শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম আধুনিক ও স্বনির্ভর বাংলাদেশের স্থপতি, রাজনীতির মহাকবি। স্বাধীনতা উত্তর তলাবিহীন ঝুড়ি উপমায় ভূষিত দেশকে বিশ্বের দরবারে সমুজ্জ্বল আলোয় আলোকিত করে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি। মানুষের হৃদয়ে অমর ও অম্লান হয়ে আছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস যথাযথ মহিমায় পালন ও মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর অবিস্মরণীয় অবদান নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার লক্ষ্যে বিএনপির ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আয়োজনে আজ ১৬ নভেম্বর, শনিবার, চট্টগ্রামে দিনব্যাপি অনুষ্ঠিতব্য কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে যুবসমাজের নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের উদ্যোগে বিপ্লব-উদ্যানে সমাবেশ এবং সমাবেশ শেষে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রে অভিমুখে যুব-পদযাত্রায় সভাপতির বক্তব্যে যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সুমহান সংকল্পে সিপাহী ও জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমে আসে। ঐতিহাসিক এ বিপ্লবের মাধ্যমে জনগণ জাতীয় সংহতির শক্তি প্রদর্শন করে স্বাধীনতার চেতনা ও জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশকে নতুন অভিযাত্রায় ধাবিত করে।
শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা এবং সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে স্বাধীনতার মূলমন্ত্র অর্থাৎ গণতন্ত্রকে হরণ করা হয়। রাষ্ট্র পরিণত হয় এক ব্যক্তি শাসিত রাজার রাজ্যে, যেখানে বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকার রুদ্ধ হয়ে যায়। সেই অন্ধকারাচ্ছন্ন একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে মুক্তির সুতীব্র আকাঙ্ক্ষায় সিপাহী-জনতা মুক্তিযুদ্ধের অসীম সাহসী মহাবীর, মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের দেশপ্রেম, প্রবাদপ্রতিম সাহস ও দূরদর্শী নেতৃত্বের ওপর আস্থা স্থাপন করে।
মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান জাতিকে সংকট থেকে উদ্ধার করেন এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথিকৃৎ হয়ে উঠেন। তিনি সকল মত ও পথের মানুষের সন্নিবেশ ঘটিয়ে গণমানুষের স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতির নতুন অধ্যায় শুরু করেন।
যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না আরও বলেন, জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস এবং জনগণের ঐক্যই স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ। অগণিত শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলমন্ত্র ছিল জনগণের ইচ্ছার চূড়ান্ত অভিব্যক্তিস্বরূপ আইনের শাসনের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার যার ভিত্তি।
বাংলাদেশের জনগণ এমন একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখে, যেখানে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার হবে উদার, জনবান্ধব ও জবাবদিহিমূলক। ২৪’র গণ-অভ্যুত্থানে শত-সহস্র শহীদের আত্মদানের বিনিময়ে গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অর্জিত বিজয় আমাদের সামনে একটি বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক ও আইনের শাসনের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সুযোগ তৈরি করেছে।
বিএনপির আগামীর রাজনীতি সেই আকাঙ্খাকে বাস্তবে রূপ দিতে, মানুষের মর্যাদা ও অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও সাম্যের ভিত্তিতে একটি মানবিক রাষ্ট্র গঠনের প্রত্যয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের শহীদদের রক্তের ঋণকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের লাখো শহীদের স্বপ্নকে ধারণ করে একটি কার্যকর, শক্তিশালী ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই কাজ করছেন বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক জনাব তারেক রহমান।
যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ নেতৃবৃন্দ।