ঢাকা ০৩:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাগরে নিজেদের বিমানবাহী রণতরী ডুবিয়ে দিল ব্রাজিল

আটলান্টিক মহাসাগরে নিজেদের একটি বিমানবাহী রণতরী ডুবিয়ে দিয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। ব্যবহারের অনুপযোগী ও পুরনো হয়ে যাওয়ায় শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এটি সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছে দেশটি।

তবে এ নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন পরিবেশবিদরা। তারা দাবি করেছিলেন, রণতরীটিতে অনেক বিষাক্ত পদার্থ আছে। এখন এগুলো সাগরের পানিতে মিশে পরিবেশের ক্ষতি করবে। তবে তাদের আপত্তিতে সাড়া দেয়নি দেশটির সরকার।

রণতরী ডোবানোর ব্যাপারে শুক্রবার ব্রাজিলের নৌ বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘পরিকল্পিত রণতরী ডোবানোর বিষয়টি শুক্রবার সন্ধ্যার পর সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়েছে। ব্রাজিলের উপকূল থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে আটলান্টিক মহাসাগরের একটি স্থানে এটি ডোবানো হয়েছে। যে স্থানটির গভীরতা প্রায় ১৬ হাজার ফুট (৫ হাজার মিটার)।’

ছয় দশক পুরনো ‘সাও পাওলো’ নামের রণতরীটি অন্য কোনো দেশের বন্দরে রাখতে চেয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু কেউ এটি রাখতে চায়নি। ফলে এটি ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। রণতরীটি ১৯৫০ সালে ফ্রান্সে তৈরি করা হয়েছিল। ফরাসি নৌ বাহিনী দীর্ঘ ৩৭ বছর ‘ফো’ নামে এটি ব্যবহার করে। নৌ বাহিনীর ২০ শতকের ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছে এটি।

এই রণতরীটি ১৯৬০ সালে ফ্রান্সের প্রথম পরমাণু পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এছাড়া ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এটি আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং যুগোস্লাভিয়ায় মোতায়েন করা হয়েছিল।

ব্রাজিল ২০০০ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে ১২ মিলিয়ন ডলার দিয়ে বিমানবাহী রণতরীটি কিনে নেয়। কিন্তু মাত্র ৫ বছর পর ২০০৫ সালে এটিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এরপরই দীর্ঘ এ জাহাজটি কার্যকারিতা হারাতে থাকে।

২০২২ সালে ব্রাজিল সরকার এই রণতরী ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। এ নিয়ে তুরস্কের একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিও করে তারা। কিন্তু পরিবেশের ক্ষতির কথা চিন্তা করে তুরস্কের সরকার এতে বাধা দেয়। এরপর এটি আবার ব্রাজিলে ফিরিয়ে আনা হয়।

ব্রাজিলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যেখানে দৈত্যকার রণতরীটি ডোবানো হয়েছে সেখানে কোনো জাহাজ চলাচল করে না এবং এটি ব্রাজিলের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাছে অবস্থিত।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাগরে নিজেদের বিমানবাহী রণতরী ডুবিয়ে দিল ব্রাজিল

আপডেট সময় ০১:৪০:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

আটলান্টিক মহাসাগরে নিজেদের একটি বিমানবাহী রণতরী ডুবিয়ে দিয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। ব্যবহারের অনুপযোগী ও পুরনো হয়ে যাওয়ায় শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এটি সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছে দেশটি।

তবে এ নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন পরিবেশবিদরা। তারা দাবি করেছিলেন, রণতরীটিতে অনেক বিষাক্ত পদার্থ আছে। এখন এগুলো সাগরের পানিতে মিশে পরিবেশের ক্ষতি করবে। তবে তাদের আপত্তিতে সাড়া দেয়নি দেশটির সরকার।

রণতরী ডোবানোর ব্যাপারে শুক্রবার ব্রাজিলের নৌ বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘পরিকল্পিত রণতরী ডোবানোর বিষয়টি শুক্রবার সন্ধ্যার পর সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়েছে। ব্রাজিলের উপকূল থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে আটলান্টিক মহাসাগরের একটি স্থানে এটি ডোবানো হয়েছে। যে স্থানটির গভীরতা প্রায় ১৬ হাজার ফুট (৫ হাজার মিটার)।’

ছয় দশক পুরনো ‘সাও পাওলো’ নামের রণতরীটি অন্য কোনো দেশের বন্দরে রাখতে চেয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু কেউ এটি রাখতে চায়নি। ফলে এটি ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। রণতরীটি ১৯৫০ সালে ফ্রান্সে তৈরি করা হয়েছিল। ফরাসি নৌ বাহিনী দীর্ঘ ৩৭ বছর ‘ফো’ নামে এটি ব্যবহার করে। নৌ বাহিনীর ২০ শতকের ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছে এটি।

এই রণতরীটি ১৯৬০ সালে ফ্রান্সের প্রথম পরমাণু পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এছাড়া ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এটি আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং যুগোস্লাভিয়ায় মোতায়েন করা হয়েছিল।

ব্রাজিল ২০০০ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে ১২ মিলিয়ন ডলার দিয়ে বিমানবাহী রণতরীটি কিনে নেয়। কিন্তু মাত্র ৫ বছর পর ২০০৫ সালে এটিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এরপরই দীর্ঘ এ জাহাজটি কার্যকারিতা হারাতে থাকে।

২০২২ সালে ব্রাজিল সরকার এই রণতরী ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। এ নিয়ে তুরস্কের একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিও করে তারা। কিন্তু পরিবেশের ক্ষতির কথা চিন্তা করে তুরস্কের সরকার এতে বাধা দেয়। এরপর এটি আবার ব্রাজিলে ফিরিয়ে আনা হয়।

ব্রাজিলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যেখানে দৈত্যকার রণতরীটি ডোবানো হয়েছে সেখানে কোনো জাহাজ চলাচল করে না এবং এটি ব্রাজিলের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাছে অবস্থিত।