ঢাকা ০৫:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পয়োবর্জ্যের কারণে গুলশান বনানী লেকে মাছের চাষ হয় না

গুলশান, বনানী ও বারিধারা লেকে মাছের চাষ করা যাচ্ছে না। এখানে মশার চাষ হচ্ছে। কারণ প্রতিটি বাড়ি পয়োবর্জ্যের লাইন সরাসরি লেকের ভিতর পড়ছে। ঢাকা শহরে পানি দূষণের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পয়োবর্জ্য।

সোমবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে বায়ু ও প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

সেমিনারের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমুদা খাতুন সেমিনারটি পরিচালনা করেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক সৈয়দ ইউসুফ সাদাত।

মেয়র আতিকুল বলেন, প্রতিটি বাড়িতে ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসিয়ে বর্জ্য পরিশোধন করে পানি ছাড়ার অনুরোধ থাকবে। এর জন্য খুব বেশি খরচ হয় না। আমি আমার বাড়িতে এটা বসিয়েছি। ঢাকা শহরের প্রতিটি বাড়িতে করা যেতে পারে। আমাদের কাছে মডেল আছে, আপনারা নিতে পারেন। ১০ লাখ টাকা খরচ করে জেনারেটর বসাতে পারলে, কেন আপনার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসাতে পারেন না?  রাজউকের সাথেও এ বিষয়ে কথা হয়েছে। ভবিষ্যতে এটা বাস্তবায়ন করতে হবে। সবার এগিয়ে আসতে হবে।

বায়ু দূষণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজধানীর বায়ু দূষণের জন্য ঢাকা শহরের আশপাশের ইটভাটা সবচেয়ে বেশি দায়ী। এটা প্রমাণিত। ৫৬ শতাংশ বায়ু দূষণ হয় ইট ভাটার মাধ্যমে। ইটের ভাটা বন্ধ করে কংক্রিটের ইট বা ব্লক ব্যবহার করতে হবে। রোড ডাস্টের মাধ্যমে দূষণ হয় ১৮ শতাংশ, এটা কমাতে কাজ করছি। এছাড়া যানবাহন থেকে ১০ শতাংশ দূষণ হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। ব্যক্তিগত পরিবহন কমিয়ে স্কুলবাসে ছাত্র-ছাত্রী পরিবহনের উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা যদি এটা বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে ঢাকায় বায়ু দূষণ ও যানজট দুটোই কমে যাবে।

অন্য দিকে বায়ুদূষণ প্রসঙ্গে এফবিবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন বলেন, রাজধানীর বায়ু দূষণের প্রধান কারণ হচ্ছে ঢাকা শহরের আশপাশের ইটের ভাটা। রাজধানীর বায়ু দূষণের জন্য ঢাকা শহরের আশপাশে ইটভাটা সবচেয়ে বেশি দায়ী। আর একটি বিষয় উন্মুক্তভাবে নির্মাণ কাজ করা। বিদেশে উন্মুক্তভাবে বালি বা মাটি রাখতে কিংবা সরবরাহ করতে পারে না। কিন্তু আমাদের দেশে ওই ব্যবস্থা নেই।

তিনি বলেন, কংক্রিট ইটে খরচ ও দূষণের পরিমাণ কমে যাবে। সেজন্য কংক্রিট ইটের কাঁচামালকে বিশেষ সুবিধা দিতে পারে এনবিআর। বর্তমানে ৬৯ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। আমাদের প্রস্তাব ছিল কাঁচামাল হিসাবে ৩ এমএম পাথরে ৫ শতাংশ শুল্ক করা। তাহলে ৫ থেকে ৭ টাকায় কংক্রিট ইট পাওয়া যাবে; যা সাধারণ ইটের চেয়ে ভালো। এটাকে প্রমোট করা দরকার।  এখন যারা কংক্রিটের ইট বানাচ্ছে, তাদের দাম বেশি পড়ে। তাই জনপ্রিয় হয় না। জনপ্রিয় পণ্য হওয়ার জন্য দাম বড় ভূমিকা রাখে। সেজন্য উৎপাদন খরচ কমাতেই হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পয়োবর্জ্যের কারণে গুলশান বনানী লেকে মাছের চাষ হয় না

