চাঁদাবাজি, হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে তিন পুলিশ সদস্যের নামে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আমলি আদালতে মামলা করেছেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ঠ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের অর্থ-সার্জারী বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. মোহা. ইসমাইল হোসেন। বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল হকের আদালতে স্ব-শরীরে হাজির হয়ে এই মামলা দায়ের করেন তিনি। পরে মামলার নথিপত্র বিশ্লেষণ করে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিন তিনি।
মামলায় উল্লেখিত আসামিরা হলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক এসআই আবু আব্দুল্লাহ জাহিদ (৪৩), কনস্টেবল খাদেমুল ইসলাম (৩৮) এবং গোমস্তাপুর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন (৫৫)। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও ৫ থেকে ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে এই মামলায়।
মামলার নথি ও আদালত সূত্রে জানা যায়, জেলা গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক এসআই আবু আব্দুল্লাহ জাহিদ ডা. ইসমাইল হোসেনকে বিভিন্ন সময় ভয়-ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবী করেন। এতে ডা. ইসমাইল চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ২০১৯ সালের ১২ জুন বুধবার পৌর এলাকার শান্তিমোড়ে অবস্থিত সেবা ক্লিনিকে তার অফিস কক্ষে এসে হট্টগোল সৃষ্টি করে জাহিদ। এক পর্যায়ে ডা. ইসমাইল হোসেনকে গালিগালাজ করে সাবেক এসআই আবু আব্দুল্লাহ জাহিদ সার্টের কলার চেপে ধরে মারধরও করে। আর পরবর্তী সময়ে ডা. ইসমাইলকে বিভিন্ন মামলার ভয় দেখিয়ে হয়রনি করেন তিনি।
এ বিষয়ে মামলার বাদী ডা. ইসমাইল হোসেন বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ডিবির সাবেক এসআই জাহিদ জেলায় কর্মরত থাকা অবস্থায় বহু দিন ধরে চাঁদা নেয়ার জন্য চাপ দিতো। কিন্তু আমি তাকে চাঁদা না দিলে সেবা ক্লিনিকে আমার উপর হামলা করে। এ সময় তার সাথে থাকা কন্সটেবল খাদেমুলও আমার উপর হামলা করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এই হামলার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ আমার সংগ্রহে আছে। এরপর আমাকে আরোও বেশি হয়রানী করার জন্য জেলার গোমস্তাপুর থানার ওসি জসীম উদ্দিনকে দিয়ে আমার অফিসে হানা দিয়েছিল। আমাকে অফিস থেকে বের করে দিয়েছিল। এছাড়া বিভিন্নভাবে হয়রানী করেছিল।
বাদী পক্ষের আইনজীবী নূরে আলম সিদ্দীকি আসাদ বলেন, সাবেক ডিবি কর্মকর্তা এসআই আবু আব্দুল্লাহ জাহিদ চাঁপাইনবাবগঞ্জে কর্মরত অবস্থায় ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করেছিলেন। তিনি বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজিসহ তাদের হয়রানি ও নির্যাতন করেছেন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের চিকিৎসক সমাজের উপর আঘাত করেছেন এবং তাদের কাছে চাঁদা দাবী করেছেন। যার জ¦লন্ত উদাহরণ ডা. ইসমাইলের কাছে চাঁদা দাবী করা এবং চাঁদা না পেয়ে একজন চিকিৎসককে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করা। সেই সময় ডা. ইসমাইল হোসেন গোমস্তাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরী করতেন, সেখানে গিয়েও তাকে নানাভাবে হয়রানী করেছেন।
এছাড়া তিনি আরো বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদীর সময় আমরা এই মামলা না করতে পেরে এখন মামলাটি করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে চলতি বছরের ১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার পিবিআইকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক।
MD