বানকো ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. হামদুল ইসলামকে পুঁজিবাজারে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একইসঙ্গে তাকে ১০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার কারসাজি ও গ্রাহকদের টাকা অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের দায়ে তাকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সব ধরনের কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তার স্ত্রী, ভাই-বোন, বোনের স্বামী ও শ্বশুরকে মোট ১৬ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও বিএসইসির তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে বিএসইসির কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বানকো ফাইন্যান্স বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সদস্য এবং বানকোর এমডি বিএমবিএর নির্বাহী কমিটির সদস্য।
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স ১৯৬৯ এর সেকশন ২১ আইন লঙ্গনের দায়ে বানকো ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের এমডি হামদুল ইসলামকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কোম্পানির বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইস্যু) রুলস, ২০১৫ এর রুল ৩ (২)(ডি) ভঙ্গের দায়ে তাকে ১০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আর সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অডিনেন্স ১৯৬৯ এর সেকশন ২১ (২) আইন লঙ্গনের দায়ে পরিবারের সদস্যদের জরিমানা করা হয়েছে।
সিরিয়াল ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার কারসাজি করতেন হামদুল ইসলাম। সহযোগীরা হলেন- তার স্ত্রী শাহিদা আরাবি, তার ভাই সাইফুল ইসলাম হেলালি, বোন হোসনে আরা বেগম, বোনের স্বামী কাজী এমদাদুল হক এবং তার শ্বশুর মো. আব্দুস সুলতান। প্লেসমেন্ট শেয়ার কারসাজি ও সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের দায়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাদের ১৬ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এর মধ্যে স্ত্রীকে দুই কোটি, বোনকে চার কোটি, বোনের স্বামীকে তিন কোটি, শ্বশুরকে তিন কোটি এবং ভাইকে চার কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই ব্যক্তিদের সব বিও হিসাব ও শেয়ার স্থানান্তর বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
বিএসইসি সূত্র জানায়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানির ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিল বানকো ফাইন্যান্স, অবৈধভাবে ওইসব কোম্পানির প্লেসমেন্ট শেয়ার হাতিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে কারসাজি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হামদুল ইসলাম। বিবিএস ক্যাবলস, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, লাভেলো ও সি পার্লের ইস্যু ব্যবস্থাপনায় ছিল প্রতিষ্ঠানটি।
শুধু ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা কোম্পানিগুলোতে নয়, গত ৮ বছরে পুঁজিবাজারে যেসব কোম্পানি রাইট শেয়ার ইস্যু করেছে সেগুলোও তার দখলে ছিল। গত আট বছরে যতগুলো কোম্পানির রাইট শেয়ার ইস্যু হয়েছে, তার প্রত্যেকটিতেই জড়িত হামদুল। কোনোটিতে ইস্যু ম্যানেজার আবার কোনোটিতে আন্ডাররাইটার হিসেবে ছিল তার প্রতিষ্ঠান। আর এই সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের কিছু অসাধু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।