ঢাকা ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাংসে দুর্গন্ধ, তোপের মুখে সুলতান ডাইন

সিলেটে সুলতানস ডাইনের খাসির মাংসের সংগ্রহশালা থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তাদের মাংসের সংগ্রহশালায় অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সিলেট নগরের দাঁড়িয়াপাড়া এলাকার মেঘনা-বি-৩৩ ইমন হাউজিং সংগ্রহশালায় দুর্গন্ধ পেয়ে অভিযান চালান স্থানীয় কিছু যুবক। এ সময় ঘরের পাশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মাংস কেটে সেগুলো পরিষ্কার করতে দেখেন তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নগরীর দাঁড়িয়াপাড়া এলাকার ইমন হাউজিং এলাকার একটি ভাড়াটিয়া বাসা থেকে গত কয়েকদিন থেকে দুর্গন্ধে বেশ অতিষ্ঠ ছিলেন আশপাশের বাসিন্দারা। মঙ্গলবার বিকেলের পরে কয়েকজন স্থানীয় কিছু যুবক সুলতান’স ডাইনের মাংসের সংগ্রহশালায় অভিযান চালান।

এ সময় তারা পচা মাংসের অভিযোগে তোপের মুখে সেখানকার দায়িত্বরতরা বলেন, এখানে কিছু গন্ধ হবে। কারণ মাংসগুলো সিলেটে জবাই করা মাংস না। এগুলো ঢাকায় জবাই করা মাংস। সেখানে জবাই করার পর সিলেটে আনা হয়। এসময় যুবকরা স্থানীয় মুরব্বিদের শরণাপন্ন হলে তারা সুলতান ডাইনের কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে তারা গিয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তির বাসায় বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন।

মাংস সরবরাহকারী মা-বাবার দোয়া প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মোহাম্মদ সুমন জানান, আমাদের দোকান আছে ঢাকার কাপ্তান বাজারে। খাসিগুলো সেখানে জবাই করা হয়। পরে সেখান থেকে মাংসগুলো বস্তায় ভরে বাসে করে সিলেটের কদমতলীতে আনা হয়। সেখান থেকে আমরা কয়েকজন গিয়ে সেগুলো এখানে নিয়ে আসি। পরে মাংসের সাইজ করে সুলতান ডাইনে সাপ্লাই দেই।

তিনি জানান, আমরা প্রতিদিন ২০০-২৫০ কেজি খাসির মাংস ঢাকা থেকে নিয়ে আসি এবং সকালে এনে সেগুলো বিকেলে সাপ্লাই দেই। তবে সেগুলোতে এত দুর্গন্ধ থাকার কারণ সঠিকভাবে বলতে পারেননি তিনি।

সংগ্রহশালার পাশে থাকা একটি বাসার ভাড়াটিয়া রনজিত সরকার নামে একজন আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, আমার পাশের ঘর থেকে সিলেট সুলতান ডাইনে মাংস দেওয়া হয়। প্রথমে তারা আমার পার্শ্ববর্তী ঘরে মাংস কুপাতো। আমরা বাসার মালিকের কাছে অভিযোগ দেওয়াতে এখন আর ঘরে না করে বাসার পাশের বাউন্ডারি সংলগ্ন জায়গায় মাংস ধুয়ে ও কাটাকাটির কাজ করে। এখানে প্রচুর দুর্গন্ধ হয় যার কারণে আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক যুবক বলেন, এক মাস ধরে এই সমস্যায় আমরা ভুগছি। মাংস ভালো না তাই এত দুর্গন্ধ বের হয়। যদি মাংস ভালো হতো তাহলে নিশ্চয়ই সেগুলো থেকে দুর্গন্ধ বের হতো না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট সুলতান’স ডাইনের ম্যানেজার অপারেশনস জুলকার আহমেদ বলেন, আপনারা কি কোনো প্রমাণ পাইছেন, এই মাংস আমরা ওদের কাছ থেকে সংগ্রহ করি? পরে সেখানে থাকা সাংবাদিকরা প্রমাণ আছে বললে তিনি মাংস সংগ্রহের কথা স্বীকার করেন।

তিনি বলেন, আমরা প্রতিদিন কার মাংস প্রতিদিনই কাজে লাগাই, কোনো ফ্রোজেন মাংস আমরা ব্যবহার করি না। পরে উপস্থিত সাংবাদিকরা ঢাকার কাপ্তানবাজারে জবাই করা মাংস কীভাবে সিলেটে এনে ব্যবহার করেন এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মাংসে দুর্গন্ধ, তোপের মুখে সুলতান ডাইন

