ঢাকা ১০:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুনারুঘাটে ভারত – বাংলাদেশের সম্প্রীতির ম্যাচ

প্রথমবারের মতো চুনারুঘাটের ডিসিপি হাইস্কুল মাঠে বিদেশ থেকে আসা কোনো দলের সঙ্গে ফুটবল ম্যাচ খেলল ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমি।

রোববার (২ জুলাই) বিকেল ০৪ ঘটিকায় প্রায় ১০ সহস্রাধিক দর্শকের উপস্থিতিতে ম্যাচটি শুরু হয়। ৯০ (নব্বই) মিনিট শেষে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাশহর এলাকার গিয়াস ফুটবল একাডেমি ও ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমির মধ্যকার ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়। তবে সবকিছু ছাপিয়ে মাঠে ব্রাজিলের ফুটবল তারকা নেইমারের বন্ধু বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবের রবিন মিয়ার উপস্থিতি সকলের আকর্ষণ কেড়েছে।

এ সময় রবিন মিয়া দর্শকদের উদ্দেশে তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ঈদের দুই দিন আগে আমি বাংলাদেশে এসেছি। আমি কখনো ভাবতে পারিনি এরকম একটি পরিবেশে আমি আসব। আপনাদের উপস্থিতি দেখে আমি আমার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। সিলেটের একটি লোকাল এলাকায় ফুটবল খেলা দেখতে এত মানুষ জড়ো হয়েছেন।

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের প্রশংসা করে রবিন মিয়া বলেন, আমি ব্যারিস্টার সুমনকে ধন্যবাদ জানাই এজন্য যে, নিজের পেশা ফেলে রেখে তিনি ফুটবলের জন্য মন থেকে কাজ করছেন। নেইমার, মেসি, রোনালদো পুরো বিশ্বের জন্য স্টার। তেমনই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্টার হলেন আমাদের ব্যারিস্টার সুমন ভাই। আমি সর্বপ্রথম একজন বাঙালি। আমি অনেক বছর যাবত নেইমারের সঙ্গে কাজ করছি। সে আমার খুব কাছের বন্ধু। তার পরিবারের খুব কাছের একজন হিসেবে আমাকে আদর করে।

রবিন মিয়া আরও বলেন, ল্যাটিন আমেরিকার ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ের অনেকগুলো ক্লাবের সঙ্গে আমি জড়িত। বাংলাদেশের কোনো খেলোয়াড় যদি ল্যাটিন আমেরিকাতে প্রয়োজন হয়, তাহলে আমার দুয়ার সব সময় খোলা থাকবে। যদি ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমি থেকে দক্ষ খেলোয়াড় বের হয়, তার জন্য আমি নিজে যোগাযোগ করবো।

এ সময় ব্যারিস্টার সুমনকে উপহার হিসেবে নেইমারের সিগনেচার সম্বলিত একটি ব্রাজিলের জার্সি ও তার ফুটবল একাডেমির জন্য ২ লাখ টাকা আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন।

এ সময় ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, যদি বেঁচে থাকি আগামী (৫) পাঁচ বছর পর চুনারুঘাট থেকে কেউ না কেউ ইউরোপিয়ান লিগে খেলবে। কেউ এটা ঠেকাতে পারবে না। বার্সেলোনা যেমন স্পেনের ফুটবলের রাজধানী, তেমনি চুনারুঘাটকে বাংলাদেশের ফুটবলের রাজধানী করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করতে শিখেছি। মোরসালিনের মতো ছেলে সাফ ফুটবলে কুয়েতের বিপক্ষে অসাধারণ খেলেছে। অথচ দুই মাস আগে ফরিদপুরের মাঠে এই মোরসালিনকে খেলতে দেয়নি।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আমি ৩০ হাজার আমের চারা রোপণের কথা বলছিলাম। ইতোমধ্যে ২৬ হাজার চারা চুনারুঘাটের বিভিন্ন জায়গায় দিয়ে দিয়েছি।

