ঢাকা ০২:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিএনপির ৩ সংগঠনের যৌথ কর্মসূচি ঘোষণা রিসেট বাটন প্রসঙ্গে বক্তব্য স্পষ্ট করল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে পটুয়াখালীতে ১৭৬টি মন্ডপে দুর্গাপূজা শুরু; নিরাপত্তায় আইনশৃংঙ্খলা বাহিনী পটুয়াখালীতে ৮২ হাজার কিশোরী পাবে এইচপিভি টিকা চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডক্টর সিরিয়াল ডট কম অ্যাপের উদ্বোধন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা নির্বিঘ্নে পূজা পালন করবে: হাফিজ ইব্রাহিম ভোলায় সাড়ে তিন কোটি টাকার নিষিদ্ধজালসহ আটক-২ একজন মানবিক পুলিশের গল্প। রাষ্ট্র সংস্কারে যে ১০ প্রস্তাব দিয়েছে জামায়াত আনোয়ারা থানা এলাকায় পাওয়া অজ্ঞাত লাশের পরিচয় সনাক্ত করলো পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা।

মিঠাপুকুরে ১৩ দিনের নবজাতকে নিয় কুমারী মায়ের থানায় অভিযোগ

রংপুরের মিঠাপুকুরে ১৩দিনের নবজাতক সন্তানকে নিয়ে লাঞ্চনা‌,বঞ্চনা,ধিক্কার,তিরস্কার সহ নানা অবহেলা ও শংকায় দিন কাটাচ্ছেন এক কুমারী মা। জুটছে না তার ভাগ্যে ঠিকমত খাবার।পাচ্ছেন না জীবন কাটানোর মত অতি প্রয়োজনীয় সাধারন জিনিসপত্র। বর্তমানে অনাহারে অর্ধাহারে নবজাতক শিশুকে নিয়ে‌ অতি মানবেতর জীবন যাপন করছে।

মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স্রে ৫দিনের সরকারী ব্যবস্থার প্রসুতিকালীন সেবা-চিকিৎসার পর লাজ-লজ্জার মাথা খেয়ে দিন মজুর পিতার কুড়ে ঘরেই ফিরে গেছেন। যেখানে দিন শেষে পেটের আহারই অনিশ্চিত।সেখানে নবজাতক সন্তানের সেবা চিকিৎসা কতটা করা সম্ভব ? তার উপর রয়েছে কুমারী মাতার কলংক। সমাজ পড়শীসহ কৌতুহলী মানুষ কখনো বা দলে দলে কখনো আড়চোখের চাহনী দিয়ে তাকে যেন ছিন্নভিন্ন করে চলেছে। এছাড়াও প্রকাশ্যে মুখের উপরে অনেকেই সামনে এসে লাঞ্চনা বঞ্চনা ধিক্কার তিরস্কার সহ নানা কথার বালে।তবুও হাপিয়ে পড়েননি এই কুমারী মা। তার নিজ এবং সন্তানের জীবনের স্বার্থে তাকিয়ে আছেন আইন সমাজ ও মানবতার দিকে।তবে কি তিনি পাবেন নিজ আত্মসম্মান এবং সন্তানের পিতৃ পরিচয় ? আমাদের মানব চালিত আইন সমাজ ও মানবতার কাছে হেরে যাবেন নাতো এই মা ? এই প্রশ্ন আজ অনেকের মনে উকিঁ দিলেও তারা আশাবাদী, হয়তো ঠিকই একদিন নিজ আত্মসম্মান এবং সন্তানের পিতৃ পরিচয় নিয়ে সমাজে মাথা তুলে দাড়াবেন এই কুমারী মা এবং তার সন্তান।

