ঢাকা ১২:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাকাতের টাকা ফিলিস্তিনিদের জন্য দেওয়া যাবে কী?

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম হলো জাকাত। রোজা আত্মার শুদ্ধি এনে দেয় আর জাকাত নিয়ে আসে সম্পদের শুদ্ধি। সৎপন্থায় উপার্জিত সম্পদের ওপর নির্দিষ্ট সময় শেষে সুনির্দিষ্ট হারে জাকাত দেওয়ার বিধান রয়েছে। এটি ইসলামের একটি অবশ্য পালনীয় বিধান।

পবিত্র কুরআন শরিফের ৮২ জায়গায় নামাজ আদায়ের সঙ্গে সঙ্গে জাকাত দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে।

পবিত্র কুরআনের সুরা তাওবার ৬০ নম্বর আয়াতে জাকাতের খাত হিসাবে আট শ্রেণির লোকের কথা বলা হয়েছে। যথা— ফকির, যার মালিকানায় জাকাতের নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই, যদিও সে কর্মক্ষম বা কর্মরত হয়। মিসকিন— যার মালিকানায় কোনো ধরনের সম্পদই নেই।

আমিল বা জাকাত উসুলকারী— ইসলামি রাষ্ট্রের বায়তুল মাল কর্তৃক জাকাত সংগ্রহে নিয়োজিত কর্মকর্তা। নওমুসলিমদের পুনর্বাসনের জন্য জাকাত দেওয়া যায়। ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি— যার এ পরিমাণ ঋণ রয়েছে যে, ঋণ আদায় করার পর তার কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ অবশিষ্ট থাকে না।

আল্লাহর রাস্তায় থাকা ব্যক্তি। যেসব মুসলমান যুদ্ধে, জ্ঞানার্জনে কিংবা হজের পথে রয়েছেন এবং তাদের কাছে প্রয়োজনীয় অর্থসম্পদ নেই।

মুসাফির—কোনো ব্যক্তি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া সত্ত্বেও কোথাও সফরে এসে সম্পদশূন্য হয়ে পড়লে, সে বাড়িতে পৌঁছাতে পারে-এমন পরিমাণ জাকাত প্রদান করা যাবে। এ আট খাতের সব খাতে অথবা যে কোনো একটি খাতে জাকাত প্রদান করলে জাকাত আদায় হয়ে যাবে।

ফিলিস্তিনি মজলুম মুসলিমদের জাকাতের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতামত হলো— ফিলিস্তিনের জাকাত নেওয়ার যোগ্য মুসলমানদের জাকাতের টাকা বা সম্পদের মাধ্যমে সহায়তা করা যাবে।

বর্তমান বিশ্বে জাকাতের হকদার মুসলমানদের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষগুলোই এখন গাজায় অবস্থান করছেন। তাই তাদের জন্য সেখানে জাকাতের টাকা পাঠানো শুধু বৈধই নয়, বরং আমাদের ধর্মীয় কর্তব্যও বটে।

তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, গাজায় এমন অনেক মানুষও আছেন যারা জাকাতের হকদার নন। তাই গণবিতরণ কর্মসূচি কিংবা সম্মিলিত ত্রাণ কার্যক্রমে জাকাতের অর্থ ব্যবহার করা যাবে না।

বরং জাকাতের টাকা/সম্পদ সম্পূর্ণ আলাদাভাবে সেখানকার ওলামায়ে কেরাম বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর করতে হবে, যাতে তারা বেছে বেছে জাকাতের উপযুক্ত মানুষকে টাকা অর্পণ করতে পারেন।

জাকাতের টাকা আলাদাভাবে সেখানকার স্থানীয় ওলামায়ে কেরামের হাতে পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতি ও উপযুক্ত মাধ্যম যাদের কাছে পাওয়া যাবে শুধু তাদের কাছেই গাজার জন্য জাকাত/ফিতরার অর্থ হস্তান্তর করতে হবে। যারা উন্মুক্ত আপ্যায়ন ও গণ ত্রাণ হিসেবে খাদ্যবস্ত ও অন্যান্য জিনিস বিতরণ করছে তাদেরকে শুধুমাত্র সাধারণ অনুদান বা সদকা দিন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জাকাতের টাকা ফিলিস্তিনিদের জন্য দেওয়া যাবে কী?

আপডেট সময় ০১:৩০:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম হলো জাকাত। রোজা আত্মার শুদ্ধি এনে দেয় আর জাকাত নিয়ে আসে সম্পদের শুদ্ধি। সৎপন্থায় উপার্জিত সম্পদের ওপর নির্দিষ্ট সময় শেষে সুনির্দিষ্ট হারে জাকাত দেওয়ার বিধান রয়েছে। এটি ইসলামের একটি অবশ্য পালনীয় বিধান।

পবিত্র কুরআন শরিফের ৮২ জায়গায় নামাজ আদায়ের সঙ্গে সঙ্গে জাকাত দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে।

পবিত্র কুরআনের সুরা তাওবার ৬০ নম্বর আয়াতে জাকাতের খাত হিসাবে আট শ্রেণির লোকের কথা বলা হয়েছে। যথা— ফকির, যার মালিকানায় জাকাতের নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই, যদিও সে কর্মক্ষম বা কর্মরত হয়। মিসকিন— যার মালিকানায় কোনো ধরনের সম্পদই নেই।

আমিল বা জাকাত উসুলকারী— ইসলামি রাষ্ট্রের বায়তুল মাল কর্তৃক জাকাত সংগ্রহে নিয়োজিত কর্মকর্তা। নওমুসলিমদের পুনর্বাসনের জন্য জাকাত দেওয়া যায়। ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি— যার এ পরিমাণ ঋণ রয়েছে যে, ঋণ আদায় করার পর তার কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ অবশিষ্ট থাকে না।

আল্লাহর রাস্তায় থাকা ব্যক্তি। যেসব মুসলমান যুদ্ধে, জ্ঞানার্জনে কিংবা হজের পথে রয়েছেন এবং তাদের কাছে প্রয়োজনীয় অর্থসম্পদ নেই।

মুসাফির—কোনো ব্যক্তি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া সত্ত্বেও কোথাও সফরে এসে সম্পদশূন্য হয়ে পড়লে, সে বাড়িতে পৌঁছাতে পারে-এমন পরিমাণ জাকাত প্রদান করা যাবে। এ আট খাতের সব খাতে অথবা যে কোনো একটি খাতে জাকাত প্রদান করলে জাকাত আদায় হয়ে যাবে।

ফিলিস্তিনি মজলুম মুসলিমদের জাকাতের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতামত হলো— ফিলিস্তিনের জাকাত নেওয়ার যোগ্য মুসলমানদের জাকাতের টাকা বা সম্পদের মাধ্যমে সহায়তা করা যাবে।

বর্তমান বিশ্বে জাকাতের হকদার মুসলমানদের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষগুলোই এখন গাজায় অবস্থান করছেন। তাই তাদের জন্য সেখানে জাকাতের টাকা পাঠানো শুধু বৈধই নয়, বরং আমাদের ধর্মীয় কর্তব্যও বটে।

তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, গাজায় এমন অনেক মানুষও আছেন যারা জাকাতের হকদার নন। তাই গণবিতরণ কর্মসূচি কিংবা সম্মিলিত ত্রাণ কার্যক্রমে জাকাতের অর্থ ব্যবহার করা যাবে না।

বরং জাকাতের টাকা/সম্পদ সম্পূর্ণ আলাদাভাবে সেখানকার ওলামায়ে কেরাম বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর করতে হবে, যাতে তারা বেছে বেছে জাকাতের উপযুক্ত মানুষকে টাকা অর্পণ করতে পারেন।

জাকাতের টাকা আলাদাভাবে সেখানকার স্থানীয় ওলামায়ে কেরামের হাতে পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতি ও উপযুক্ত মাধ্যম যাদের কাছে পাওয়া যাবে শুধু তাদের কাছেই গাজার জন্য জাকাত/ফিতরার অর্থ হস্তান্তর করতে হবে। যারা উন্মুক্ত আপ্যায়ন ও গণ ত্রাণ হিসেবে খাদ্যবস্ত ও অন্যান্য জিনিস বিতরণ করছে তাদেরকে শুধুমাত্র সাধারণ অনুদান বা সদকা দিন।