হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) বা নারীদের জরায়ুর মুখে ক্যান্সার প্রতিরোধে সারাদেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচীতে পটুয়াখালীতে ৮২ হাজার কিশোরীকে এক ডোজ করে টিকা প্রদানের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ।
বুধবার (৯ অক্টোবর) সকালে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা সমন্বয় কমিটির প্রস্তুতি সভায় কমিটির সদস্য সচিব ও সিভিল সার্জন ডাক্তার কবির হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৫,০০০ জন নারী মারা যায়। তবে, জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এক ডোজ এইচপিভি টিকাই যথেষ্ট। তাই সরকার কয়েকটি দাতা সংস্থার সহযোগিতায় আগে ঢাকা বিভাগে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে এইচপিভি টিকাদান সম্পন্ন করেছে। এখন দেশের ৭টি বিভাগ চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর, ও সিলেটে এক যোগে শুরু হতে যাচ্ছে। আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে পরবর্তী তিন সপ্তাহ এই কর্মসূচি চলবে। এই কর্মসূচি বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছাত্রী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের এই টিকা বিনামুল্যে প্রদান করা হবে।
তিনি আরও বলেন, টিকার জন্য নিবন্ধন করতে বা এইচপিভি টিকা সম্পর্কে আরও জানতে www.vaxepi.gov.bd ভিজিট করতে হবে। নিবন্ধনের জন্য অনলাইন জন্মনিবন্ধন থাকতে হবে। ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছাত্রী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের জন্মনিবন্ধন না থাকলে জরুরি ভিত্তিতে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। নিবন্ধনের পরে টিকা কার্ড প্রিন্ট করে নির্ধারিত কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে।
সিভিল সার্জন বলেন, হিউম্যান পাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা মেয়েদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এই টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত, নিরাপদ ও কার্যকর।
সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক জুয়েল রানা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক যাদব সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজেদুল ইসলামসহ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক, সহকারী শিক্ষা অফিসার, সহকারী সমাজসেবা অফিসার, জেলা মহিলা বিষয়ক কমকর্তা, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক, প্রাণী সম্পদ বিভাগের প্রতিনিধি, জেলা সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা, ইউনিসেফ, জেলা পরিষদ ও পৌরসভার প্রতিনিধিরা এবং যুব সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার ভূপেন চন্দ্র মন্ডল, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস সংক্রমণ ও প্রতিরোধে বিস্তারিত তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করেন।
কর্মসূচী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা ব্যাপী বহুমুখী প্রচারণা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সমন্বয় কমিটি।