সরজমিনে গিয়ে ও ভুক্তভোগী এবং স্থানীয় জনগণের সাথে কথা বলে জানা যায়,রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বৈরাতী ডিগ্রী মহাবিদ্যালয়ের এইচএসসি ২য়বর্ষের ছাত্রী কুসুম (ছদ্মনাম) কলেজে লেখাপড়ার ফাঁকে মনের অজান্তে কলেজ পার্শ্ববর্তী পুটিমারী গ্রামের মোতালেব মিয়ার অনার্স পড়ুয়া ছেলে সৈকত আলীর প্রেমে পড়েন। তাদের প্রেম সম্পর্কের গভীরতায় এক সময় নিজেকে হারিয়ে ফেলেন সৈকত আলীর‌ কুচক্র বুদ্ধির নিকট এবং তার ‌ফলশ্রুতিতে তার শরীরে দেখা দেয় প্রাকৃতিক চির সত্যের রুপ। কেটে যায় তার প্রেমের ঘোর। অনেক অনুনয় বিনয় কাকুতি মিনতি করেন প্রেমিক সৈকত আলীকে, কিন্তু সৈকত আলীর মন গলাতে পারলেও তিনি পারেননি তার পরিবারের মন গলাতে। ফলে দিনের পর দিন ধর্না দিতে দিতে ২০ সেপ্টেম্বর মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জন্ম দেন ‌ ফুটফুটে এক নিষ্পাপ পুত্র সন্তান। মা তার নাম রেখেছেন নয়ন বাবু।

ভুক্তভোগী এই মা (কুমারী মাতা) অভিযোগ করে বলেন, প্রথমতঃ তার অবুঝ মনের সাথে প্রতারনা করেছেন প্রেমিকরুপী সৈকত আলী। তাকে বিয়ের প্রলোভন‌ দেখিয়ে জোরপুর্বক ধর্ষন করেছেন। তখন তিনি বারবার ছুটে গেছেন সৈকত ও তার পরিবারের কাছে। সৈকতের পরিবারের লোকজনও তার সাথে প্রতারনা করে চালাকির আশ্রয় নিয়েছেন। তারা তাকে বুঝিয়েছিলেন গর্ভে সন্তান থাকা অবস্থায় বিবাহ জায়েজ নয়। সন্তান প্রসব হবার পর তাকে বউ করে ঘরে নিবেন, কিন্তু এখন তারা এ সন্তানকে অস্বীকার করছেন। দিনমজুর পিতার কন্যা হয়ে প্রভাবশালী সৈকত ও তার পরিবারের সাথে আইনী লড়াইয়ের মনোবল রাখলেও হয়ে পড়েছেন নানা শংকায় শংকিত এই পরিবার। তিনি আরো জানান, হাসপাতালে তার সন্তানকে প্রানে মারাসহ চুরির ষড়যন্ত্র করেছিল সৈকত এবং তার পরিবারের লোকজন। তারা তাতে সফল হতে পারেনি। সিস্টাররা তাকে আগলে রেখেছিলেন। সৈকতের লোকজনের কারনে তাকে হাসপাতাল থেকে ৫দিনের মাথায় ছুটি দেন। তার সন্তান প্রসবের ১৩দিন চলছে। প্রসুতিকালীন সময় অতিবাহিত হলে মামলার প্রস্তুতি নেবেন। তবে বিষয়টি তিনি থানায় মৌখিক জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।অভিযুক্ত সৈকতের খোঁজে তার বসতবাড়ীতে গিয়ে না পাওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায় নাই। সৈকতের মা সাজেদা বেগম সৈকতের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবী করেন। সৈকতের বাবা মোতালেব মিয়ার সাথে কথা হয় তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চাতালে। তিনি তার ছেলের বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন। এসময় সৈকতের এক নিকট আত্নীয় অহমিকার সাথে বলেন, তারা এই এলাকার মানুষের বিচার করেন। তাদের বিচার কে করবে ? ওই মেয়ে মামলা করলে তারা দেখে নেবেন‌ আদালতে। সৈকতের বাড়ির পাশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দার বলেন, এলাকায় ইতোমধ্যে প্রভাবশালী সৈকতের পরিবার সৈকতকে বিবাহ দিয়ে আত্নগোপন করে রেখেছেন। তারা সৈকতকে বিদেশে পাঠিয়ে‌ দেওয়ার পায়তারা চালাচ্ছেন। বালারহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত রতন বলেন, মেয়েটির ঘটনা দুঃখজনক। তার দাবী এবং অভিযোগ সত্য হলে দায়ীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হওয়া দরকার‌। পাশাপাশি সমাজে যেন এ ধরনের ঘটনা আর না হয় সেদিকে সচেতন সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান‌ দৈনিক আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, তথ্য স্পর্শ কাতর তাই অতি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে‌ পাশাপাশি ভিকটিম যাতে সঠিক আইনগত সহায়তা পায় তার ব্যবস্থা মিঠাপুকুর থানা পুলিশ প্রশাসন গ্রহণ করবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বিএনপির ৩ সংগঠনের যৌথ কর্মসূচি ঘোষণা