খেলা শুরুর আগে ভারতের গিয়াস ফুটবল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান গিয়াস উদ্দিন লাভলু বলেন, এটাকে দুই দেশের মধ্যে প্রীতি ম্যাচ বলব না। এটাকে আমি ঈদ মিলন উৎসব বলব। ফুটবলের মধ্য দিয়ে আমরা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করতেই এই ম্যাচের আয়োজন। গত নভেম্বর মাসে ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমি গিয়েছিল ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাশহরে। তারপরই আমি ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমির অনুকরণে একটি ফুটবল একাডেমি তৈরি করি। আজ যদি আমার টিম জয়ী হয় তাহলে আনন্দিত হব না। আবার যদি পরাজিতও হই তাহলেও দুঃখ পাব না। যদি কোনো বাংলাদেশি ভাই ভারতের ত্রিপুরায় গিয়ে বিপদে পড়েন, তাহলে আমরা তার পাশে থাকব।

গিয়াস উদ্দিন লাভলুর বক্তব্যের পর ব্যারিস্টার সুমন দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ব্যারিস্টার ফুটবল একাডেমি দেশের যেখানেই যায়, সেখানেই আমাদের টিমকে হাজার হাজার দর্শক সমর্থন দেন। আজ এই ভারতের টিমকে পুরো চুনারুঘাটবাসীকে সমর্থন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।

ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমি ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গিয়াস ফুটবল একাডেমির মধ্যে ম্যাচ দেখতে চুনারুঘাট ডিসিপি হাইস্কুল মাঠে প্রায় ১০ সহস্রাধিক দর্শক উপস্থিত ছিলেন। খেলার শুরুতে বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। এরপর দুই দলের খেলোয়াড়দের উত্তরীয় পরিয়ে দেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও গিয়াস উদ্দিন লাভলু। এ সময় চুনারুঘাট পৌরসভার মেয়র সাইফুর রহমান রুবেলসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ফুটবল খেলাটি উপভোগ করেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চুনারুঘাটে ভারত – বাংলাদেশের সম্প্রীতির ম্যাচ

আপডেট সময় ০৬:১৪:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুলাই ২০২৩

প্রথমবারের মতো চুনারুঘাটের ডিসিপি হাইস্কুল মাঠে বিদেশ থেকে আসা কোনো দলের সঙ্গে ফুটবল ম্যাচ খেলল ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমি।

রোববার (২ জুলাই) বিকেল ০৪ ঘটিকায় প্রায় ১০ সহস্রাধিক দর্শকের উপস্থিতিতে ম্যাচটি শুরু হয়। ৯০ (নব্বই) মিনিট শেষে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাশহর এলাকার গিয়াস ফুটবল একাডেমি ও ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমির মধ্যকার ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়। তবে সবকিছু ছাপিয়ে মাঠে ব্রাজিলের ফুটবল তারকা নেইমারের বন্ধু বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবের রবিন মিয়ার উপস্থিতি সকলের আকর্ষণ কেড়েছে।

এ সময় রবিন মিয়া দর্শকদের উদ্দেশে তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ঈদের দুই দিন আগে আমি বাংলাদেশে এসেছি। আমি কখনো ভাবতে পারিনি এরকম একটি পরিবেশে আমি আসব। আপনাদের উপস্থিতি দেখে আমি আমার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। সিলেটের একটি লোকাল এলাকায় ফুটবল খেলা দেখতে এত মানুষ জড়ো হয়েছেন।

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের প্রশংসা করে রবিন মিয়া বলেন, আমি ব্যারিস্টার সুমনকে ধন্যবাদ জানাই এজন্য যে, নিজের পেশা ফেলে রেখে তিনি ফুটবলের জন্য মন থেকে কাজ করছেন। নেইমার, মেসি, রোনালদো পুরো বিশ্বের জন্য স্টার। তেমনই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্টার হলেন আমাদের ব্যারিস্টার সুমন ভাই। আমি সর্বপ্রথম একজন বাঙালি। আমি অনেক বছর যাবত নেইমারের সঙ্গে কাজ করছি। সে আমার খুব কাছের বন্ধু। তার পরিবারের খুব কাছের একজন হিসেবে আমাকে আদর করে।

