- শীতকালে নড়াচড়া কম হয় এবং বায়ুর চাপ কম থাকে বলে মানুষের কোষ ফুলে যায়। ফলে জয়েন্ট বা জোড়া জমে যায় এবং ব্যথা শুরু হয়।
- শীতের প্রকোপে রক্তনালির খিঁচুনি ও সংকোচন হলে জোড়া, পেশি ও হাড়ে রক্ত চলাচল আগের চেয়ে বেশ কমে যায় বলে ব্যথা-বেদনা বেড়ে যায়।
- শীতে স্নায়ুর সহ্যক্ষমতা কম থাকে এবং অল্পতেই উত্তেজিত হয় বলে ব্যথার অনুভূতি বেড়ে যায়।
যেসব জায়গায় ব্যথা হয়
শীতকালে যেসব জায়গায় সাধারণত ব্যথা হয় সেগুলো হলো—ঘাড়, কোমর, হাঁটু, কটি, গোড়ালি, কাঁধ, কনুই ও কবজি।
লক্ষণ
হাত সামনে পেছনে নেওয়া এবং হাত দিয়ে কিছু তোলা কষ্টকর হয়। হাঁটু ও কোমর সোজা অবস্থা থেকে ভাঁজ করতে এবং বসতে বা উঠতে অসুবিধা হয়।
চিকিৎসা
- কুসুম কুসুম গরম পানির সেঁক আর্থরাইটিসের ব্যথার জন্য কার্যকর। পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথা ও আর্থরাইটিসের ওষুধ খেতে হবে।
- ব্যথানাশক জেল বা মলম দিয়ে হালকাভাবে জোড়ায় ম্যাসাজ করতে হবে।
- ব্যথা নিরাময়ে চিকিৎসকের পরামর্শে জয়েন্টে ইনজেকশন দেওয়ারও প্রয়োজন হতে পারে।
প্রতিরোধে করণীয়
- যথেষ্ট গরম কাপড় পরতে হবে।
- আক্রান্ত জোড়াকে বসা, দাঁড়ানো যেকোনো অবস্থায় বেশিক্ষণ রাখা যাবে না।
- সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা কম করতে হবে।
- প্রয়োজনে হাতে স্টিক, পায়ে কুশনযুক্ত জুতা এবং গোড়ালি, হাঁটু, কোমর, ঘাড়, কাঁধ, কনুই ও কবজিতে সাপোর্ট বা ব্রেচ ব্যবহার করতে হবে।
- হালকা ব্যায়াম জোড়ার ব্যথা উপশমে বেশ ভূমিকা পালন করে। অন্যদিকে শীতকালে কঠোর ব্যায়াম আক্রান্ত জোড়ায় রক্ত চলাচল কমিয়ে ব্যথা বাড়িয়ে দেয়। জোড়ার স্বাভাবিক নড়াচড়া এবং পেশি, টেনডন ও লিগামেন্টের নমনীয়তা জোড়াকে ব্যথামুক্ত রাখে।
- ফল ও ফলের রস, সতেজ শাকসবজিসহ উপযুক্ত খাবার শীতকালে আর্থরাইটিস বা বাত ব্যথার তীব্রতা কমাতে সহায়তা করে। গাজর, শসা, মুলা ইত্যাদি সবজি ব্যথা সৃষ্টিকারী পদার্থ শরীর থেকে বের করে দেয়।
- সকালে খালি পেটে রসুন খাওয়া রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ এবং জোড়ায় রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখে বলে ব্যথা কম অনুভূত হয়।
- আদা ও লেবুর রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে সকালে এবং রাতে পান করলে আর্থরাইটিসের ব্যথা কমে যায়।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ‘ডি’, ‘এ’ ও ‘সি’ খেতে হবে।