ঢাকা ০৮:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোলায় নদীতে জাল পাতাকে কেন্দ্র করে নান্নু বাহিনীর হামলায়- গুলিবর্ষণ, আহত-১৭, নিখোঁজ-২

ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ও দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর মাঝ পয়েন্টে সীমানা নির্ধারণ ও মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে মদনপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান
এ.কে.এম.নাছির উদ্দিন নান্নু এর লালিত জলদস্যু বাহিনীর প্রধান ভুট্টু মাঝি, হারুন মাঝি, রহিম মাঝি ও রুহুল আমিন এবং লোকমান এর নেতৃত্বে ধনিয়া ইউনিয়নের মনির মেম্বারের মালিকানাধীন বিল্লাল মাঝির নৌকার মাঝি ও মাল্লাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা ও গুলি চালিয়ে ১৭ জেলেকে গুরতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। আহত ১৭ জেলেকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে কোষ্টগার্ড, পুলিশ ও স্থানীয়রা। এ ঘটনায় ২ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা যায়।

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে পাই জাল পাতাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। আহত ১৭ জেলের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা যায়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ভোলা সদর মডেল থানার এসআই মোঃ রাসেল।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সুত্রে জানা যায়, সকাল ১১ দিকে নৌকা ও জাল নিয়ে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে নদীতে যায় বিল্লাল মাঝি ও তার লোকজন। ভোলা ও দৌলতখান এর মধ্যবর্তী স্থানে জাল ফেলতে গেলে মদনপুর চরে থাকা কথিত নান্নু গ্রুপের সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান ভুট্টু মাঝি, লোকমান, হারুন মাঝি, রহিম মাঝি ও রুহুল আমিন এর নেতৃত্বে প্রায় কয়েক শত অস্ত্র ধারি সন্ত্রাসী বাহিনী ঐ জেলেদের উপর হামলা চালায়। এ সময় দেশীয় অস্ত্র রাইফেল, বগিদা, রামদা ও পিস্তল নিয়ে গুলি করে। জেলেদের গুরুতর আহত করে মদনপুর চরের ভেতরে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় অধিকাংশদেরকে উদ্ধার করা গেলেও আটজনকে সন্ত্রাসীরা জিম্মি করে রাখে। এ সময় খবর পেয়ে ভোলা সদর থানার পুলিশ ও কোষ্টগার্ড এবং নৌ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জিম্মি করা জেলেদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

আহতরা হলেন, আবুল কাশেম (৪০), আবু মুছা (৪৫), বাপ্পী (২১), শাকিল (২১), জিহাদ (২২), জুন্টু (২৫), রাসেল (২৬), নুরুউদ্দিন (২৮), মনজু (৩৫), বিল্লাল মাঝি (৫৮), শান্ত (১৯), জিয়া (২৫), ইব্রাহিম (৩০), বশির মাঝি (৪০), রিদন (১৫), ফারুক (৩৫), কাশেম মাঝি (৪০)। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ২ জন। তারা হলেন, নুরুউদ্দিন (৪৫) ও আশরাফ আলী (২০)।

ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই মদনপুরের বর্তমান চেয়ারম্যান নান্নু ডাক্তার এর দস্যু বাহিনীর প্রধান ভুট্টু মাঝি, হারুন মাঝি, রহিম মাঝি, রুহুল আমিন, আব্দুল মাঝি ও খালেক মাঝি সহ সন্ত্রাসীরা আমাদের উপর হামলা চালায়। আমাদের অবস্থা গুরুতর রক্তাক্ত হয়ে পড়ে। আমাদেরকে আটকে রেখে নির্যাতন করতেছিলো সন্ত্রাসীরা। এ খবর পেয়ে আমাদের উদ্ধার করতে এগিয়ে আসে স্থানীয় বশির মাঝি। নৌকার মাঝি বিল্লাল জানায় এ ঘটনায় আমাদের নৌকা ও জাল সহ প্রায় ২০ লক্ষ টাকার মালামাল সন্ত্রাসীরা নিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন নান্নু বলেন, আমি ফেরেশতা, জেলেরা জেলেরা মারামারি করছে আমি কিছু জানি না। অভিযুক্ত ভুট্টু মাঝি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমি নোয়াখালী ছিলাম।

ইলিশা নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকতার হোসেন বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, অভিযোগ পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ বিষয়ে ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির বলেন, মদনপুরের মেঘনায় যে মারামারি হয়েছে আমরা বিষয়টি শুনে তাৎক্ষণিক ভোলা সদর থানা থেকে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভোলায় নদীতে জাল পাতাকে কেন্দ্র করে নান্নু বাহিনীর হামলায়- গুলিবর্ষণ, আহত-১৭, নিখোঁজ-২

