ঢাকা ১১:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মির্জাপুরে অবৈধ মাটি উত্তোলনের মহোৎসব চালাচ্ছেন রোকন-দেওয়ান

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের ছিট মামুদপুর এলাকায় পৃথক দুটি স্থানে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ মাটি উত্তোলন করে যাচ্ছেন স্থানীয় রোকন এবং দেওয়ান। তাদের ভাষ্যমতে, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই দিনের পর দিন পাহাড়ি এলাকায় অবৈধ মাটি কাটছেন তারা। এতে দিনের পর দিন ধ্বংসের পথে যাচ্ছে পাহাড়ের জীব-বৈচিত্র্য।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি এলাকায় লাল মাটি কাটার মাহোউৎসব শুরু হয় মূলত বিভিন্ন ইটভাটাগুলোতে মাটি সরবরাহ করতে।স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত মাটি-বালু ও পাহাড়ি মাটি কাটা ও উত্তোলন বন্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা, মাটি-বালু বোঝাই ড্রাম ট্রাক জব্দ করা হলেও থেমে নেই এ অশুভ তৎপরতা।

নাম না বলার শর্তে ছিট মামুদপুর গ্রামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, একদিকে প্রশাসনের উদাসীনতা অন্যদিকে অবৈধ মাটি কাটার দুষ্টচক্রের দৌড়াত্ম্যে পাহাড়ি জমির মাটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এসব তৎপরতা বন্ধে প্রশাসনের ভূমিকা আরো বেগবান করার আহ্বান জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক বাসিন্দা জানান, মাটির ট্রাক চলতে চলতে এলাকার সড়কগুলো দিয়ে চলাফেরা করতে খুবই কষ্ট হয়। প্রত্যন্ত এলাকায় হওয়ায় তারা অবৈধ মাটি কেটে খনন করে ফেলছে। প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের কেউ কিছু বলতেও পারেনা। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছিট মামুদপুরের দুটি স্পটে ৫-৭টি এসকাভেটর দিয়ে রাতের আঁধারে কাটা হচ্ছে মাটি। এসব মাটি ড্রাম ট্রাকযোগে বিভিন্ন অবৈধ ইটভাটা, সড়ক সংস্কার, পুকুর ভরাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের জন্য সরবরাহ করা হয়।

এ বিষয়ে মাটি উত্তোলনের সাথে জড়িত রোকনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি মাটি কিনে বিক্রি করছি, এটা অবৈধ না, তাছাড়া তিনি কিভাবে মাটি কাটছেন এমন প্রশ্নে তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না বলে ফোন কেটে দেন।

অপর এক ব্যবসায়ী দেওয়ানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সবাইতো চালাইতাছে, আমিতো আর একা চালাইনা। প্রশাসনের লোকের লগেতো কথা কইছি, ওইটাতো কোনো সমস্যা নাই।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি। প্রতিনিয়তই দিন ও গভীর রাত পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে জরিমানাসহ এসব কাজে ব্যবহৃত যানবাহন ও সরঞ্জামাদি জব্দ করা হচ্ছে। এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডের তথ্য পেলেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.বি.এম আরিফুল ইসলামকে একাধিবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মির্জাপুরে অবৈধ মাটি উত্তোলনের মহোৎসব চালাচ্ছেন রোকন-দেওয়ান

আপডেট সময় ০৫:৩৫:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের ছিট মামুদপুর এলাকায় পৃথক দুটি স্থানে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ মাটি উত্তোলন করে যাচ্ছেন স্থানীয় রোকন এবং দেওয়ান। তাদের ভাষ্যমতে, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই দিনের পর দিন পাহাড়ি এলাকায় অবৈধ মাটি কাটছেন তারা। এতে দিনের পর দিন ধ্বংসের পথে যাচ্ছে পাহাড়ের জীব-বৈচিত্র্য।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি এলাকায় লাল মাটি কাটার মাহোউৎসব শুরু হয় মূলত বিভিন্ন ইটভাটাগুলোতে মাটি সরবরাহ করতে।স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত মাটি-বালু ও পাহাড়ি মাটি কাটা ও উত্তোলন বন্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা, মাটি-বালু বোঝাই ড্রাম ট্রাক জব্দ করা হলেও থেমে নেই এ অশুভ তৎপরতা।

নাম না বলার শর্তে ছিট মামুদপুর গ্রামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, একদিকে প্রশাসনের উদাসীনতা অন্যদিকে অবৈধ মাটি কাটার দুষ্টচক্রের দৌড়াত্ম্যে পাহাড়ি জমির মাটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এসব তৎপরতা বন্ধে প্রশাসনের ভূমিকা আরো বেগবান করার আহ্বান জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক বাসিন্দা জানান, মাটির ট্রাক চলতে চলতে এলাকার সড়কগুলো দিয়ে চলাফেরা করতে খুবই কষ্ট হয়। প্রত্যন্ত এলাকায় হওয়ায় তারা অবৈধ মাটি কেটে খনন করে ফেলছে। প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের কেউ কিছু বলতেও পারেনা। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছিট মামুদপুরের দুটি স্পটে ৫-৭টি এসকাভেটর দিয়ে রাতের আঁধারে কাটা হচ্ছে মাটি। এসব মাটি ড্রাম ট্রাকযোগে বিভিন্ন অবৈধ ইটভাটা, সড়ক সংস্কার, পুকুর ভরাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের জন্য সরবরাহ করা হয়।

এ বিষয়ে মাটি উত্তোলনের সাথে জড়িত রোকনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি মাটি কিনে বিক্রি করছি, এটা অবৈধ না, তাছাড়া তিনি কিভাবে মাটি কাটছেন এমন প্রশ্নে তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না বলে ফোন কেটে দেন।

অপর এক ব্যবসায়ী দেওয়ানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সবাইতো চালাইতাছে, আমিতো আর একা চালাইনা। প্রশাসনের লোকের লগেতো কথা কইছি, ওইটাতো কোনো সমস্যা নাই।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি। প্রতিনিয়তই দিন ও গভীর রাত পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে জরিমানাসহ এসব কাজে ব্যবহৃত যানবাহন ও সরঞ্জামাদি জব্দ করা হচ্ছে। এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডের তথ্য পেলেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.বি.এম আরিফুল ইসলামকে একাধিবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।