রবিন মিয়া আরও বলেন, ল্যাটিন আমেরিকার ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ের অনেকগুলো ক্লাবের সঙ্গে আমি জড়িত। বাংলাদেশের কোনো খেলোয়াড় যদি ল্যাটিন আমেরিকাতে প্রয়োজন হয়, তাহলে আমার দুয়ার সব সময় খোলা থাকবে। যদি ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমি থেকে দক্ষ খেলোয়াড় বের হয়, তার জন্য আমি নিজে যোগাযোগ করবো।

এ সময় ব্যারিস্টার সুমনকে উপহার হিসেবে নেইমারের সিগনেচার সম্বলিত একটি ব্রাজিলের জার্সি ও তার ফুটবল একাডেমির জন্য ২ লাখ টাকা আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন।

এ সময় ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, যদি বেঁচে থাকি আগামী (৫) পাঁচ বছর পর চুনারুঘাট থেকে কেউ না কেউ ইউরোপিয়ান লিগে খেলবে। কেউ এটা ঠেকাতে পারবে না। বার্সেলোনা যেমন স্পেনের ফুটবলের রাজধানী, তেমনি চুনারুঘাটকে বাংলাদেশের ফুটবলের রাজধানী করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করতে শিখেছি। মোরসালিনের মতো ছেলে সাফ ফুটবলে কুয়েতের বিপক্ষে অসাধারণ খেলেছে। অথচ দুই মাস আগে ফরিদপুরের মাঠে এই মোরসালিনকে খেলতে দেয়নি।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আমি ৩০ হাজার আমের চারা রোপণের কথা বলছিলাম। ইতোমধ্যে ২৬ হাজার চারা চুনারুঘাটের বিভিন্ন জায়গায় দিয়ে দিয়েছি।

খেলা শুরুর আগে ভারতের গিয়াস ফুটবল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান গিয়াস উদ্দিন লাভলু বলেন, এটাকে দুই দেশের মধ্যে প্রীতি ম্যাচ বলব না। এটাকে আমি ঈদ মিলন উৎসব বলব। ফুটবলের মধ্য দিয়ে আমরা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করতেই এই ম্যাচের আয়োজন। গত নভেম্বর মাসে ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমি গিয়েছিল ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাশহরে। তারপরই আমি ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমির অনুকরণে একটি ফুটবল একাডেমি তৈরি করি। আজ যদি আমার টিম জয়ী হয় তাহলে আনন্দিত হব না। আবার যদি পরাজিতও হই তাহলেও দুঃখ পাব না। যদি কোনো বাংলাদেশি ভাই ভারতের ত্রিপুরায় গিয়ে বিপদে পড়েন, তাহলে আমরা তার পাশে থাকব।

গিয়াস উদ্দিন লাভলুর বক্তব্যের পর ব্যারিস্টার সুমন দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ব্যারিস্টার ফুটবল একাডেমি দেশের যেখানেই যায়, সেখানেই আমাদের টিমকে হাজার হাজার দর্শক সমর্থন দেন। আজ এই ভারতের টিমকে পুরো চুনারুঘাটবাসীকে সমর্থন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।

ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমি ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গিয়াস ফুটবল একাডেমির মধ্যে ম্যাচ দেখতে চুনারুঘাট ডিসিপি হাইস্কুল মাঠে প্রায় ১০ সহস্রাধিক দর্শক উপস্থিত ছিলেন। খেলার শুরুতে বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। এরপর দুই দলের খেলোয়াড়দের উত্তরীয় পরিয়ে দেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও গিয়াস উদ্দিন লাভলু। এ সময় চুনারুঘাট পৌরসভার মেয়র সাইফুর রহমান রুবেলসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ফুটবল খেলাটি উপভোগ করেন।