন্ত প্রতিবেদনে বড় বিক্রেতা হিসেবে ইবিএল সিকিউরিটিজ এবং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েদুর রহমানের নামও এসেছে। ওই সময় ইবিএল সিকিউরিটিজ আইপিডিসির ৮০ লাখ শেয়ার এবং সায়েদুর রহমান ১৫ লাখ শেয়ার বিক্রি করেছিলেন।

এ বিষয়ে সাকিব আল হাসানকে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এর আগে যে প্রতিষ্ঠানগুলোর কারসাজির সঙ্গে তাঁর নাম যুক্ত হয়েছিল সেগুলো হলো—ফরচুন সুজ, এশিয়া ইনস্যুরেন্স লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংক, আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড ও বিডিকম অনলাইন লিমিটেড।

সিরিয়াল ট্রেডিংয়ে সাকিব

আইপিডিসিসহ ছয়টি কম্পানির শেয়ার কারসাজিতে আবুল খায়ের হিরো এবং তাঁর সহযোগী এবং সাকিব আল হাসান সিরিয়াল ট্রেডিং করে দর বাড়িয়েছিলেন। সাকিব আল হাসান ইবিএল সিকিউরিটিজ, একটি ইনভেস্টমেন্ট ব্যংক ও আইআইডিএফসি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এসবিএল ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টে থাকা তাঁর বিও হিসাবের মাধ্যমে এই সিরিয়াল ট্রেডিংয়ে যুক্ত ছিলেন বলে বিএসইসির তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়।

অস্বাভাবিক কেনাবেচাকে ‘সিরিজ লেনদেন’ বলা হয়, সিকিউরিটিজ আইনে যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ জন্য আবুল খায়ের হিরো ও তাঁর স্ত্রী, বাবা এবং তাঁর সহযোগী ডিআইটি কো-অপারেটিভ লিমিটেডকে জরিমানা করে বিএসইসি।

কারসাজিতে সাকিবের এক কোটি শেয়ার

ওয়ান ব্যাংক, ফরচুন সুজ ও এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে কারসাজির ঘটনায় সাকিবের নাম পেয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তদন্ত কমিটি। শুধু সাকিবের নামেই এক কোটি চার লাখ শেয়ার লেনদেনের হিসাব মিলেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে।

তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, ওয়ান ব্যাংকের শেয়ারের শীর্ষ ১৫ ক্রেতার তালিকার ৮ নম্বরে রয়েছে সাকিবের নাম। একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৭৫ লাখের বেশি শেয়ার কিনে ১০ লাখ ২০ হাজার শেয়ার বিক্রি করেন তিনি। ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত কারসাজির মাধ্যমে ওয়ান ব্যাংকের শেয়ারের দাম বাড়াতে ভূমিকা রাখে সাকিব ও তাঁর মালিকানাধীন মোনার্ক হোল্ডিংস।

গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মোনার্ক হোল্ডিংস নামের এক ব্রোকারেজ হাউসের অনুমোদন নেন তিনি। মোনার্ক হোল্ডিংসের চেয়ারম্যান সাকিব আল হাসান। ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে আছেন শেয়ার কারসাজির জন্য শাস্তি পাওয়া আবুল খায়ের হিরোর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান। পরিচালক হিসেবে জাভেদ এ মতিন ও আবুল কালাম মাতবরের নাম রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে আবুল খায়ের হিরোর ফোনে কয়েক দফায় যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে কারচুপির বিষয়ে বিএসইসির নোটিশের লিখিত জবাবে আবুল খায়ের বলেছেন, ‘আমরা কারসাজির জন্য শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করিনি। কিছু অবমূল্যায়িত শেয়ারে নতুন বিনিয়োগ করা হয়েছে এবং নতুন বিনিয়োগের কারণে শেয়ারের দাম ও লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। ’

সাকিব দুদকের শুভেচ্ছা দূত না থাকলেও বিএসইতে বহাল

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) শুভেচ্ছা দূত ছিলেন সাকিব আল হাসান। দুদকের কমিশনার (অনুসন্ধান) মোজাম্মেল হক খান সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এখনো দুদকের শুভেচ্ছা দূত হলেও সেটি আর রাখা হবে না। চুক্তিটি নবায়নও করা হবে না।

