স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, তিস্তার পানি ন্যায্য হিস্যা আদায়ে একটি খসড়া নিয়ে বাংলাদেশ ২০১১ সাল থেকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু বিগত সময়ে ফ্যাসিবাদী সরকার যারা শুধু বলে গেছে, ভারত যা দিয়েছি, আজীবন মনে রাখবে। সত্যিকারে তারা ভারত কে দিয়েছে কিন্তু কিছু আদায় করতে পারেনি। তাদের নতজানু পরাষ্ট্রনীতির কারনে তারা শুধু ভারতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে ছবি তুলেছে, কিন্তু তিস্তার কথা বলার সাহস পায়নি। গতকাল রোববার (৯ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে তিস্তা রেলব্রীজ এলাকায় তিস্তা নিয়ে করণীয় শীর্ষক গণশুনানিতে তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেন, অন্তবর্তিকালীন সরকার পরাষ্টনীতির ক্ষেত্রে শির দ্বারা উচু করে দাঁড়িয়েছে। তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নে, তিস্তা নদীর পানির হিস্যার ক্ষেত্রে ভারতের সাথে মাথা উচু করে কথা বলবে। সেই সাথে আন্তর্জাতিক পানি আইনের ভিত্তিতে কুটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা হবে, যাতে ভারত বাধ্য হয় এই চুক্তিতে সাক্ষর করতে।
তিনি আরো বলেন, বিগত সময়ে উত্তরবঙ্গ যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নয়নের ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিলো। অন্তবর্তিকালীন সরকারের সময় এই উত্তরবঙ্গ বিশেষ বরাদ্ধ পাবে, সকল উন্নয়ন প্রকল্পে উত্তরবঙ্গ থাকবে। উত্তরবঙ্গে কৃষি শিল্পের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। অন্তবর্তিকালীন সরকার কৃষি শিল্প নিয়ে কাজ করছে। কোথায় কোথায় কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন করা যায়, সেই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাতে করে কৃষকরা তাদের ফসলের ন্যায্য দাম পান। এছাড়া উত্তরবঙ্গের যে সব উপজেলায় শিক্ষার হার কম সেই উপজেলাগুলোতে স্থানীয় সরকার আধুনিক ও সমৃদ্ধ লাইব্রেরী তৈরী করা হবে।
আসিফ মাহমুদ বলেন, এর আগে রংপুরের পীরগাছায় এসেছিলাম। পীরগাছা মানুষের দাবী ছিলো পীরগাছা থেকে চিলমারী একটি সংযোগ ব্রীজ নির্মাণের। সেই ব্রীজ নির্মাণে প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। অতিদ্রুত ব্রীজটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন হবে। এই ১৪শ মিটারের একটি ব্রীজ নির্মাণ হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে।
এসময় তিস্তা রেলব্রীজ এলাকায় তিস্তা নিয়ে করণীয় শীর্ষক গণশুনানি মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম এনডিসির সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম তারিকুল ইসলাম, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, নদী গবেষক নজরুল ইসলাম হক্কানী, নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আতিক মুজাহিদ, আবু সাঈদ লিয়ন, বিএনপি নেতা এমদাদুল হক ভরসাসহ অন্যান্য বক্তাগণ।
এর আগে সকাল থেকেই তিস্তা নদী নিয়ে গণ শুনানিতে অংশ নিতে মানুষজন আসতে শুরু করে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে মানুষের ঢল নামে তিস্তা পাড়ে। গণশুনানিতে অংশ নেয়া মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের বক্তব্য প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঝুঁলিয়ে রাখা নয় বরং বর্তমান সরকারের আমলেই এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন চান এলাকাবাসী।