ঢাকা ১২:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গাজায় ৯০ শতাংশ যুদ্ধবিরতি আলোচনা সম্পন্ন: ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের সংঘর্ষ, হতাহত ১৫ ধামরাইয়ে বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষ, স্বামী-স্ত্রী নিহত নিষিদ্ধ এলাকায় বাজছে গাড়ির হর্ন, নেই দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল ঘিরে এখনও চাঁদাবাজির তান্ডব চালাচ্ছে শেখ হাসিনার আস্থাভাজন গোলাম মোস্তফা  মিঠাপুকুরে এমপিএইসভিওয়ের ১১তম বর্ষে পদার্পন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মঠবাড়িয়া আসনে লড়তে চান ক্যানাডা প্রবাসী ব্যারিস্টার আলমগীর বৈষম্য নিরসনের দাবিতে ৫ দফা কর্মসূচি ঘোষণা মঠবাড়িয়ার দাউদখালী ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত ফসলের সাথে শত্রুতা, ১১ বিঘা আলু গম সরিষা হালচাষ দিয়ে নষ্ট করলো প্রতিপক্ষ

যেসব আলামতে চেনা যাবে লাইলাতুল কদর

লাইলাতুল কদর একটি মহিমান্বিত রাত। ইমানদার বান্দাদের কাছে এই রাতের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা, এই রাতে নাজিল হয়েছে মহাপবিত্র আল-কুরআন।

এ রাতেই মানুষের ভাগ্য নির্ধারিত হয়। এ রাতের যে কোনো আমল হাজার মাসের আমলের চেয়ে উত্তম। ফেরেশতারা আসমান থেকে জমিনে অবতীর্ণ হন এবং সূর্যাস্ত থেকে নিয়ে সুবহে সাদিক পর্যন্ত মানুষের কাছে সালাম পৌঁছাতে থাকেন।

সে জন্যই নবী (স) ফজিলতপূর্ণ এই রাত তালাশের উদ্দেশ্যে রমজানের শেষ দশক ইতেকাফ করেতেন এবং উম্মতদেরও এই রাত তালাশে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। রমজানের শেষ দশকের যে কোনো বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নবী করিম (স) বলেন, আমাকে লাইলাতুল কদর দেখানো হয়েছিল, অতঃপর আমাকে তা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রগুলোতে লাইলাতুল কদর তালাশ করো। (বুখারি, হাদিস নং ৭০৯)

তবে এ রাত চেনার বিশেষ কিছু আলামত হাদিস ও বুজুর্গদের অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া যায়—

১. লাইলাতুল কদর শেষ সাত দিন হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। (বুখারি ২/৭১১)

২. বিশেষ করে ২৭ তারিখ দিবাগত রাতে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। (তিরমিজি ৩৩৫১)

৩. সে রাতে গভীর অন্ধকার থাকবে না। (মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৩/১৭৯)

৪. উজ্জ্বল একটি রাত হবে। না গরম, না ঠাণ্ডা। সে রাতে কোনো উল্কাপিণ্ড দেখা যাবে না। (মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৩/১৭৯)

৫. মৃদুমন্দ বাতাস প্রবাহিত হবে। সে রাত হবে নাতিশীতোষ্ণ। (মুসনাদে আহমাদ ২২৭৬৫)

৬. সকালে হালকা আলোকরশ্মিসহ সূর্যোদয় হবে, যা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মতো। (ইবনে খুজাইমা ২১৯২)

৭. মানুষ সে রাতে ইবাদত-বন্দেগিতে তৃপ্তি পাবে।

৮. এ রাতে কোনো ইমানদার ব্যক্তিকে আল্লাহ রাত সম্পর্কে জানাতে পারেন।

৯. এ রাতে আল্লাহর রহমতের বৃষ্টি হতে পারে।

লাইলাতুল কদরের বিশেষ আমল—

১. তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করা

হাদিস শরিফে এ রাতে আল্লাহতায়ালার কাছে বিশেষভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করার কথা বলা হয়েছে। আম্মাজান আয়েশা (র) রাসুলুল্লাহকে (স) জিজ্ঞেস করেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি যদি জানতে পারি লাইলাতুল কদর কোনটি, তা হলে আমি সে রাতে কী বলব?

