স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যাকবলিত কুমিল্লার নাঙ্গলকোট পৌরসভাসহ ১৬টি ইউনিয়ন। মঙ্গলবার ও বুধবার আবহাওয়ার উন্নতি হলেও অনেক এলাকা থেকে নামছে না বন্যার পানি।
কবে ঘরে ফিরবে আশ্রয়ণ কেন্দ্রে আসা মানুষ, তা নিয়ে রয়েছে তাদের দুঃশ্চিন্তা। আবার ঘরে ফিরে গেলে খাবে কী? পানি জমে থাকায় ঘরের চুলা জ্বলবে না। উপর্জন নেই বেশ কিছুদিন। হাতে নেই নগদ টাকা। এ অবস্থায় ঘরে ফিরলেও সেটা স্বস্তির হবে না, এমনটাই বলছে আশ্রয়ণ কেন্দ্রে আসা পানিবন্দি মানুষরা।
সরেজমিন বিভিন্ন এলাকার গিয়ে দেখা যায়, কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমর পানি, আবার কোথাও গলা পানি। অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে না গিয়ে রয়ে গেছেন নিজেদের ঘরের খাটের উপর। তবে ঠিক কবেনাগাদ বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়।
শাকতলী দক্ষিণপাড়ার দিনমজুর আবুল হোসেন ওরফে কামলা হার্টঅ্যাটাক করে ৪ দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে বিনা চিকিৎসায় পড়ে আছেন। চতুর্দিকে পানি ও যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে যেতে পারছেন না।
ওই গ্রামের দিনমজুর আবুল কালাম বলেন, গত ৮-১০ দিন ধরে ঘরের ভেতর পানিবন্দি হয়ে আছি আমরা। একটা খাটের উপর আরেকটা খাট দিয়ে সেখানে থাকি আমরা। রান্না করার কোনো ব্যবস্থা নেই। বাড়ি অনেক ভিতরে হওয়ায় কেউ সাহায্য করতেও আসছে না।
সাতবাড়িয়া এলাকায় আম্বিয়া বেগম বলেন, পানির মধ্যে বসবাস করতে করতে হাতপা সাদা হয়ে গেছে আমার। ওষুধ খেতে পারছি না। কোনোরকম জীবন বাঁচিয়ে পড়ে আছি। গত দুই দিন বৃষ্টি নাই কিন্তু পানিও কমছে না। এভাবে আর কতদিন?
আশ্রয়ণ কেন্দ্রে থাকা লোকজন বলেন, এক সাপ্তাহ পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে আছি। নিজেদের ঘরের মালামাল ঘরের পানির মধ্যে রেখে আসছি। প্রতি রাতে খবর আসছে ডাকাত ঢুকছে। ঘরের জিনিসপত্র আছে নাকি চুরি-ডাকাতি হয়ে গেছে তাও জানি না। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকাতে অনেকে খাবার দিয়ে যাচ্ছে কিন্তু এখান থেকে যাওয়ার পর কী খাব? কিভাবে সংসার চলবে? কিছুই বুঝতে পারছি না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুরাইয়া আক্তার লাকী বলেন, যেখানে মানুষ খাবার কষ্ট পাচ্ছে, আমরা আমাদের সাধ্যমতো খাবার পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।