মিঠাপুকুরে ১৩ দিনের নবজাতকে নিয় কুমারী মায়ের থানায় অভিযোগ

আপডেট সময় ১০:৪৯:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩

রংপুরের মিঠাপুকুরে ১৩দিনের নবজাতক সন্তানকে নিয়ে লাঞ্চনা‌,বঞ্চনা,ধিক্কার,তিরস্কার সহ নানা অবহেলা ও শংকায় দিন কাটাচ্ছেন এক কুমারী মা। জুটছে না তার ভাগ্যে ঠিকমত খাবার।পাচ্ছেন না জীবন কাটানোর মত অতি প্রয়োজনীয় সাধারন জিনিসপত্র। বর্তমানে অনাহারে অর্ধাহারে নবজাতক শিশুকে নিয়ে‌ অতি মানবেতর জীবন যাপন করছে।

মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স্রে ৫দিনের সরকারী ব্যবস্থার প্রসুতিকালীন সেবা-চিকিৎসার পর লাজ-লজ্জার মাথা খেয়ে দিন মজুর পিতার কুড়ে ঘরেই ফিরে গেছেন। যেখানে দিন শেষে পেটের আহারই অনিশ্চিত।সেখানে নবজাতক সন্তানের সেবা চিকিৎসা কতটা করা সম্ভব ? তার উপর রয়েছে কুমারী মাতার কলংক। সমাজ পড়শীসহ কৌতুহলী মানুষ কখনো বা দলে দলে কখনো আড়চোখের চাহনী দিয়ে তাকে যেন ছিন্নভিন্ন করে চলেছে। এছাড়াও প্রকাশ্যে মুখের উপরে অনেকেই সামনে এসে লাঞ্চনা বঞ্চনা ধিক্কার তিরস্কার সহ নানা কথার বালে।তবুও হাপিয়ে পড়েননি এই কুমারী মা। তার নিজ এবং সন্তানের জীবনের স্বার্থে তাকিয়ে আছেন আইন সমাজ ও মানবতার দিকে।তবে কি তিনি পাবেন নিজ আত্মসম্মান এবং সন্তানের পিতৃ পরিচয় ? আমাদের মানব চালিত আইন সমাজ ও মানবতার কাছে হেরে যাবেন নাতো এই মা ? এই প্রশ্ন আজ অনেকের মনে উকিঁ দিলেও তারা আশাবাদী, হয়তো ঠিকই একদিন নিজ আত্মসম্মান এবং সন্তানের পিতৃ পরিচয় নিয়ে সমাজে মাথা তুলে দাড়াবেন এই কুমারী মা এবং তার সন্তান।

সরজমিনে গিয়ে ও ভুক্তভোগী এবং স্থানীয় জনগণের সাথে কথা বলে জানা যায়,রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বৈরাতী ডিগ্রী মহাবিদ্যালয়ের এইচএসসি ২য়বর্ষের ছাত্রী কুসুম (ছদ্মনাম) কলেজে লেখাপড়ার ফাঁকে মনের অজান্তে কলেজ পার্শ্ববর্তী পুটিমারী গ্রামের মোতালেব মিয়ার অনার্স পড়ুয়া ছেলে সৈকত আলীর প্রেমে পড়েন। তাদের প্রেম সম্পর্কের গভীরতায় এক সময় নিজেকে হারিয়ে ফেলেন সৈকত আলীর‌ কুচক্র বুদ্ধির নিকট এবং তার ‌ফলশ্রুতিতে তার শরীরে দেখা দেয় প্রাকৃতিক চির সত্যের রুপ। কেটে যায় তার প্রেমের ঘোর। অনেক অনুনয় বিনয় কাকুতি মিনতি করেন প্রেমিক সৈকত আলীকে, কিন্তু সৈকত আলীর মন গলাতে পারলেও তিনি পারেননি তার পরিবারের মন গলাতে। ফলে দিনের পর দিন ধর্না দিতে দিতে ২০ সেপ্টেম্বর মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জন্ম দেন ‌ ফুটফুটে এক নিষ্পাপ পুত্র সন্তান। মা তার নাম রেখেছেন নয়ন বাবু।