তিনি বলেন, ‘তুমি বলো—আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন কারিম, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি; অর্থাৎ, ‘হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল, দয়ালু, আপনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; সুতরাং আমাকে ক্ষমা করুন।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩৫১৩)

২. বেশি বেশি নফল ইবাদত করা। যেমন কুরআন তিলাওয়াত করা, দান সদকা করা, দরুদ শরিফ পাঠ করা, দোয়া করা, ইস্তেগফার পড়া, সালাতুল হাজাত, সালাতুত তাসবিহ ইত্যাদি নফল নামাজ আদায় করা।

নবী করিম (স) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় কদরের রাতে ইবাদতের জন্য রাত জাগবে, তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৫)

লাইলাতুল কদর মহান রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে মুমিন বান্দাদের জন্য অনেক বড় একটি উপহার। এই উপহার কোনোভাবেই যাতে হাত ছাড়া না হয়ে যায়, সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত ।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

গাজায় ৯০ শতাংশ যুদ্ধবিরতি আলোচনা সম্পন্ন: ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা

যেসব আলামতে চেনা যাবে লাইলাতুল কদর

আপডেট সময় ১২:১০:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪

লাইলাতুল কদর একটি মহিমান্বিত রাত। ইমানদার বান্দাদের কাছে এই রাতের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা, এই রাতে নাজিল হয়েছে মহাপবিত্র আল-কুরআন।

এ রাতেই মানুষের ভাগ্য নির্ধারিত হয়। এ রাতের যে কোনো আমল হাজার মাসের আমলের চেয়ে উত্তম। ফেরেশতারা আসমান থেকে জমিনে অবতীর্ণ হন এবং সূর্যাস্ত থেকে নিয়ে সুবহে সাদিক পর্যন্ত মানুষের কাছে সালাম পৌঁছাতে থাকেন।

সে জন্যই নবী (স) ফজিলতপূর্ণ এই রাত তালাশের উদ্দেশ্যে রমজানের শেষ দশক ইতেকাফ করেতেন এবং উম্মতদেরও এই রাত তালাশে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। রমজানের শেষ দশকের যে কোনো বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নবী করিম (স) বলেন, আমাকে লাইলাতুল কদর দেখানো হয়েছিল, অতঃপর আমাকে তা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রগুলোতে লাইলাতুল কদর তালাশ করো। (বুখারি, হাদিস নং ৭০৯)

তবে এ রাত চেনার বিশেষ কিছু আলামত হাদিস ও বুজুর্গদের অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া যায়—

১. লাইলাতুল কদর শেষ সাত দিন হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। (বুখারি ২/৭১১)

২. বিশেষ করে ২৭ তারিখ দিবাগত রাতে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। (তিরমিজি ৩৩৫১)

৩. সে রাতে গভীর অন্ধকার থাকবে না। (মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৩/১৭৯)

৪. উজ্জ্বল একটি রাত হবে। না গরম, না ঠাণ্ডা। সে রাতে কোনো উল্কাপিণ্ড দেখা যাবে না। (মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৩/১৭৯)

৫. মৃদুমন্দ বাতাস প্রবাহিত হবে। সে রাত হবে নাতিশীতোষ্ণ। (মুসনাদে আহমাদ ২২৭৬৫)

৬. সকালে হালকা আলোকরশ্মিসহ সূর্যোদয় হবে, যা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মতো। (ইবনে খুজাইমা ২১৯২)

৭. মানুষ সে রাতে ইবাদত-বন্দেগিতে তৃপ্তি পাবে।

৮. এ রাতে কোনো ইমানদার ব্যক্তিকে আল্লাহ রাত সম্পর্কে জানাতে পারেন।

৯. এ রাতে আল্লাহর রহমতের বৃষ্টি হতে পারে।

লাইলাতুল কদরের বিশেষ আমল—

১. তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করা

হাদিস শরিফে এ রাতে আল্লাহতায়ালার কাছে বিশেষভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করার কথা বলা হয়েছে। আম্মাজান আয়েশা (র) রাসুলুল্লাহকে (স) জিজ্ঞেস করেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি যদি জানতে পারি লাইলাতুল কদর কোনটি, তা হলে আমি সে রাতে কী বলব?

তিনি বলেন, ‘তুমি বলো—আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন কারিম, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি; অর্থাৎ, ‘হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল, দয়ালু, আপনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; সুতরাং আমাকে ক্ষমা করুন।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩৫১৩)

২. বেশি বেশি নফল ইবাদত করা। যেমন কুরআন তিলাওয়াত করা, দান সদকা করা, দরুদ শরিফ পাঠ করা, দোয়া করা, ইস্তেগফার পড়া, সালাতুল হাজাত, সালাতুত তাসবিহ ইত্যাদি নফল নামাজ আদায় করা।

নবী করিম (স) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় কদরের রাতে ইবাদতের জন্য রাত জাগবে, তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৫)

লাইলাতুল কদর মহান রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে মুমিন বান্দাদের জন্য অনেক বড় একটি উপহার। এই উপহার কোনোভাবেই যাতে হাত ছাড়া না হয়ে যায়, সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত ।