হাসপাতালে কঠিন লড়াই লড়ছেন দু-বারের ক্যান্সারজয়ী অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। তবে আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতি হয়েছে, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন।
এক সপ্তাহ আগে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন এ অভিনেত্রী। ঐন্দ্রিলার পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছে নায়িকার পরিবার, প্রেমিকসহ গোটা হাসপাতাল। তবে ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে ঐন্দ্রিলার। হাসপাতাল সূত্রে জানা যাচ্ছে, রক্তচাপ স্বাভাবিক। দেহে অক্সিজেনের মাত্রা স্থিতিশীল। স্নায়ুও সক্রিয় রয়েছে ঐন্দ্রিলা শর্মার।
পর পর দুবার ক্যান্সার জয় করে ফিরেছেন ‘জিয়ন কাঠি’ নায়িকা ঐন্দ্রিলা শর্মা। ভেবেছিলেন হয়তো এ বারে স্বাভাবিক ছন্দে বইবে জীবন। কিন্তু না! আচমকাই ছন্দপতন। তবে ঐন্দ্রিলা লড়াকু। সোমবার শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন ঐন্দ্রিলা। তার সংক্রমণের মাত্রা কমেছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ইতোমধ্যেই জ্ঞান ফিরেছে কিছুটা। অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে। ইনফেকশন কমছে। ঐন্দ্রিলার শরীরের বাঁ দিক আগের মতো আর নেতিয়ে নেই। তবে এখনও বিপদ কাটেনি। ওষুধের ঘোরে ঘুমিয়ে রয়েছেন অভিনেত্রী। চিকিৎসকরা তাকে টানা পর্যবেক্ষণে রাখতে চান।
পর্দার ‘বামাক্ষ্যাপা’ অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী নিজের ফেসবুকে পোস্টে লেখেন, “হাসপাতালে ছয় দিন পূর্ণ হলো আজ, ঐন্দ্রিলার এখনও পুরোপুরি জ্ঞান ফেরেনি। তবে ভেন্টিলেশন থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে, শ্বাসক্রিয়া আগের থেকে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে, রক্তচাপও মোটামুটি স্বাভাবিক। জ্বর কমেছে। ওর মা যতক্ষণ থাকে, নিজের হাতে ওর ফিজিওথেরাপি করায়, যত্ন নেয়। বাবা আর দিদি ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করে। সৌরভ আর দিব্য রোজ রাতে আমার সঙ্গে হাসপাতালে থাকতে আসে। আর আমি দিনে তিনবার করে গল্প করি ঐন্দ্রিলার সঙ্গে। গলা চিনতে পারে, হার্টরেট ১৩০-১৪০ পৌঁছে যায়, দরদর করে ঘাম হয়, হাত মুচড়িয়ে আমার হাত ধরার চেষ্টা করে। প্রথম প্রথম ভয় পেতাম, এখন বুঝি ওটাই ফিরিয়ে আনার এক্সটার্নাল স্টিমুলি।”
সোশ্যাল মিডিয়ার এক শ্রেণির মানুষের প্রতি ক্ষোভ উগরে সব্যসাচী নিজের ফেসবুক পেজে আরও লিখেছেন, “আমার আজকাল কিছুই লিখতে ইচ্ছা করে না, কিন্তু আজ কিছু মানুষের বর্বরতার নমুনা দেখে লিখতে বাধ্য হলাম। ইউটিউবের কল্যাণে কয়েকটা ভুয়া ভিডিও আর ফেক থাম্বনেল বানিয়ে পয়সা রোজগার করা অত্যন্ত ঘৃণ্য মানসিকতার কাজ বলে আমি মনে করি, সেটা যে ওর বাড়ির লোকের মনে কেমন প্রভাব ফেলে তা হয়তো আপনারা বুঝবেন না। আমার চোখে ওর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটেনি, অবনতি ঘটেছে মানবিকতার।”
এরপরেই ঐন্দ্রিলার প্রতি সব্যসাচীর অকৃত্রিম ভালোবাসা ঝরে পড়েছে তার লেখায়। সব্যসাচী লিখেছেন, ‘ভালো আছে’ বলতে আমার ভয় লাগে, কিন্তু ঐন্দ্রিলা আছে। প্রচণ্ডভাবে আছে। আমার সামনে শুয়ে থেকেও হয়তো কয়েক সহস্র মাইল দূরে আছে, কিন্তু ঠিক ফিরে আসবে। ওর একা থাকতে বিরক্ত লাগে।
ঐন্দ্রিলার দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য প্রার্থণা করছেন তার সহকর্মী, ভক্ত এবং শুভানুধ্যায়ীরা। এর আগেও দুবার ক্যান্সার জয় করে ফিরেছেন ঐন্দ্রিলা। এর আগে গত শুক্রবার দুপুরের দিকে প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরী জানিয়েছিলেন, ‘মেয়েটা লড়ে যাচ্ছে, সঙ্গে লড়ছে একটা গোটা হাসপাতাল। নিজের হাতে করে নিয়ে এসেছিলাম, নিজের হাতে ওকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাবো। এর অন্যথা কিছু হবে না।’