ভুক্তভোগী এই মা (কুমারী মাতা) অভিযোগ করে বলেন, প্রথমতঃ তার অবুঝ মনের সাথে প্রতারনা করেছেন প্রেমিকরুপী সৈকত আলী। তাকে বিয়ের প্রলোভন‌ দেখিয়ে জোরপুর্বক ধর্ষন করেছেন। তখন তিনি বারবার ছুটে গেছেন সৈকত ও তার পরিবারের কাছে। সৈকতের পরিবারের লোকজনও তার সাথে প্রতারনা করে চালাকির আশ্রয় নিয়েছেন। তারা তাকে বুঝিয়েছিলেন গর্ভে সন্তান থাকা অবস্থায় বিবাহ জায়েজ নয়। সন্তান প্রসব হবার পর তাকে বউ করে ঘরে নিবেন, কিন্তু এখন তারা এ সন্তানকে অস্বীকার করছেন। দিনমজুর পিতার কন্যা হয়ে প্রভাবশালী সৈকত ও তার পরিবারের সাথে আইনী লড়াইয়ের মনোবল রাখলেও হয়ে পড়েছেন নানা শংকায় শংকিত এই পরিবার। তিনি আরো জানান, হাসপাতালে তার সন্তানকে প্রানে মারাসহ চুরির ষড়যন্ত্র করেছিল সৈকত এবং তার পরিবারের লোকজন। তারা তাতে সফল হতে পারেনি। সিস্টাররা তাকে আগলে রেখেছিলেন। সৈকতের লোকজনের কারনে তাকে হাসপাতাল থেকে ৫দিনের মাথায় ছুটি দেন। তার সন্তান প্রসবের ১৩দিন চলছে। প্রসুতিকালীন সময় অতিবাহিত হলে মামলার প্রস্তুতি নেবেন। তবে বিষয়টি তিনি থানায় মৌখিক জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।অভিযুক্ত সৈকতের খোঁজে তার বসতবাড়ীতে গিয়ে না পাওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায় নাই। সৈকতের মা সাজেদা বেগম সৈকতের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবী করেন। সৈকতের বাবা মোতালেব মিয়ার সাথে কথা হয় তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চাতালে। তিনি তার ছেলের বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন। এসময় সৈকতের এক নিকট আত্নীয় অহমিকার সাথে বলেন, তারা এই এলাকার মানুষের বিচার করেন। তাদের বিচার কে করবে ? ওই মেয়ে মামলা করলে তারা দেখে নেবেন‌ আদালতে। সৈকতের বাড়ির পাশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দার বলেন, এলাকায় ইতোমধ্যে প্রভাবশালী সৈকতের পরিবার সৈকতকে বিবাহ দিয়ে আত্নগোপন করে রেখেছেন। তারা সৈকতকে বিদেশে পাঠিয়ে‌ দেওয়ার পায়তারা চালাচ্ছেন। বালারহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত রতন বলেন, মেয়েটির ঘটনা দুঃখজনক। তার দাবী এবং অভিযোগ সত্য হলে দায়ীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হওয়া দরকার‌। পাশাপাশি সমাজে যেন এ ধরনের ঘটনা আর না হয় সেদিকে সচেতন সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান‌ দৈনিক আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, তথ্য স্পর্শ কাতর তাই অতি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে‌ পাশাপাশি ভিকটিম যাতে সঠিক আইনগত সহায়তা পায় তার ব্যবস্থা মিঠাপুকুর থানা পুলিশ প্রশাসন গ্রহণ করবে।