আপডেট সময় ১২:৫০:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৩

ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ও দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর মাঝ পয়েন্টে সীমানা নির্ধারণ ও মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে মদনপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান
এ.কে.এম.নাছির উদ্দিন নান্নু এর লালিত জলদস্যু বাহিনীর প্রধান ভুট্টু মাঝি, হারুন মাঝি, রহিম মাঝি ও রুহুল আমিন এবং লোকমান এর নেতৃত্বে ধনিয়া ইউনিয়নের মনির মেম্বারের মালিকানাধীন বিল্লাল মাঝির নৌকার মাঝি ও মাল্লাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা ও গুলি চালিয়ে ১৭ জেলেকে গুরতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। আহত ১৭ জেলেকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে কোষ্টগার্ড, পুলিশ ও স্থানীয়রা। এ ঘটনায় ২ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা যায়।

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে পাই জাল পাতাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। আহত ১৭ জেলের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা যায়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ভোলা সদর মডেল থানার এসআই মোঃ রাসেল।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সুত্রে জানা যায়, সকাল ১১ দিকে নৌকা ও জাল নিয়ে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে নদীতে যায় বিল্লাল মাঝি ও তার লোকজন। ভোলা ও দৌলতখান এর মধ্যবর্তী স্থানে জাল ফেলতে গেলে মদনপুর চরে থাকা কথিত নান্নু গ্রুপের সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান ভুট্টু মাঝি, লোকমান, হারুন মাঝি, রহিম মাঝি ও রুহুল আমিন এর নেতৃত্বে প্রায় কয়েক শত অস্ত্র ধারি সন্ত্রাসী বাহিনী ঐ জেলেদের উপর হামলা চালায়। এ সময় দেশীয় অস্ত্র রাইফেল, বগিদা, রামদা ও পিস্তল নিয়ে গুলি করে। জেলেদের গুরুতর আহত করে মদনপুর চরের ভেতরে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় অধিকাংশদেরকে উদ্ধার করা গেলেও আটজনকে সন্ত্রাসীরা জিম্মি করে রাখে। এ সময় খবর পেয়ে ভোলা সদর থানার পুলিশ ও কোষ্টগার্ড এবং নৌ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জিম্মি করা জেলেদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

আহতরা হলেন, আবুল কাশেম (৪০), আবু মুছা (৪৫), বাপ্পী (২১), শাকিল (২১), জিহাদ (২২), জুন্টু (২৫), রাসেল (২৬), নুরুউদ্দিন (২৮), মনজু (৩৫), বিল্লাল মাঝি (৫৮), শান্ত (১৯), জিয়া (২৫), ইব্রাহিম (৩০), বশির মাঝি (৪০), রিদন (১৫), ফারুক (৩৫), কাশেম মাঝি (৪০)। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ২ জন। তারা হলেন, নুরুউদ্দিন (৪৫) ও আশরাফ আলী (২০)।

ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই মদনপুরের বর্তমান চেয়ারম্যান নান্নু ডাক্তার এর দস্যু বাহিনীর প্রধান ভুট্টু মাঝি, হারুন মাঝি, রহিম মাঝি, রুহুল আমিন, আব্দুল মাঝি ও খালেক মাঝি সহ সন্ত্রাসীরা আমাদের উপর হামলা চালায়। আমাদের অবস্থা গুরুতর রক্তাক্ত হয়ে পড়ে। আমাদেরকে আটকে রেখে নির্যাতন করতেছিলো সন্ত্রাসীরা। এ খবর পেয়ে আমাদের উদ্ধার করতে এগিয়ে আসে স্থানীয় বশির মাঝি। নৌকার মাঝি বিল্লাল জানায় এ ঘটনায় আমাদের নৌকা ও জাল সহ প্রায় ২০ লক্ষ টাকার মালামাল সন্ত্রাসীরা নিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন নান্নু বলেন, আমি ফেরেশতা, জেলেরা জেলেরা মারামারি করছে আমি কিছু জানি না। অভিযুক্ত ভুট্টু মাঝি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমি নোয়াখালী ছিলাম।

ইলিশা নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকতার হোসেন বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, অভিযোগ পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ বিষয়ে ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির বলেন, মদনপুরের মেঘনায় যে মারামারি হয়েছে আমরা বিষয়টি শুনে তাৎক্ষণিক ভোলা সদর থানা থেকে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।