সাকিবকে শুভেচ্ছা দূত না রাখার কারণ হিসেবে মোজাম্মেল হক খান বলেন, সাকিব এখন মাঠের বাইরে নানান কর্মকাণ্ডে বিতর্কিত। কোনো বিতর্কিত মানুষের সঙ্গে দুদক কখনো নিজেকে জড়াতে চায় না। তাই সাকিবকে শুভেচ্ছা দূত হিসেবে দুদক আর ব্যবহার করবে না।

অবশ্য বারবার অভিযোগ এবং তদন্তে নাম এলেও সাকিব আল হাসানকে এখনো শুভেচ্ছা দূত হিসেবে রেখেছে বিএসইসি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাকিবের বিরুদ্ধে আইন ভঙ্গের সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি

আপডেট সময় ১০:২২:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর ২০২২

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কম্পানি আইপিডিসি ফাইন্যান্সের শেয়ার কারসাজিতেও উঠে এসেছে বাংলাদেশ টি-২০ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের নাম। আগে আরো পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে কারসাজির তদন্ত প্রতিবেদনে নাম এসেছিল বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের।

অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর বেনিফিশিয়ারি অ্যাকাউন্টের (বিও) মাধ্যমে ১০৪ কোটি টাকা লেনদেন করেছেন সাকিব। কিন্তু সাকিবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

তবে অন্য অভিযুক্তদের দেড় কোটি টাকা জরিমানা করে চিঠি দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সাকিব বিএসইসির শুভেচ্ছা দূত। দেশ সেরা এই ক্রিকেটারের নাম আগেও কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনে এসেছিল। বিএসইসির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সমবায় অধিদপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবুল খায়ের হিরো এবং তাঁর সহযোগীরা সিরিয়াল ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে কারসাজি করে আইপিডিসি ফাইন্যান্সের শেয়ার চলতি বছরের মার্চ থেকে এপ্রিলের মধ্যে ৬১ শতাংশ বাড়িয়েছেন। সে সময় সাকিব আল হাসান ইবিএল সিকিউরিটিজে তাঁর বিও অ্যাকাউন্ট থেকে আইপিডিসির ১১ লাখ শেয়ার কেনেন এবং ১০.৬৯ লাখ শেয়ার বিক্রি করেন।

এই কারসাজির ঘটনায় বিএসইসি সাকিবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কিন্তু আবুল খায়ের হিরো এবং তাঁর সহযোগীদের দেড় কোটি টাকা জরিমানা করে গত ৩০ অক্টোবর চিঠি দিয়েছে বিএসইসি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যখন কোনো সিকিউরিটিজ নিয়ে তদন্ত করা হয়, তখন বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে তদন্তকারী দল। সেখানে বিভিন্ন বিনিয়োগকারীর তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এই তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেকের নাম আসে। যাদের নাম থাকে সবাই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকেন না। তেমনি সাকিবের বিষয়টি নিয়ে শুনানি হয়েছে। ’

তিনি বলেন, শুনানিতে তাঁর প্রতিনিধির লিখিত বক্তব্য শোনার ও কাগজপত্র দেখার পর তাঁর বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যে কারণে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

বিএসইসি সূত্র জানায়, আইপিডিসির শেয়ার কারসাজি করে হিরো এবং তাঁর সহযোগীরা ১৪ কোটি টাকা মুনাফা করেছেন। ওই সময় আইপিডিসি ফাইন্যান্সের মোট শেয়ার লেনদেনের ৪৫ শতাংশই করেছেন হিরো এবং তাঁর সহযোগীরা। সেখানে সাকিবের অংশ ১.৮০ শতাংশ। সাকিব আল হাসান ছাড়াও আইপিডিসির শেয়ার কারসাজির তদন্ত প্রতিবেদনে বড় বিক্রেতা হিসেবে ইবিএল সিকিউরিটিজ এবং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েদুর রহমানের নামও এসেছে। ওই সময় ইবিএল সিকিউরিটিজ আইপিডিসির ৮০ লাখ শেয়ার এবং সায়েদুর রহমান ১৫ লাখ শেয়ার বিক্রি করেছিলেন।

এ বিষয়ে সাকিব আল হাসানকে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এর আগে যে প্রতিষ্ঠানগুলোর কারসাজির সঙ্গে তাঁর নাম যুক্ত হয়েছিল সেগুলো হলো—ফরচুন সুজ, এশিয়া ইনস্যুরেন্স লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংক, আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড ও বিডিকম অনলাইন লিমিটেড।

