ঢাকা ১০:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

রোহিঙ্গা সংকটে ভারতের মুখ্য ভূমিকা চান শেখ হাসিনা

রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশের জন্য একটি ‘বড় বোঝা’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। একইসঙ্গে ভারত এ সমস্যা সমাধানে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে। ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সাক্ষাৎকারটি রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) তাদের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে লক্ষাধিক রোহিঙ্গার উপস্থিতি তার সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে বলে আলাপচারিতায় স্বীকার করেছেন হাসিনা। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আচ্ছা আপনি জানেন… আমাদের জন্য এটি একটি বড় বোঝা। ভারত একটা বিশাল দেশ; তারা রোহিঙ্গাদের থাকার জায়গার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হলেও সেখানে খুব বেশি শরণার্থী নেই। কিন্তু আমাদের দেশে… আমরা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। তাই… আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করছি, যে তাদেরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত যাতে তারা দেশে ফিরে যেতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার সরকার মানবিক দিকটি মাথায় রেখে বাস্তুচ্যুত এই সম্প্রদায়ের সদস্যদের ভালো রাখার চেষ্টা করেছে। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ… মানবিক কারণে আমরা এই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি এবং সব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছি। এমনকি এই কোভিডের সময়, আমরা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সবাইকে টিকা দিয়েছি। কিন্তু তারা কতদিন এখানে থাকবে? তারা ক্যাম্পে অবস্থান করছে। এটা আমাদের পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক। তার ওপর সেখানে কিছু লোক মাদক পাচার বা নারী পাচারের বা অস্ত্র সংঘাতের সঙ্গে জড়িত। দিন দিন তা বেড়েই চলেছে। তাই যত তাড়াতাড়ি তারা দেশে ফিরতে পারে, তা আমাদের দেশের জন্য এবং মিয়ানমারের জন্যও মঙ্গলজনক। তাই আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা তাদের সঙ্গে এবং আসিয়ান বা ইউএনও-সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গেও আলোচনা করছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষায়, ‘এখন তাদের (রোহিঙ্গাদের) দেশে ফিরে যাওয়া উচিত। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত এই কাজে মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমি মনে করি।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) থেকে চার দিনের ভারত সফর শুরু করতে যাচ্ছেন। সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনাকে নদীর পানি বণ্টনে বিশেষ করে তিস্তা নদীর ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে তার দেশের সহযোগিতার বিষয়েও প্রশ্ন করা হয়। শেখ হাসিনা বলেন, চ্যালেঞ্জ থাকলেও সেগুলো এমন কিছু নয় যা পারস্পরিকভাবে সমাধান করা যায় না।

তিনি বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক যে, আমরা একটি… আপনি জানেন… এটি ঝুলে আছে। (আমাদের এখানে) ভারত থেকে পানি আসে, তাই ভারতের আরও উদারতা দেখাতে হবে। কারণ এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। কখনো কখনো পানির অভাবে আমাদের জনগণও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে তিস্তায় (পানি না পেয়ে) আমরা ফসল রোপণ করতে পারিনি এবং আরও অনেক সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই আমি মনে করি এর সমাধান হওয়া উচিত। অবশ্য, হ্যাঁ আমরা দেখেছি- প্রধানমন্ত্রী (মোদি) …আপনি জানেন… এই সমস্যাটি সমাধান করার জন্য অনেক আগ্রহী, কিন্তু সমস্যাটি আপনার দেশেই। তাই… আমরা আশা করি এটি (সমাধান) হবে, আপনি জানেন… এটি সমাধান করা উচিত।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, দুই দেশ গঙ্গা নদীর পানি ভাগ করে নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘শুধু গঙ্গার পানিই আমরা ভাগাভাগি করেছি। এই পানির বিষয়ে আমরা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছি। কিন্তু আমাদের আরও ৫৪টি নদী আছে। হ্যাঁ… এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা, তাই এটি সমাধান করা উচিত।’