আপডেট সময় ০৪:৫৭:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০২২

গুলশান, বনানী ও বারিধারা লেকে মাছের চাষ করা যাচ্ছে না। এখানে মশার চাষ হচ্ছে। কারণ প্রতিটি বাড়ি পয়োবর্জ্যের লাইন সরাসরি লেকের ভিতর পড়ছে। ঢাকা শহরে পানি দূষণের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পয়োবর্জ্য।

সোমবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে বায়ু ও প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

সেমিনারের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমুদা খাতুন সেমিনারটি পরিচালনা করেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক সৈয়দ ইউসুফ সাদাত।

মেয়র আতিকুল বলেন, প্রতিটি বাড়িতে ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসিয়ে বর্জ্য পরিশোধন করে পানি ছাড়ার অনুরোধ থাকবে। এর জন্য খুব বেশি খরচ হয় না। আমি আমার বাড়িতে এটা বসিয়েছি। ঢাকা শহরের প্রতিটি বাড়িতে করা যেতে পারে। আমাদের কাছে মডেল আছে, আপনারা নিতে পারেন। ১০ লাখ টাকা খরচ করে জেনারেটর বসাতে পারলে, কেন আপনার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসাতে পারেন না?  রাজউকের সাথেও এ বিষয়ে কথা হয়েছে। ভবিষ্যতে এটা বাস্তবায়ন করতে হবে। সবার এগিয়ে আসতে হবে।

বায়ু দূষণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজধানীর বায়ু দূষণের জন্য ঢাকা শহরের আশপাশের ইটভাটা সবচেয়ে বেশি দায়ী। এটা প্রমাণিত। ৫৬ শতাংশ বায়ু দূষণ হয় ইট ভাটার মাধ্যমে। ইটের ভাটা বন্ধ করে কংক্রিটের ইট বা ব্লক ব্যবহার করতে হবে। রোড ডাস্টের মাধ্যমে দূষণ হয় ১৮ শতাংশ, এটা কমাতে কাজ করছি। এছাড়া যানবাহন থেকে ১০ শতাংশ দূষণ হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। ব্যক্তিগত পরিবহন কমিয়ে স্কুলবাসে ছাত্র-ছাত্রী পরিবহনের উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা যদি এটা বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে ঢাকায় বায়ু দূষণ ও যানজট দুটোই কমে যাবে।

অন্য দিকে বায়ুদূষণ প্রসঙ্গে এফবিবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন বলেন, রাজধানীর বায়ু দূষণের প্রধান কারণ হচ্ছে ঢাকা শহরের আশপাশের ইটের ভাটা। রাজধানীর বায়ু দূষণের জন্য ঢাকা শহরের আশপাশে ইটভাটা সবচেয়ে বেশি দায়ী। আর একটি বিষয় উন্মুক্তভাবে নির্মাণ কাজ করা। বিদেশে উন্মুক্তভাবে বালি বা মাটি রাখতে কিংবা সরবরাহ করতে পারে না। কিন্তু আমাদের দেশে ওই ব্যবস্থা নেই।

তিনি বলেন, কংক্রিট ইটে খরচ ও দূষণের পরিমাণ কমে যাবে। সেজন্য কংক্রিট ইটের কাঁচামালকে বিশেষ সুবিধা দিতে পারে এনবিআর। বর্তমানে ৬৯ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। আমাদের প্রস্তাব ছিল কাঁচামাল হিসাবে ৩ এমএম পাথরে ৫ শতাংশ শুল্ক করা। তাহলে ৫ থেকে ৭ টাকায় কংক্রিট ইট পাওয়া যাবে; যা সাধারণ ইটের চেয়ে ভালো। এটাকে প্রমোট করা দরকার।  এখন যারা কংক্রিটের ইট বানাচ্ছে, তাদের দাম বেশি পড়ে। তাই জনপ্রিয় হয় না। জনপ্রিয় পণ্য হওয়ার জন্য দাম বড় ভূমিকা রাখে। সেজন্য উৎপাদন খরচ কমাতেই হবে।