সিরিয়াল ট্রেডিংয়ে সাকিব

আইপিডিসিসহ ছয়টি কম্পানির শেয়ার কারসাজিতে আবুল খায়ের হিরো এবং তাঁর সহযোগী এবং সাকিব আল হাসান সিরিয়াল ট্রেডিং করে দর বাড়িয়েছিলেন। সাকিব আল হাসান ইবিএল সিকিউরিটিজ, একটি ইনভেস্টমেন্ট ব্যংক ও আইআইডিএফসি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এসবিএল ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টে থাকা তাঁর বিও হিসাবের মাধ্যমে এই সিরিয়াল ট্রেডিংয়ে যুক্ত ছিলেন বলে বিএসইসির তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়।

অস্বাভাবিক কেনাবেচাকে ‘সিরিজ লেনদেন’ বলা হয়, সিকিউরিটিজ আইনে যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ জন্য আবুল খায়ের হিরো ও তাঁর স্ত্রী, বাবা এবং তাঁর সহযোগী ডিআইটি কো-অপারেটিভ লিমিটেডকে জরিমানা করে বিএসইসি।

কারসাজিতে সাকিবের এক কোটি শেয়ার

ওয়ান ব্যাংক, ফরচুন সুজ ও এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে কারসাজির ঘটনায় সাকিবের নাম পেয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তদন্ত কমিটি। শুধু সাকিবের নামেই এক কোটি চার লাখ শেয়ার লেনদেনের হিসাব মিলেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে।

তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, ওয়ান ব্যাংকের শেয়ারের শীর্ষ ১৫ ক্রেতার তালিকার ৮ নম্বরে রয়েছে সাকিবের নাম। একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৭৫ লাখের বেশি শেয়ার কিনে ১০ লাখ ২০ হাজার শেয়ার বিক্রি করেন তিনি। ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত কারসাজির মাধ্যমে ওয়ান ব্যাংকের শেয়ারের দাম বাড়াতে ভূমিকা রাখে সাকিব ও তাঁর মালিকানাধীন মোনার্ক হোল্ডিংস।

গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মোনার্ক হোল্ডিংস নামের এক ব্রোকারেজ হাউসের অনুমোদন নেন তিনি। মোনার্ক হোল্ডিংসের চেয়ারম্যান সাকিব আল হাসান। ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে আছেন শেয়ার কারসাজির জন্য শাস্তি পাওয়া আবুল খায়ের হিরোর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান। পরিচালক হিসেবে জাভেদ এ মতিন ও আবুল কালাম মাতবরের নাম রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে আবুল খায়ের হিরোর ফোনে কয়েক দফায় যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে কারচুপির বিষয়ে বিএসইসির নোটিশের লিখিত জবাবে আবুল খায়ের বলেছেন, ‘আমরা কারসাজির জন্য শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করিনি। কিছু অবমূল্যায়িত শেয়ারে নতুন বিনিয়োগ করা হয়েছে এবং নতুন বিনিয়োগের কারণে শেয়ারের দাম ও লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। ’

সাকিব দুদকের শুভেচ্ছা দূত না থাকলেও বিএসইতে বহাল

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) শুভেচ্ছা দূত ছিলেন সাকিব আল হাসান। দুদকের কমিশনার (অনুসন্ধান) মোজাম্মেল হক খান সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এখনো দুদকের শুভেচ্ছা দূত হলেও সেটি আর রাখা হবে না। চুক্তিটি নবায়নও করা হবে না।

সাকিবকে শুভেচ্ছা দূত না রাখার কারণ হিসেবে মোজাম্মেল হক খান বলেন, সাকিব এখন মাঠের বাইরে নানান কর্মকাণ্ডে বিতর্কিত। কোনো বিতর্কিত মানুষের সঙ্গে দুদক কখনো নিজেকে জড়াতে চায় না। তাই সাকিবকে শুভেচ্ছা দূত হিসেবে দুদক আর ব্যবহার করবে না।

অবশ্য বারবার অভিযোগ এবং তদন্তে নাম এলেও সাকিব আল হাসানকে এখনো শুভেচ্ছা দূত হিসেবে রেখেছে বিএসইসি।