ঢাকা ০২:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তালুকদার স’মিল ও ডি এন এন প্যাকেজিংয়ের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে কয়লা তৈরির অভিযোগ

গাজীপুরের কালিগঞ্জে অনুমোদন ছাড়াই অবৈধ করাতকলের রমরমা ব্যবসা চলছে। এ কারণে সরকার হারাচ্ছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব। অন্যদিকে পরিবেশ হচ্ছে বিনষ্ট। সম্প্রীতি প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে কালীগঞ্জে গড়ে উঠা তালুকদার স’মিল ও ডি এন এন প্যাকেজিং লিমিটেড নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বন অধিদপ্তরের অনুমতি অবৈধ পথে বন থেকে গাছ কেটে তালুকদার স’মিল এনে চিঁড়ায়ের কাজ করা হয়। তারপর সে চিঁড়াইকৃত কাঠ পাশের চুল্লিতে পুড়িয়ে কয়লা করে সংরক্ষণ করে পাশে থাকা প্রতিষ্ঠান ডিএনএন প্যাকেজিং লিমিটেড। আর কাঠ পোড়ানোর সময় নির্গত হয় প্রচুর কালো ধোঁয়া। ধোঁয়ার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত নানা রোগব্যাধি হচ্ছে শিশুসহ সকলের। আর ব্রয়লার সংরক্ষণের এই প্রক্রিয়ায় ফলে কালিগঞ্জ এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

এ বিষয়ে গত ১১ মার্চ গাজীপুর জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ করেছেন উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের রায়েরদিয়া গ্রামের মো. জাহিদুল হক ওরফে মোস্তফা কামাল। স্থানীয় সচেতনমহল একাধিকবার প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. রায়হান তালুকদারকে অভিযোগ জানানোর পরও এর সমাধানের কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব তৈরির কারখানায় অবাধে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। প্রতিদিন কয়েক শ মণ কাঠ পোড়ানো হচ্ছে এই ব্রয়লারে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের বন উজাড় করে কাট এনে পুড়িয়ে ডিএনএন প্যাকেজিংয়ে অবৈধ ব্রয়লারেPreview Changes (opens in a new tab)র সংরক্ষণ করছে তালুকদার স’মিল। যার ফলে সেখানকার উৎপাদিত ধোয়ায় আশেপাশের এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি থেকে আনুমানিক ১০০ থেকে ১৫০ গজের মধ্যে একটি হাইস্কুল, একটি মাদ্রাসা, একটি মসজিদ। এতে স্থানীয়দের বসবাসে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

এ ব্যাপারে তালুকদার স’মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রায়হান তালুকদার বলেন, আমি পরিবেশের ক্ষতি হউক এমন কিছু করেনি। আমার প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স আছে। প্রতিষ্ঠানটির নিয়মানুযায়ী শিগগিরই অন্যান্য ডকুমেন্টস (পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ফায়ার লাইসেন্স ও অনাপত্তি পত্র) সংগ্রহ করবেন বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ জানান, আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে জানাতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর, গাজীপুর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক আরেফিন বাদল জানান, অবৈধভাবে ব্রয়লার সংরক্ষণ ও কাঠ চেড়াই করার বিষয়ে কালীগঞ্জের নাগরীতে গড়ে উঠা তালুকদার ‘স‘ মিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

তালুকদার স’মিল ও ডি এন এন প্যাকেজিংয়ের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে কয়লা তৈরির অভিযোগ

আপডেট সময় ০৩:০৫:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

গাজীপুরের কালিগঞ্জে অনুমোদন ছাড়াই অবৈধ করাতকলের রমরমা ব্যবসা চলছে। এ কারণে সরকার হারাচ্ছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব। অন্যদিকে পরিবেশ হচ্ছে বিনষ্ট। সম্প্রীতি প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে কালীগঞ্জে গড়ে উঠা তালুকদার স’মিল ও ডি এন এন প্যাকেজিং লিমিটেড নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বন অধিদপ্তরের অনুমতি অবৈধ পথে বন থেকে গাছ কেটে তালুকদার স’মিল এনে চিঁড়ায়ের কাজ করা হয়। তারপর সে চিঁড়াইকৃত কাঠ পাশের চুল্লিতে পুড়িয়ে কয়লা করে সংরক্ষণ করে পাশে থাকা প্রতিষ্ঠান ডিএনএন প্যাকেজিং লিমিটেড। আর কাঠ পোড়ানোর সময় নির্গত হয় প্রচুর কালো ধোঁয়া। ধোঁয়ার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত নানা রোগব্যাধি হচ্ছে শিশুসহ সকলের। আর ব্রয়লার সংরক্ষণের এই প্রক্রিয়ায় ফলে কালিগঞ্জ এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

এ বিষয়ে গত ১১ মার্চ গাজীপুর জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ করেছেন উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের রায়েরদিয়া গ্রামের মো. জাহিদুল হক ওরফে মোস্তফা কামাল। স্থানীয় সচেতনমহল একাধিকবার প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. রায়হান তালুকদারকে অভিযোগ জানানোর পরও এর সমাধানের কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব তৈরির কারখানায় অবাধে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। প্রতিদিন কয়েক শ মণ কাঠ পোড়ানো হচ্ছে এই ব্রয়লারে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের বন উজাড় করে কাট এনে পুড়িয়ে ডিএনএন প্যাকেজিংয়ে অবৈধ ব্রয়লারেPreview Changes (opens in a new tab)র সংরক্ষণ করছে তালুকদার স’মিল। যার ফলে সেখানকার উৎপাদিত ধোয়ায় আশেপাশের এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি থেকে আনুমানিক ১০০ থেকে ১৫০ গজের মধ্যে একটি হাইস্কুল, একটি মাদ্রাসা, একটি মসজিদ। এতে স্থানীয়দের বসবাসে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

এ ব্যাপারে তালুকদার স’মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রায়হান তালুকদার বলেন, আমি পরিবেশের ক্ষতি হউক এমন কিছু করেনি। আমার প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স আছে। প্রতিষ্ঠানটির নিয়মানুযায়ী শিগগিরই অন্যান্য ডকুমেন্টস (পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ফায়ার লাইসেন্স ও অনাপত্তি পত্র) সংগ্রহ করবেন বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ জানান, আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে জানাতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর, গাজীপুর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক আরেফিন বাদল জানান, অবৈধভাবে ব্রয়লার সংরক্ষণ ও কাঠ চেড়াই করার বিষয়ে কালীগঞ্জের নাগরীতে গড়ে উঠা তালুকদার ‘স‘ মিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।