বগুড়ার রাজাবাজারে দোকান ঘরের মালিকানা নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বিকাল তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে ভোগা নামে এক ব্যক্তি ছুরিকাহত হয়েছে। এছাড়াও মারপিটের এক পর্যায়ে ককটেল বিস্ফোরণের আওয়াজে ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা গেছে, রাজাবাজারে দশ শতক জায়গার উপর একটি দোকান রয়েছে। সেই দোকানের জায়গা ২০০৯ সালে দয়াল ভান্ডার নামে আব্দুর রহমান রুনু বাংলাদেশ জুট করপোরেশন থেকে ইজারা নেন। ইজারা নেয়ার পর থেকেই এখলাছুর রহমান দিং নামে এক ব্যক্তি ওই জায়গাকে নিজেদের পৈত্রিক সম্পত্তি দাবি করেন। পরে এই জায়গা নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে মামলা মোকদ্দমা চলতে থাকে। এমনকি এ জায়গার মালিকানা নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন(পিবিআই) আদালতের নির্দেশে তদন্তও করে।
তদন্তে আব্দুর রহমান রুনু ওই জায়গা বাংলাদেশ জুট মিল থেকে ইজারা নিয়েছেন বলে ২০২১ সালে পিবিআই জানায়। তারপরেও ২০২১ সালের ১৪ নভেম্বর ওই দোকান ঘর এখলাছুর রহমান নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি দাবি করে দখল করে। এর মধ্যে রুনু ২০২২ সালের ১৬ জুন ইজারার চুক্তি ২০২৫ সাল পর্যন্ত নবায়ন করেন। তবুও দুই পক্ষের মধ্যে আবারও পাল্টাপাল্টি মামলা চলতে থাকে।
এক পর্যায়ে মঙ্গলবার(৪ এপ্রিল) দুপুরে ওই দোকান ঘরে যান রুনু। খবর পেয়ে এখলাছুর রহমান ও তার সমর্থকেরা বাজারে পৌছালে দুই গ্রুপের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটে। এসময় দুইটি ককটেল বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যায়। এছাড়াও চেলোপাড়া এলাকার বাসিন্দা ভোগা নামে এক ব্যক্তি ছুরিকাহত হন। তিনি বর্তমানে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ(শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আব্দুর রহমান রুনু বলেন, ‘আমি ২০০৯ সালে সরকারের কাছ থেকে ওই জায়গা লিজ নিয়ে দয়াল ভান্ডার নামে ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু এখলাছুর রহমান ভুয়া দলিল করে তারা ওই দোকান ঘরের জায়গা নিজেদের সম্পত্তি বলে দাবি করে। আজ আমার লিজ নেয়া জায়গায় আমি দোকান চালু করতে গেলে এখলাছুর রহমানের লোকজন আমাদের উপর মারপিট করেছে।’
এখলাছুর রহমানের ছেলে মুন বলেন, ‘ওই দোকানের জায়গা আমাদের বাপ-দাদার ক্রয়কৃত পৈত্রিক সম্পত্তি। আমাদের জায়গা রুনু অন্যায়ভাবে দখল করতে এসেছিল। আমরা বাধা দিলে তারা আমাদের উপর হামলা চালায়।’
বগুড়া রাজাবাজার আড়ৎদার ও ও সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, ‘একটা দোকান ঘরের জায়গা নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা চলছে। আজ সেই জায়গা নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে মারপিট এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই জায়গা নিয়ে প্রায়ই বাজারে ঝামেলার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতা ভুগছে।’
বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আলম বলেন,’ একটা জায়গা নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় অভিযোপ সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।