আপডেট সময় ০১:৪৪:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪

সিলেটে সুলতানস ডাইনের খাসির মাংসের সংগ্রহশালা থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তাদের মাংসের সংগ্রহশালায় অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সিলেট নগরের দাঁড়িয়াপাড়া এলাকার মেঘনা-বি-৩৩ ইমন হাউজিং সংগ্রহশালায় দুর্গন্ধ পেয়ে অভিযান চালান স্থানীয় কিছু যুবক। এ সময় ঘরের পাশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মাংস কেটে সেগুলো পরিষ্কার করতে দেখেন তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নগরীর দাঁড়িয়াপাড়া এলাকার ইমন হাউজিং এলাকার একটি ভাড়াটিয়া বাসা থেকে গত কয়েকদিন থেকে দুর্গন্ধে বেশ অতিষ্ঠ ছিলেন আশপাশের বাসিন্দারা। মঙ্গলবার বিকেলের পরে কয়েকজন স্থানীয় কিছু যুবক সুলতান’স ডাইনের মাংসের সংগ্রহশালায় অভিযান চালান।

এ সময় তারা পচা মাংসের অভিযোগে তোপের মুখে সেখানকার দায়িত্বরতরা বলেন, এখানে কিছু গন্ধ হবে। কারণ মাংসগুলো সিলেটে জবাই করা মাংস না। এগুলো ঢাকায় জবাই করা মাংস। সেখানে জবাই করার পর সিলেটে আনা হয়। এসময় যুবকরা স্থানীয় মুরব্বিদের শরণাপন্ন হলে তারা সুলতান ডাইনের কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে তারা গিয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তির বাসায় বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন।

মাংস সরবরাহকারী মা-বাবার দোয়া প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মোহাম্মদ সুমন জানান, আমাদের দোকান আছে ঢাকার কাপ্তান বাজারে। খাসিগুলো সেখানে জবাই করা হয়। পরে সেখান থেকে মাংসগুলো বস্তায় ভরে বাসে করে সিলেটের কদমতলীতে আনা হয়। সেখান থেকে আমরা কয়েকজন গিয়ে সেগুলো এখানে নিয়ে আসি। পরে মাংসের সাইজ করে সুলতান ডাইনে সাপ্লাই দেই।

তিনি জানান, আমরা প্রতিদিন ২০০-২৫০ কেজি খাসির মাংস ঢাকা থেকে নিয়ে আসি এবং সকালে এনে সেগুলো বিকেলে সাপ্লাই দেই। তবে সেগুলোতে এত দুর্গন্ধ থাকার কারণ সঠিকভাবে বলতে পারেননি তিনি।

সংগ্রহশালার পাশে থাকা একটি বাসার ভাড়াটিয়া রনজিত সরকার নামে একজন আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, আমার পাশের ঘর থেকে সিলেট সুলতান ডাইনে মাংস দেওয়া হয়। প্রথমে তারা আমার পার্শ্ববর্তী ঘরে মাংস কুপাতো। আমরা বাসার মালিকের কাছে অভিযোগ দেওয়াতে এখন আর ঘরে না করে বাসার পাশের বাউন্ডারি সংলগ্ন জায়গায় মাংস ধুয়ে ও কাটাকাটির কাজ করে। এখানে প্রচুর দুর্গন্ধ হয় যার কারণে আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক যুবক বলেন, এক মাস ধরে এই সমস্যায় আমরা ভুগছি। মাংস ভালো না তাই এত দুর্গন্ধ বের হয়। যদি মাংস ভালো হতো তাহলে নিশ্চয়ই সেগুলো থেকে দুর্গন্ধ বের হতো না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট সুলতান’স ডাইনের ম্যানেজার অপারেশনস জুলকার আহমেদ বলেন, আপনারা কি কোনো প্রমাণ পাইছেন, এই মাংস আমরা ওদের কাছ থেকে সংগ্রহ করি? পরে সেখানে থাকা সাংবাদিকরা প্রমাণ আছে বললে তিনি মাংস সংগ্রহের কথা স্বীকার করেন।

তিনি বলেন, আমরা প্রতিদিন কার মাংস প্রতিদিনই কাজে লাগাই, কোনো ফ্রোজেন মাংস আমরা ব্যবহার করি না। পরে উপস্থিত সাংবাদিকরা ঢাকার কাপ্তানবাজারে জবাই করা মাংস কীভাবে সিলেটে এনে ব্যবহার করেন এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।