শিবচরে ঘনঘন লোডশেডিং এবং তাপদাহ চলমান থাকায় অতিষ্ট জনজীবন। বিশেষ করে রাতে বার বার বিদ্যুত চলে যাওয়ায় ঘুমে প্রচন্ড ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুত চলে গেলে তীব্র গরমে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।
আলাপকালে সাধারণ মানুষেরা জানান, ‘রাতে ঘুম আসতে না আসতেই বিদ্যুত চলে যায়। এক থেকে দেড় ঘন্টা পর এসে কিছুক্ষণ থেকেই আবার চলে যায়। এতে করে নিরবচ্ছিন্ন ঘুমে চরম ব্যাঘাত ঘটছে গত কয়েকদিন ধরে। ফলে শারীরিকভাবে অসুস্থ্য কাটে দিনের বেলায়।’
এদিকে সারাদিনেই নিয়ম করে বিদ্যুত চলে যাচ্ছে। গরমের তীব্রতা থাকায় বিদ্যুত না থাকলে জীবনযাত্রা ব্যহত হচ্ছে বলে জানান সাধারণ মানুষেরা।
স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব মো. ইকবাল নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘রাতে ঘুম ভেঙেছে বার বার। বিদ্যুত এসে কিছুক্ষণ থেকেই চলে যায়। আর গরমে ঘুম ভেঙে যায়। এভাবে সারারাত কেটেছে।
শরীর ভীষন অসুস্থ্য লাগছে। একদিকে প্রচন্ড গরম, অন্যদিকে বিদ্যুত না থাকায় জনজীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠছে।’ স্থানীয় স্কুল শিক্ষক মো. মোতালেব মিয়া জানান, ‘বিদ্যুত না থাকলে শ্রেণি কক্ষে বসে থাকাই কষ্টকর হয়ে উঠে। প্রচন্ড গরমে ছেলেমেয়েরা অস্থিরতা বোধ করে। পাঠদান ব্যহত হয়।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গরমের তীব্রতায় চরম দুর্ভোগে পড়ে শ্রমজীবী মানুষেরা। অসুস্থ্ হয়ে পড়ছেন অনেকেই। গরমের মধ্যে বিদ্যুত না থাকলে দুর্ভোগ হয় আরও তীব্রতর। দিনরাত মিলিয়ে একটানা দেড় ঘন্টাও বিদ্যুত থাকছে না। ফলে দুর্ভোগ বাড়ছে। স্থানীয় বিভিন্ন মিল-কারখানায় ব্যহত হচ্ছে উৎপাদন। বিপনী বিতানগুলোও থাকছে ক্রেতাশূন্য।
বিদ্যুত বিভ্রাটের কারণে চার্জার ফ্যান ও আইপিএস বিক্রি বেড়েছে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি সৌর বিদ্যুতের প্যানেল বিক্রিও বেড়েছে। এদিকে চার্জার ফ্যানের দাম বেশি বলে জানান ক্রেতারা।
তবে বিক্রেতারা বলছেন, ‘পাইকারি বাজারে ফ্যানের দাম আগে থেকেই বেশি। ইদানিং নানা সাইজের চার্জার ফ্যান বিক্রি বেড়ে গেছে। একই সাথে চার্জার ফ্যানের ব্যাটারিও বিক্রি হচ্ছে।’
উপজেলা পল্লী বিদ্যুত অফিস সূত্রে জানা গেছে, উৎপাদন কমে যাওয়ায় চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হচ্ছে। একারণেই ঘন ঘন লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।
পল্লী বিদ্যুতের শিবচর উপজেলার ডিজিএম মো. মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘পায়রা বিদ্যুতকেন্দ্রের উৎপাদন প্রায় বন্ধের পথে। আমাদের শিবচরে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে পাচ্ছি মাত্র ৮ মেগাওয়াট। এই অবস্থায় লোডশেডিং দেয়া ছাড়া কোন উপায় নাই।’