সৌদিআরবে গৃহকর্মীকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। দ্রুত তাকে উদ্ধার করতে ওই গৃহকর্মী তার পরিবারের কাছে ফোনে ভিডিওবার্তা পাঠিয়ে আকুতি জানিয়ে বলেন, আমি মাইরধর নির্যাতন সহ্য করতে পারছি না,আমাকে খাবার খেতে দেয় না। ফোনও নিয়ে গেছে। আমাকে উদ্ধার করো, দেশে আনার ব্যবস্থা করো।
সৌদিরআরব থেকে যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে কথাগুলো বলছিলেন গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদিতে যাওয়া হ্যাপি আক্তার নামে এক কিশোরী (১৬)। সংস্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়,হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার পৌর এলাকার বাসিন্দা ওই কিশোরীর স্থায়ী বাড়ি চুনারুঘাটে। গত ৮ অগাস্ট ২০২২ গৃহকর্মীর কাজ দিয়ে সৌদিতে পাঠায় ঢাকার ফকিরাপুলের গোল্ডেন এয়ার ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি রিক্রুটিং এজেন্সি যাদের লাইসেন্স নং এলএর ০৬৩২। এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার কিশোরীর পরিবার প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে কিশোরীকে উদ্ধারের জন্যে লিখিত আবেদন করেছেন। ওই আবেদন ও কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে,কিশোরী হ্যাপি কয়েকদিন আগে সৌদি থেকে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় সে জানায়,তাকে সৌদি আটকে রেখে নির্যাতন করছে। এ নির্যাতন তিনি সহ্য করতে পারছেন না। তাকে সেখান থেকে যেন দ্রুত বাচিয়ে আনা হয়। এ ফোন তার পরিবারে অশান্তি নেমে আসে। পরিবারের সদস্যরা যোগাযোগ করেন যে দালাল ও এজেন্সির সাথে।এজিন্সির লোকজন তাকে ফিরিয়ে আনতে ৩ লক্ষ টাকা দাবী করছেন।এখন ফোন দিলে ধরছেন না। নবদম্পতি হ্যাপির স্বামী মীর সোহাগ বলেন,এরা আমার নববিবাহিত স্ত্রীকে আটকে রেখে খুব কষ্ট দিচ্ছে।খাবার দেয় না।খুব মাইরধর করছে।ফোনও কেড়ে নিয়ে গেছে।সর্বশেষ একটি উদ্ধারের আকুতে নিয়ে একটা ভিডিও পাঠিয়েছিল।সে এখন প্রাননাশের ঝুকিতে আছে। যে কাজের কথা বলে নিয়ে যাওয়া হয়,সেই কাজ না দিয়ে নানা অন্য কাজে তাকে জড়িত করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে।এসব কারনে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সংস্লিষ্ট দপ্তরের কাছে একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মানবিক সাংবাদিক মুজাহিদ মসি বলেন, ‘মেয়েটি ভিনদেশে খুবই অসহায় হয়ে পড়েছে ।আমার এক সাংবাদিক বন্ধুর মাধ্যমে বিষয়টি জেনে উদ্ধারের সহযোগিতার জন্যে মন্ত্রনালয় ও সংস্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন ও যোগাযোগ করতে সহযোগিতা করি। মানবপাচার চক্রের বিরুদ্ধে লেখালেখির অভিজ্ঞতা থেকে এই অসহায় পরিবারের পাশে আছি। এ বিষয়ে গোল্ডেন এয়ার ইন্টারন্যাশনাল এর আকতার হোসেনের নামে এক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,মেয়েটির স্বামী আমাদের কাছে এসেছিল। তবে মেয়েটিকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারব না। আমার বসের সাথে কথা বলেন।পরে ওই কর্মকর্তার ফোনে শতাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন করেননি। কিশোরী মেয়েটিকে দ্রুত সুস্থ অবস্থায় দেশে ফিরিয়ে আনা ও দায়িত্বজ্ঞানহীন রিক্রুটিং এজেন্সিগুলার বিরুদ্ধে সরকারি নজরদারি জোরদার করার জন্য দাবি জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।