ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির বাতাসে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দূষণের মাত্রা। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে শ্বাস নেওয়াই দায়; ফলে দূষণের দৌরাত্ম্যে দিল্লির অনেক বাসিন্দাই অসুস্থবোধ করছেন।
রাজধানীর অনেকেই শ্বাসকষ্টে ভুগছেন, কারো বা চোখে জ্বালাপোড়া অনভূতির মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে, অনেকের কাশি-হাঁচি থামছেই না। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের ভিড় ক্রমশ বাড়ছে জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৪ অক্টোবর দীপাবলি উৎসবের পর থেকে দিল্লিতে শ্বাসকষ্ট, চোখে জ্বালাপোড়ার অনুভূতি ও হাঁচি-কাশি— তিন উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিন বহুসংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভিড় করছেন। যত দিন গড়াচ্ছে, ততই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শুক্রবার দিল্লির লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীদের লম্বা লাইন দেখা গেছে। হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, এই রোগীদের অধিকাংশই শ্বাসকষ্টে ভুগছেন।
অনেক দিন ধরে কাশি, হাঁচি হচ্ছে— এমন রোগীর সংখ্যাও সেখানে ছিল চোখে পড়ার মতো। স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, শিশু ও বয়স্করা তুলনামূলক ভাবে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালে নিজের সন্তানকে নিয়ে আসা ফাতিমা রহমান নামের এক নারী জানিয়েছেন, তার ছয় বছরের সন্তানের গলাব্যথা, সঙ্গে কাশিও রয়েছে। সন্তানের অসুস্থতা না সারায় নিকটবর্তী হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে ভিড় থাকায় লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালে যান।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দূষণের জেরেই অধিকাংশ মানুষ অসুস্থ বোধ করছেন। সে কারণে বাড়ির বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। বিশেষত, সকালের দিকে বাড়ির বাইরে না বেরোনোই ভাল বলে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরাও। সেই সঙ্গে রোজ বেশি করে শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দিল্লিতে দূষণের জেরে বাতাসের গুণমান কার্যত তলানিকে ঠেকেছে। শনিবার সকালে রাজধানীর বাতাসের গুণমান সূচক ছিল ৪৩১ পয়েন্ট। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এয়ার কোয়ালিটি সূচক (একিউ সূচক) অনুযায়ী, এই পয়েন্ট রীতিমতো ‘ভয়াবহ’।
দিল্লিবাসীর পক্ষে এই বাতাস শ্বাস নেওয়ার উপযোগী নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিছু ব্যবস্থা অবশ্য ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাজধানী নয়াদিল্লি ও তার আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চলে বায়ুর গুণমান খারাপ হওয়ার প্রেক্ষিতে চারস্তরীয় ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘দ্য কমিশন অফ এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট’। একাধিক গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি শনিবার থেকে সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হচ্ছে।