ঢাকা ০৩:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ক্ষমতার সান্নিধ্যে বিত্তবান সাবেক সচিব খাইরুল কুমিল্লায় হাসপাতাল দখলের অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে কেজি দরে বিআরটিসির বাস বিক্রি করে দিয়েছেন কর্মকর্তা দাউদকান্দি উপজেলা নবাগত ইউএন ও এসিল্যান্ড ভূমি ও পৌর প্রশাসক মো: জিয়াউর রহমান কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে পরিচিতি ও মতবিনিময় ভোলায় আজকের পত্রিকার পাঠক বন্ধুর উদ্যোগে মাদক বিরোধী র‌্যালি,সেমিনার ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নতুন ব্রিজ এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে পথচারী জমির দলিলের প্রলোভানা দিয়ে গ্রাম পুলিশের নির্দেশে সোনিয়া আক্তার নামে এক নারীকে নির্যাতন করে আমরা আর কোনো অবিচার চাই না’ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালককে বদলি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রংপুরে বিক্ষোভ

ইভিএম যেন গলার কাঁটা ইসির

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নির্বাচন কমিশনের জন্য গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। ইভিএম সংরক্ষণের বিষয়টি যেন ইসির গলায় কাটার মতো আটকে আছে। মাঠ কার্যালয়গুলো থেকে শহরে ভাড়া করা বাড়িতে ইভিএম সংরক্ষণ করার সমাধান হয়নি। 

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, বাড়ি ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ৫ হাজার স্কয়ার ফিটের ফ্লোর নেওয়ার জন্য। কিন্তু শহর অঞ্চলে সুবিধামত জায়গায় তা মিলছে না। কেননা, এতো বড় স্পেস নেই। আবার স্পেস মিললেও ভাড়া সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি। বিশেষ করে ঢাকায় এই সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। শেষমেশ শহরের বাইরে প্রয়োজনে দূরবর্তী এলাকায় বাড়ি ভাড়া করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত মাসিক সমন্বয় সভাতে আলোচনার পর সিদ্ধান্তটি এসেছে। ওই সভার কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে, সাধারণ সেবা শাখার উপসচিব জানান, জেলায় ইভিএম সংরক্ষণের জন্য গোডাউন ভাড়া করার লক্ষ্যে ইভিএম প্রকল্প হতে প্রাপ্ত সম্ভাব্য বাজেটসহ একটি তালিকা/স্পেসিফিকেশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। গোডাউন ভাড়া করার লক্ষ্যে রিভাইজড বাজেটে অর্থ সংস্থান রাখা হয়েছে।

তবে ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, মহানগর এলাকায় গণপূর্ত নির্ধারিত হারে গোডাউন ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। ঢাকার জেলা নির্বাচন অফিসার জানান, বর্তমানে ইভিএমসমূহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাখা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানরা বারবার ইভিএমগুলো ফেরত নেওয়ার জন্য তাগিদ দিচ্ছেন। এই অবস্থায়, ইভিএমগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে দ্রুত স্থানান্তর করা প্রয়োজন।

এসব আলোচনার পর বৈঠকের সভাপতি হিসেবে ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গণপূর্তের নির্ধারিত হারের মধ্যে গোডাউন ভাড়া করতে হবে। প্রয়োজনে মহানগরের দূরবর্তী এলাকায় গোডাউন অনুসন্ধান করা যেতে পারে।

এজন্য তিনি পরবর্তীতে ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিয়েছেন, ঢাকা অঞ্চলের ইভিএম সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনের মহানগর এলাকার বাইরে অথবা দূরবর্তী এলাকায় গোডাউন ভাড়ার ব্যবস্থা করার জন্য।

ইসির ইভিএম প্রকল্পের পরিচালক কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নেওয়া বর্তমান প্রকল্পের অধীন দেড় লাখ ইভিএম রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৮০ হাজার ইভিএম মাঠ পর্যায়ে রয়েছে বিভিন্ন নির্বাচনে ব্যবহারের পর। অবশিষ্ট ইভিএম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিতে (বিএমটিএফ) সংরক্ষিত আছে।

২০১৮ সালে তড়িঘড়ি করে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকার প্রকল্পটি নিয়েছিল কেএম নূরুল হুদার তৎকালীন কমিশন। সেই প্রকল্পে প্রতিটি ইভিএম দাম পড়েছিল দুই লাখ টাকা, যা সংরক্ষণের জন্য কোনো ব্যবস্থাই রাখা হয়নি। ফলে নির্বাচনের পর বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, স্থানীয় নির্বাচন কার্যালয়ে সংরক্ষণের ন্যূনতম সুবিধা ছাড়াই রাখা হয়েছে মেশিনগুলো। এতে ৩০ হাজারের মেশিন ব্যবহার অযোগ্যও হয়ে পড়েছিল।

কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের হাতে মেশিনগুলো দিয়ে ভোটগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এখনো কতগুলো মেশিন ব্যবহারযোগ্য আছে তার হিসেব নেই কমিশনের কাছে। বর্তমানে এ নিয়ে কাজ চলছে বলে জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে আগামী মার্চের মধ্যে কতটি মেশিন ব্যবহারযোগ্য তা জানা যাবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।

তিনি বলেন, বর্তমানে মেইনটেন্যান্সের কাজ চলছে। এরপর এগুলো আবার মাঠ পর্যায়ে প্লাস্টিকের বক্সে পাঠানো হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ক্ষমতার সান্নিধ্যে বিত্তবান সাবেক সচিব খাইরুল

ইভিএম যেন গলার কাঁটা ইসির

আপডেট সময় ০১:৫১:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নির্বাচন কমিশনের জন্য গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। ইভিএম সংরক্ষণের বিষয়টি যেন ইসির গলায় কাটার মতো আটকে আছে। মাঠ কার্যালয়গুলো থেকে শহরে ভাড়া করা বাড়িতে ইভিএম সংরক্ষণ করার সমাধান হয়নি। 

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, বাড়ি ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ৫ হাজার স্কয়ার ফিটের ফ্লোর নেওয়ার জন্য। কিন্তু শহর অঞ্চলে সুবিধামত জায়গায় তা মিলছে না। কেননা, এতো বড় স্পেস নেই। আবার স্পেস মিললেও ভাড়া সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি। বিশেষ করে ঢাকায় এই সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। শেষমেশ শহরের বাইরে প্রয়োজনে দূরবর্তী এলাকায় বাড়ি ভাড়া করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত মাসিক সমন্বয় সভাতে আলোচনার পর সিদ্ধান্তটি এসেছে। ওই সভার কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে, সাধারণ সেবা শাখার উপসচিব জানান, জেলায় ইভিএম সংরক্ষণের জন্য গোডাউন ভাড়া করার লক্ষ্যে ইভিএম প্রকল্প হতে প্রাপ্ত সম্ভাব্য বাজেটসহ একটি তালিকা/স্পেসিফিকেশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। গোডাউন ভাড়া করার লক্ষ্যে রিভাইজড বাজেটে অর্থ সংস্থান রাখা হয়েছে।

তবে ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, মহানগর এলাকায় গণপূর্ত নির্ধারিত হারে গোডাউন ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। ঢাকার জেলা নির্বাচন অফিসার জানান, বর্তমানে ইভিএমসমূহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাখা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানরা বারবার ইভিএমগুলো ফেরত নেওয়ার জন্য তাগিদ দিচ্ছেন। এই অবস্থায়, ইভিএমগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে দ্রুত স্থানান্তর করা প্রয়োজন।

এসব আলোচনার পর বৈঠকের সভাপতি হিসেবে ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গণপূর্তের নির্ধারিত হারের মধ্যে গোডাউন ভাড়া করতে হবে। প্রয়োজনে মহানগরের দূরবর্তী এলাকায় গোডাউন অনুসন্ধান করা যেতে পারে।

এজন্য তিনি পরবর্তীতে ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিয়েছেন, ঢাকা অঞ্চলের ইভিএম সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনের মহানগর এলাকার বাইরে অথবা দূরবর্তী এলাকায় গোডাউন ভাড়ার ব্যবস্থা করার জন্য।

ইসির ইভিএম প্রকল্পের পরিচালক কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নেওয়া বর্তমান প্রকল্পের অধীন দেড় লাখ ইভিএম রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৮০ হাজার ইভিএম মাঠ পর্যায়ে রয়েছে বিভিন্ন নির্বাচনে ব্যবহারের পর। অবশিষ্ট ইভিএম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিতে (বিএমটিএফ) সংরক্ষিত আছে।

২০১৮ সালে তড়িঘড়ি করে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকার প্রকল্পটি নিয়েছিল কেএম নূরুল হুদার তৎকালীন কমিশন। সেই প্রকল্পে প্রতিটি ইভিএম দাম পড়েছিল দুই লাখ টাকা, যা সংরক্ষণের জন্য কোনো ব্যবস্থাই রাখা হয়নি। ফলে নির্বাচনের পর বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, স্থানীয় নির্বাচন কার্যালয়ে সংরক্ষণের ন্যূনতম সুবিধা ছাড়াই রাখা হয়েছে মেশিনগুলো। এতে ৩০ হাজারের মেশিন ব্যবহার অযোগ্যও হয়ে পড়েছিল।

কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের হাতে মেশিনগুলো দিয়ে ভোটগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এখনো কতগুলো মেশিন ব্যবহারযোগ্য আছে তার হিসেব নেই কমিশনের কাছে। বর্তমানে এ নিয়ে কাজ চলছে বলে জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে আগামী মার্চের মধ্যে কতটি মেশিন ব্যবহারযোগ্য তা জানা যাবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।

তিনি বলেন, বর্তমানে মেইনটেন্যান্সের কাজ চলছে। এরপর এগুলো আবার মাঠ পর্যায়ে প্লাস্টিকের বক্সে পাঠানো হবে।