ঢাকা ০৯:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ট্যাংকের পর এবার পশ্চিমাদের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানে নজর ইউক্রেনের

কয়েকমাস ধরে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও অনিশ্চয়তার পর রুশ আক্রমণ মোকাবিলায় ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য ট্যাংক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি। এসব ট্যাংক ইউক্রেনের হাতে আসলে যুদ্ধের মোড় ঘুরে যেতে পারে বলে আশা করছে কিয়েভ।

তবে এখানেই থেমে থাকছে না পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি। ট্যাংকের নিশ্চয়তা আদায় করার পর এখন ইউক্রেনের নজর পশ্চিমাদের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের দিকে। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক জোট ন্যাটোর মিত্র দেশগুলোর কাছ থেকে ডজন ডজন উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধ ট্যাংকের বিষয়ে নিশ্চয়তা পাওয়ার পর এখন কিয়েভ পশ্চিমাদের যুদ্ধবিমান চায় বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। আর তাই আমেরিকান এফ-১৬ সহ চতুর্থ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান হাতে পেতে পশ্চিমা দেশগুলোকে চাপ দেবে তারা।

এর আগে বুধবার ইউক্রেনের জন্য ভারী ট্যাংক সরবরাহ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তারা ৩১টি অত্যন্ত শক্তিশালী ও অত্যাধুনিক আবরাম ট্যাংক ইউক্রেনকে দেবেন। হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, এটাই বিশ্বের সবচেয়ে ভালো ট্যাংক। গতবছর মার্কিন কংগ্রেস ইউক্রেনের জন্য ১০০ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সাহায্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই অর্থ দিয়েই এই ট্যাংক ও অন্য সামরিক সরঞ্জাম পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, ‘যদি আমরা সেগুলো পেয়ে যাই তাহলে যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের শক্তি অনেক বেড়ে যাবে… এটি কেবল এফ-১৬ যুদ্ধবিমানই নয়, আমরা চতুর্থ প্রজন্মের ফাইটার জেট চাই।’ ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর কাছে সোভিয়েত যুগের যুদ্ধবিমানের বহর রয়েছে। যেগুলো ৩১ বছরেরও বেশি সময় আগে কিয়েভের স্বাধীনতা ঘোষণার আগে তৈরি হয়েছিল। এসব যুদ্ধবিমানই এখন ইন্টারসেপ্ট মিশন এবং রাশিয়ান অবস্থানগুলোতে আক্রমণ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

আল জাজিরা বলছে, রুশ আগ্রাসন মোকাবিলায় পশ্চিমা সামরিক সমর্থন কিয়েভের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর পর সেই সহায়তা খুবই দ্রুত বিকশিত হয়েছে। রাশিয়ান আগ্রাসনের আগে ইউক্রেনে প্রাণঘাতী সামরিক সহায়তা সরবরাহের ধারণাটি ছিল অত্যন্ত বিতর্কিত। কিন্তু রুশ হামলা শুরুর পর থেকে পশ্চিমা অস্ত্র সরবরাহ কেবলই বেড়েছে।

ইউরি সাক বলছেন, ‘পশ্চিমারা আমাদের ভারী কামান দিতে চায়নি, কিন্তু পরে তারা দিয়েছিল। তারা আমাদের হিমারস সিস্টেম দিতে চায়নি, পরে তারা দিয়েছে। তারা আমাদের ট্যাংকও দিতে চায়নি, এখন তারা আমাদের ট্যাংক দিচ্ছে। পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়া আর এমন কিছুই থাকবে না যা আমরা পাব না।’

তবে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধবিমান পাঠানোর কোনও সম্ভাবনা নেই। বুন্ডেস্ট্যাগে তিনি বলেন, ‘আমি খুব তাড়াতাড়ি পরিষ্কার করে দিয়েছিলাম যে আমরা যুদ্ধবিমান নিয়ে কোনও কথাই বলছি না এবং আমি এখানেও সেই একই কথাই বলছি।’ শলৎস আরও বলেন, ‘আমরা কোনও অবস্থাতেই স্থল সেনা পাঠাব না। আমি বলেছি ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটো সৈন্যদের সরাসরি কোনও সম্পৃক্ততা থাকবে না। এখন পর্যন্ত এমনটা হয়নি এবং ভবিষ্যতেও হবে না। এবং সবাই আমার এই কথার ওপর নির্ভর করতে পারে।’

