যশোর সদর উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের রফিক হত্যাকাণ্ডের ২৬ বছর পর ছয় আসামির যাবজ্জীবনসহ দশ আসামির কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার বিকালে স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সামছুল হক এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে মামলার ৬ জনের যাবজ্জীবন এবং অপর ৪ জনকে তিন বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করেন বিচারক। এছাড়া রায়ে এই মামলার চার আসামি মৃত্যুবরণ করায় তাদের হত্যার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এ হত্যা মামলার বাদীপক্ষ রায়ে সন্তুষ্ট হলেও উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।
দণ্ডিতরা হলেন- আড়পাড়া গ্রামের ওমর আলীর ছেলে ওয়াদুদ, ফয়জুর আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম ও জহিরুল ইসলাম, মকু আলীর ছেলে মাহবুব আলী, ওয়াদুদের ছেলে আজিজুর, মহাসিন আলীর ছেলে আরিফ, আবুল হোসেনের ছেলে জাকির, সাখাওয়াৎ হোসেনের ছেলে কাওছার আলী, পাচু আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক ও সহিদুল ইসলাম।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ১৯৯৮ সালের ১৩ জানুয়ারি বিকালে আসামিরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রফিকুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালায়। এরপর আসামি ইকবাল তার হাতে থাকা বন্দুক দিয়ে রফিকুলকে আঘাত করে। রফিকুল পড়ে গেলে অন্যান্য আসামিরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ও গলা কেটে হত্যা করে। এ সময় রফিকুলের চাচাতো ভাই নাজের, আকরাম তাকে রক্ষায় ছুটে গেলে আসামিরা তাদের পিটিয়ে জখম করে। পরে আসামিরা রফিকুলের মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে চলে যায়।
এ ঘটনায় রফিকুলের ফুফাতো ভাই ইশারত হোসেন বাদী হয়ে ১৪ জনকে আসামি করে যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। ১৯৯৮ সালের ২৫ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সকল আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পিপি সাজ্জাদ মোস্তফা রাজা জানান, দীর্ঘ শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক বুধবার আসামি ওয়াদুদ, রবিউল, জহিরুল, মাহাবুব, আজিজুর ও আরিফকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে কারাদণ্ড এবং জাকির, কাওছার, আব্দুর রাজ্জাক ও সহিদুল ইসলামকে ৩ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাস করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। এছাড়া অপর ৪ আসামি মামলা চলাকালে মৃত্যুবরণ করায় তাদের হত্যার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন বিচারক। তিনি এ রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী শেখ ফয়সাল ইমাম বলেন, এ রায়ে তারা সন্তুষ্ট নন। যে কারণে ন্যায়বিচার পেতে তারা উচ্চ আদালতে যাবেন।