ঢাকা ০১:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড সংযুক্তিকরণ, চীনকে পাশে পাচ্ছে না রাশিয়া?

ইউক্রেনের কাছ থেকে দখলকৃত চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করার ঘটনায় মস্কোর ওপর ক্ষুব্ধ পশ্চিমা দেশগুলো। শুক্রবার এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্র ও আলবেনিয়া। স্বভাবতই এতে ভেটো দেয় রাশিয়া। তবে মস্কোর মিত্র তথা কৌশলগত অংশীদার হিসেবে পরিচিত চীন এই প্রস্তাবে তার ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করেনি। বরং এদিন ভোটদানে বিরত ছিল বেইজিং। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড। এতে সংস্থার সদস্য দেশগুলোকে ইউক্রেনের কোনও পরিবর্তিত অবস্থাকে স্বীকৃতি না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। একইসঙ্গে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাশিয়াকে বাধ্য করার কথা বলা হয়।

লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, একটি সার্বভৌম দেশের ভূখণ্ডকে অন্য দেশের সঙ্গে সংযুক্ত করার চেষ্টা জাতিসংঘের নীতিবিরুদ্ধ। রাশিয়ার এ সংক্রান্ত উদ্যোগ ‘আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’ ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের ১০টি দেশই রাশিয়ার বিরুদ্ধে উত্থাপিত এই নিন্দা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। ভোটদানে বিরত ছিল চীন, গ্যাবন, ভারত ও ব্রাজিল। প্রস্তাবে ভেটো দেয় রাশিয়া। অর্থাৎ, রাশিয়া ছাড়া সরাসরি কোনও দেশই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়নি। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মার্কিন রাষ্ট্রদূতও বিষয়টির অবতারণা করেন।

থমাস-গ্রিনফিল্ড সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনও দেশ রাশিয়ার পক্ষে ভোট দেয়নি। একটি দেশও নয়।’ ভোটদানে বিরত থাকা মনে রাশিয়ার স্পষ্ট কোনও পক্ষাবলম্বন নয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি। রাশিয়ার কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাতে ওয়াশিংটন জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদেও যাবে বলে উল্লেখ করেন থমাস-গ্রিনফিল্ড।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকলেও ইউক্রেনের দীর্ঘায়িত সংকট নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছে চীন। জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন বলেন, সব দেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করা উচিত। দেশগুলোর ‘বৈধ নিরাপত্তা উদ্বেগ’ও গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করলেও দেশটির কথিত সামরিক অভিযানে সহায়তা দিচ্ছে না বেইজিং। এ মাসেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি বিরল স্বীকারোক্তি দেন। জানান, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইউক্রেন ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটিতে চীনের বিরত থাকা দেখিয়ে দিয়েছে যে, রাশিয়ার পদক্ষেপ চীনকে ‘অস্বস্তিকর’ অবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড সংযুক্তিকরণ, চীনকে পাশে পাচ্ছে না রাশিয়া?

আপডেট সময় ১২:৩১:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ অক্টোবর ২০২২

ইউক্রেনের কাছ থেকে দখলকৃত চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করার ঘটনায় মস্কোর ওপর ক্ষুব্ধ পশ্চিমা দেশগুলো। শুক্রবার এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্র ও আলবেনিয়া। স্বভাবতই এতে ভেটো দেয় রাশিয়া। তবে মস্কোর মিত্র তথা কৌশলগত অংশীদার হিসেবে পরিচিত চীন এই প্রস্তাবে তার ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করেনি। বরং এদিন ভোটদানে বিরত ছিল বেইজিং। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড। এতে সংস্থার সদস্য দেশগুলোকে ইউক্রেনের কোনও পরিবর্তিত অবস্থাকে স্বীকৃতি না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। একইসঙ্গে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাশিয়াকে বাধ্য করার কথা বলা হয়।

লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, একটি সার্বভৌম দেশের ভূখণ্ডকে অন্য দেশের সঙ্গে সংযুক্ত করার চেষ্টা জাতিসংঘের নীতিবিরুদ্ধ। রাশিয়ার এ সংক্রান্ত উদ্যোগ ‘আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’ ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের ১০টি দেশই রাশিয়ার বিরুদ্ধে উত্থাপিত এই নিন্দা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। ভোটদানে বিরত ছিল চীন, গ্যাবন, ভারত ও ব্রাজিল। প্রস্তাবে ভেটো দেয় রাশিয়া। অর্থাৎ, রাশিয়া ছাড়া সরাসরি কোনও দেশই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়নি। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মার্কিন রাষ্ট্রদূতও বিষয়টির অবতারণা করেন।

থমাস-গ্রিনফিল্ড সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনও দেশ রাশিয়ার পক্ষে ভোট দেয়নি। একটি দেশও নয়।’ ভোটদানে বিরত থাকা মনে রাশিয়ার স্পষ্ট কোনও পক্ষাবলম্বন নয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি। রাশিয়ার কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাতে ওয়াশিংটন জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদেও যাবে বলে উল্লেখ করেন থমাস-গ্রিনফিল্ড।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকলেও ইউক্রেনের দীর্ঘায়িত সংকট নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছে চীন। জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন বলেন, সব দেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করা উচিত। দেশগুলোর ‘বৈধ নিরাপত্তা উদ্বেগ’ও গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করলেও দেশটির কথিত সামরিক অভিযানে সহায়তা দিচ্ছে না বেইজিং। এ মাসেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি বিরল স্বীকারোক্তি দেন। জানান, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইউক্রেন ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটিতে চীনের বিরত থাকা দেখিয়ে দিয়েছে যে, রাশিয়ার পদক্ষেপ চীনকে ‘অস্বস্তিকর’ অবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে।