ঢাকা ০৭:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রামপুরায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছিল স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ

ঢাকা: রাজধানীর পূর্ব রামপুরা তিতাস রোডের একটি বাসা থেকে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা দুজন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছেন স্বজনরা।

বুধবার (২৬ জুলাই) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করে পুলিশ।

এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে পূর্ব রামপুরা তিতাস রোডের একটি টিনশেড ঘর থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

এরা হলেন দিনমজুর জুয়েল (২৮) ও তার স্ত্রী গৃহপরিচারিকা নাসরিন আক্তার (২২)।

স্বজনরা জানান, জুয়েলের বাড়ি কুড়িগ্রামে। তার বাবার নাম আজাদুর খন্দকার। আর নাসরিনের বাড়ি কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায়। তার বাবার নাম সিদ্দিকুর রহমান। সাড়ে ৩ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তাদের একটি সন্তান হলেও ৯-১০ মাস আগে সে সন্তান মারা যায়।

মৃত নাসরিনের বড় ভাই টিটু মিয়া জানান, ৮-৯ মাস ধরে পূর্ব রামপুরার তিতাস রোডে নোয়াখালী বাড়িতে ভাড়া থাকতেন জুয়েল ও নাসরিন। পাশাপাশি ঘরে ভাড়া থাকেন টিটু মিয়া। গত এক সপ্তাহ ধরে নাসরিন জ্বরে ভুগছিলেন।

তিনি জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে তিনি কাজ থেকে বাসায় ফেরেন। তখন তার স্ত্রী ও মেয়ের কাছে জানতে পারেন, দুপুরের পর থেকে নাসরিন এবং জুয়েলকে তাদের রুমের দরজা খুলতে দেখেননি তারা। রান্না করতেও দেখেননি। তখন টিটু মিয়া তাদের ডাকাডাকি করেন। তবে কোনো সাড়া না পেয়ে বাড়িওয়ালার মাধ্যমে কৌশলে তাদের রুমের দরজা খুলেন। এরপর ভেতরে ঢুকে দেখেন একটি ফ্যানের সঙ্গে দুইটি ওড়না বেঁধে জুয়েল ও নাসরিন গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন। সঙ্গে সঙ্গে তারা থানায় খবর দেন।

পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এরপর  সিআইডির টিম আসে। তারাই ঝুলন্ত অবস্থা থেকে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

টিটু মিয়া আরও জানান, নাসরিন অন্যের বাসায় কাজ করতেন। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ১ সপ্তাহ ধরে কাজে যেতে পারছিলেন না। জুয়েলের হাতেও কোনো কাজকর্ম না থাকায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে তারা দুজন আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা তাদের।

এদিকে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৩টার দিকে পূর্ব রামপুরা তিতাস রোডের ১৮৩/৩ নম্বর ওই টিনশেড বাসা থেকে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি জানান, আর্থিক অভাব অনটনের কারণে স্বামী-স্ত্রী একই ফ্যানের সঙ্গে আলাদা দুটি ওড়না বেঁধে গলার ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে ঘটনাটি আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রামপুরায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছিল স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ

আপডেট সময় ১১:০৭:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০২৩

ঢাকা: রাজধানীর পূর্ব রামপুরা তিতাস রোডের একটি বাসা থেকে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা দুজন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছেন স্বজনরা।

বুধবার (২৬ জুলাই) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করে পুলিশ।

এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে পূর্ব রামপুরা তিতাস রোডের একটি টিনশেড ঘর থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

এরা হলেন দিনমজুর জুয়েল (২৮) ও তার স্ত্রী গৃহপরিচারিকা নাসরিন আক্তার (২২)।

স্বজনরা জানান, জুয়েলের বাড়ি কুড়িগ্রামে। তার বাবার নাম আজাদুর খন্দকার। আর নাসরিনের বাড়ি কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায়। তার বাবার নাম সিদ্দিকুর রহমান। সাড়ে ৩ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তাদের একটি সন্তান হলেও ৯-১০ মাস আগে সে সন্তান মারা যায়।

মৃত নাসরিনের বড় ভাই টিটু মিয়া জানান, ৮-৯ মাস ধরে পূর্ব রামপুরার তিতাস রোডে নোয়াখালী বাড়িতে ভাড়া থাকতেন জুয়েল ও নাসরিন। পাশাপাশি ঘরে ভাড়া থাকেন টিটু মিয়া। গত এক সপ্তাহ ধরে নাসরিন জ্বরে ভুগছিলেন।

তিনি জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে তিনি কাজ থেকে বাসায় ফেরেন। তখন তার স্ত্রী ও মেয়ের কাছে জানতে পারেন, দুপুরের পর থেকে নাসরিন এবং জুয়েলকে তাদের রুমের দরজা খুলতে দেখেননি তারা। রান্না করতেও দেখেননি। তখন টিটু মিয়া তাদের ডাকাডাকি করেন। তবে কোনো সাড়া না পেয়ে বাড়িওয়ালার মাধ্যমে কৌশলে তাদের রুমের দরজা খুলেন। এরপর ভেতরে ঢুকে দেখেন একটি ফ্যানের সঙ্গে দুইটি ওড়না বেঁধে জুয়েল ও নাসরিন গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন। সঙ্গে সঙ্গে তারা থানায় খবর দেন।

পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এরপর  সিআইডির টিম আসে। তারাই ঝুলন্ত অবস্থা থেকে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

টিটু মিয়া আরও জানান, নাসরিন অন্যের বাসায় কাজ করতেন। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ১ সপ্তাহ ধরে কাজে যেতে পারছিলেন না। জুয়েলের হাতেও কোনো কাজকর্ম না থাকায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে তারা দুজন আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা তাদের।

এদিকে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৩টার দিকে পূর্ব রামপুরা তিতাস রোডের ১৮৩/৩ নম্বর ওই টিনশেড বাসা থেকে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি জানান, আর্থিক অভাব অনটনের কারণে স্বামী-স্ত্রী একই ফ্যানের সঙ্গে আলাদা দুটি ওড়না বেঁধে গলার ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে ঘটনাটি আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।