ঢাকা ০২:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফি জমা দেওয়ার পরেও রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় বিপাকে নাঈম

জামালপুরের ইসলামপুরে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দেওয়ার পরেও রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নাঈম ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী। সে উপজেলার সিরাজাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

ওই বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী ও প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বের অবহেলার কারণে রেজিস্ট্রেশন হয়নি দাবি ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকের।

এ ঘটনায় বুধবার (৫ জুলাই) দুপুরে উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক।

তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি ওই শিক্ষার্থী ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হওয়ায় তার রেজিস্ট্রেশন হয়নি।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, গত বছরে নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন করার জন্য বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুল জব্বারের নিকট ফি জমা দেয় শিক্ষার্থী নাঈম ইসলাম।

কিন্তু সেই টাকা আব্দুল জব্বার নিজের কব্জায় রেখে দেওয়ায় রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়নি নাঈম ইসলামের। এতে ২০২৪ সালের অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না সে।

শিক্ষার্থী নাঈম ইসলামের পিতা সামিউল হক বলেন, আমি দিনমজুর। অতি কষ্টে আমার পুত্র নাঈমকে লেখাপড়া করাইতেছি। আমার ছেলে নাঈম ইসলাম সিরাজাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে মানবিক বিভাগের দশম শ্রেণী ছাত্র তার ক্লাস রোল ১০৭।

বিদ্যালয়ের সকল প্রকার বেতন, পরীক্ষার ফি ও যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করা পূর্বক আমার ছেলে নিয়মিতভাবে প্রত্যেকটি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়া আসিতেছে। হঠাৎ জানতে পারলাম আমার ছেলের নবম শ্রেণীর রেজিস্ট্রেশন হয় নাই।

বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুল জব্বার দুইবার আমার নিকট থেকে টাকা নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে আমার ছেলের নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন না করিয়ে টাকা নিয়ে দশম শ্রেণির প্রবেশপত্র দিয়ে, টেস্ট পরীক্ষা অংশগ্রহণ করালো। আমার ছেলের জীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে গেল এর বিচার কে করবে? তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন তিনি।

শিক্ষার্থী নাঈম ইসলাম বলেন, আমি নিয়মিত ক্লাস করেছি। নবম শ্রেণির প্রত্যেকটি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি। দশম শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষাও দিয়েছি। এখন আমি জানতে পারি আমার নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন হয়নি।

এবিষয়ে সিরাজাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুল জব্বার বলেন, ওই শিক্ষার্থী ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাছাড়াও এত শিক্ষার্থীর ভিতরে সে কিভাবে দশম শ্রেণির টেস্ট পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে আমার জানা নেই বলে তিনি পাশ কাটিয়ে যান।

তবে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষার্থী থাকায় দেখে দেখে স্বাক্ষর করা সম্ভব হয় না। ২০২২ সালে নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। তার পরেও বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখবো।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, রেজিস্ট্রেশন, ফরম ফিলাপ এটা বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এখতিয়ার। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। তার পরেও বিষয়টি খোঁজখবর নিব।

তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু. তানভীর হাসান রুমানের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ফি জমা দেওয়ার পরেও রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় বিপাকে নাঈম

আপডেট সময় ০৮:৫০:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুলাই ২০২৩

জামালপুরের ইসলামপুরে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দেওয়ার পরেও রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নাঈম ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী। সে উপজেলার সিরাজাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

ওই বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী ও প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বের অবহেলার কারণে রেজিস্ট্রেশন হয়নি দাবি ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকের।

এ ঘটনায় বুধবার (৫ জুলাই) দুপুরে উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক।

তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি ওই শিক্ষার্থী ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হওয়ায় তার রেজিস্ট্রেশন হয়নি।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, গত বছরে নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন করার জন্য বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুল জব্বারের নিকট ফি জমা দেয় শিক্ষার্থী নাঈম ইসলাম।

কিন্তু সেই টাকা আব্দুল জব্বার নিজের কব্জায় রেখে দেওয়ায় রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়নি নাঈম ইসলামের। এতে ২০২৪ সালের অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না সে।

শিক্ষার্থী নাঈম ইসলামের পিতা সামিউল হক বলেন, আমি দিনমজুর। অতি কষ্টে আমার পুত্র নাঈমকে লেখাপড়া করাইতেছি। আমার ছেলে নাঈম ইসলাম সিরাজাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে মানবিক বিভাগের দশম শ্রেণী ছাত্র তার ক্লাস রোল ১০৭।

বিদ্যালয়ের সকল প্রকার বেতন, পরীক্ষার ফি ও যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করা পূর্বক আমার ছেলে নিয়মিতভাবে প্রত্যেকটি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়া আসিতেছে। হঠাৎ জানতে পারলাম আমার ছেলের নবম শ্রেণীর রেজিস্ট্রেশন হয় নাই।

বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুল জব্বার দুইবার আমার নিকট থেকে টাকা নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে আমার ছেলের নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন না করিয়ে টাকা নিয়ে দশম শ্রেণির প্রবেশপত্র দিয়ে, টেস্ট পরীক্ষা অংশগ্রহণ করালো। আমার ছেলের জীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে গেল এর বিচার কে করবে? তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন তিনি।

শিক্ষার্থী নাঈম ইসলাম বলেন, আমি নিয়মিত ক্লাস করেছি। নবম শ্রেণির প্রত্যেকটি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি। দশম শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষাও দিয়েছি। এখন আমি জানতে পারি আমার নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন হয়নি।

এবিষয়ে সিরাজাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুল জব্বার বলেন, ওই শিক্ষার্থী ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাছাড়াও এত শিক্ষার্থীর ভিতরে সে কিভাবে দশম শ্রেণির টেস্ট পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে আমার জানা নেই বলে তিনি পাশ কাটিয়ে যান।

তবে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষার্থী থাকায় দেখে দেখে স্বাক্ষর করা সম্ভব হয় না। ২০২২ সালে নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। তার পরেও বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখবো।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, রেজিস্ট্রেশন, ফরম ফিলাপ এটা বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এখতিয়ার। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। তার পরেও বিষয়টি খোঁজখবর নিব।

তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু. তানভীর হাসান রুমানের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।