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ট্যাংকের পর এবার পশ্চিমাদের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানে নজর ইউক্রেনের

আপডেট সময় ১২:৫৯:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৩

কয়েকমাস ধরে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও অনিশ্চয়তার পর রুশ আক্রমণ মোকাবিলায় ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য ট্যাংক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি। এসব ট্যাংক ইউক্রেনের হাতে আসলে যুদ্ধের মোড় ঘুরে যেতে পারে বলে আশা করছে কিয়েভ।

তবে এখানেই থেমে থাকছে না পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি। ট্যাংকের নিশ্চয়তা আদায় করার পর এখন ইউক্রেনের নজর পশ্চিমাদের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের দিকে। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক জোট ন্যাটোর মিত্র দেশগুলোর কাছ থেকে ডজন ডজন উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধ ট্যাংকের বিষয়ে নিশ্চয়তা পাওয়ার পর এখন কিয়েভ পশ্চিমাদের যুদ্ধবিমান চায় বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। আর তাই আমেরিকান এফ-১৬ সহ চতুর্থ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান হাতে পেতে পশ্চিমা দেশগুলোকে চাপ দেবে তারা।

এর আগে বুধবার ইউক্রেনের জন্য ভারী ট্যাংক সরবরাহ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তারা ৩১টি অত্যন্ত শক্তিশালী ও অত্যাধুনিক আবরাম ট্যাংক ইউক্রেনকে দেবেন। হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, এটাই বিশ্বের সবচেয়ে ভালো ট্যাংক। গতবছর মার্কিন কংগ্রেস ইউক্রেনের জন্য ১০০ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সাহায্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই অর্থ দিয়েই এই ট্যাংক ও অন্য সামরিক সরঞ্জাম পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, ‘যদি আমরা সেগুলো পেয়ে যাই তাহলে যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের শক্তি অনেক বেড়ে যাবে… এটি কেবল এফ-১৬ যুদ্ধবিমানই নয়, আমরা চতুর্থ প্রজন্মের ফাইটার জেট চাই।’ ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর কাছে সোভিয়েত যুগের যুদ্ধবিমানের বহর রয়েছে। যেগুলো ৩১ বছরেরও বেশি সময় আগে কিয়েভের স্বাধীনতা ঘোষণার আগে তৈরি হয়েছিল। এসব যুদ্ধবিমানই এখন ইন্টারসেপ্ট মিশন এবং রাশিয়ান অবস্থানগুলোতে আক্রমণ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

আল জাজিরা বলছে, রুশ আগ্রাসন মোকাবিলায় পশ্চিমা সামরিক সমর্থন কিয়েভের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর পর সেই সহায়তা খুবই দ্রুত বিকশিত হয়েছে। রাশিয়ান আগ্রাসনের আগে ইউক্রেনে প্রাণঘাতী সামরিক সহায়তা সরবরাহের ধারণাটি ছিল অত্যন্ত বিতর্কিত। কিন্তু রুশ হামলা শুরুর পর থেকে পশ্চিমা অস্ত্র সরবরাহ কেবলই বেড়েছে।

ইউরি সাক বলছেন, ‘পশ্চিমারা আমাদের ভারী কামান দিতে চায়নি, কিন্তু পরে তারা দিয়েছিল। তারা আমাদের হিমারস সিস্টেম দিতে চায়নি, পরে তারা দিয়েছে। তারা আমাদের ট্যাংকও দিতে চায়নি, এখন তারা আমাদের ট্যাংক দিচ্ছে। পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়া আর এমন কিছুই থাকবে না যা আমরা পাব না।’

তবে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধবিমান পাঠানোর কোনও সম্ভাবনা নেই। বুন্ডেস্ট্যাগে তিনি বলেন, ‘আমি খুব তাড়াতাড়ি পরিষ্কার করে দিয়েছিলাম যে আমরা যুদ্ধবিমান নিয়ে কোনও কথাই বলছি না এবং আমি এখানেও সেই একই কথাই বলছি।’ শলৎস আরও বলেন, ‘আমরা কোনও অবস্থাতেই স্থল সেনা পাঠাব না। আমি বলেছি ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটো সৈন্যদের সরাসরি কোনও সম্পৃক্ততা থাকবে না। এখন পর্যন্ত এমনটা হয়নি এবং ভবিষ্যতেও হবে না। এবং সবাই আমার এই কথার ওপর নির্ভর করতে পারে।’