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি

রোহিঙ্গা সংকটে ভারতের মুখ্য ভূমিকা চান শেখ হাসিনা

আপডেট সময় ১১:৩৪:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশের জন্য একটি ‘বড় বোঝা’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। একইসঙ্গে ভারত এ সমস্যা সমাধানে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে। ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সাক্ষাৎকারটি রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) তাদের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে লক্ষাধিক রোহিঙ্গার উপস্থিতি তার সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে বলে আলাপচারিতায় স্বীকার করেছেন হাসিনা। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আচ্ছা আপনি জানেন… আমাদের জন্য এটি একটি বড় বোঝা। ভারত একটা বিশাল দেশ; তারা রোহিঙ্গাদের থাকার জায়গার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হলেও সেখানে খুব বেশি শরণার্থী নেই। কিন্তু আমাদের দেশে… আমরা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। তাই… আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করছি, যে তাদেরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত যাতে তারা দেশে ফিরে যেতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার সরকার মানবিক দিকটি মাথায় রেখে বাস্তুচ্যুত এই সম্প্রদায়ের সদস্যদের ভালো রাখার চেষ্টা করেছে। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ… মানবিক কারণে আমরা এই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি এবং সব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছি। এমনকি এই কোভিডের সময়, আমরা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সবাইকে টিকা দিয়েছি। কিন্তু তারা কতদিন এখানে থাকবে? তারা ক্যাম্পে অবস্থান করছে। এটা আমাদের পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক। তার ওপর সেখানে কিছু লোক মাদক পাচার বা নারী পাচারের বা অস্ত্র সংঘাতের সঙ্গে জড়িত। দিন দিন তা বেড়েই চলেছে। তাই যত তাড়াতাড়ি তারা দেশে ফিরতে পারে, তা আমাদের দেশের জন্য এবং মিয়ানমারের জন্যও মঙ্গলজনক। তাই আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা তাদের সঙ্গে এবং আসিয়ান বা ইউএনও-সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গেও আলোচনা করছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষায়, ‘এখন তাদের (রোহিঙ্গাদের) দেশে ফিরে যাওয়া উচিত। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত এই কাজে মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমি মনে করি।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) থেকে চার দিনের ভারত সফর শুরু করতে যাচ্ছেন। সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনাকে নদীর পানি বণ্টনে বিশেষ করে তিস্তা নদীর ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে তার দেশের সহযোগিতার বিষয়েও প্রশ্ন করা হয়। শেখ হাসিনা বলেন, চ্যালেঞ্জ থাকলেও সেগুলো এমন কিছু নয় যা পারস্পরিকভাবে সমাধান করা যায় না।

তিনি বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক যে, আমরা একটি… আপনি জানেন… এটি ঝুলে আছে। (আমাদের এখানে) ভারত থেকে পানি আসে, তাই ভারতের আরও উদারতা দেখাতে হবে। কারণ এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। কখনো কখনো পানির অভাবে আমাদের জনগণও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে তিস্তায় (পানি না পেয়ে) আমরা ফসল রোপণ করতে পারিনি এবং আরও অনেক সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই আমি মনে করি এর সমাধান হওয়া উচিত। অবশ্য, হ্যাঁ আমরা দেখেছি- প্রধানমন্ত্রী (মোদি) …আপনি জানেন… এই সমস্যাটি সমাধান করার জন্য অনেক আগ্রহী, কিন্তু সমস্যাটি আপনার দেশেই। তাই… আমরা আশা করি এটি (সমাধান) হবে, আপনি জানেন… এটি সমাধান করা উচিত।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, দুই দেশ গঙ্গা নদীর পানি ভাগ করে নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘শুধু গঙ্গার পানিই আমরা ভাগাভাগি করেছি। এই পানির বিষয়ে আমরা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছি। কিন্তু আমাদের আরও ৫৪টি নদী আছে। হ্যাঁ… এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা, তাই এটি সমাধান করা উচিত।’