ঢাকা ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাজশাহী পলিটেকনিক এক্স স্টুডেন্টস ফোরাম (আরপিইএসএফ) এর নির্বাচন ২০২৪-২৬ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অটোমোবাইল ওয়ার্কশপ মালিক সমিতি ভাটারা থানা কমিটির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে ফ্যাসিস্ট বিরোধী যত রাজনৈতিক সংগঠন আছে তাদের মধ্যে একটি ঐক্য গড়ে তুলতে হবে: নজরুল ইসলাম খান কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামির মৃত্যু ভোলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার নেতাকর্মীদের ত্যাগ স্বীকার করে কাজ করার শপথ করালেন, আমিনুল হক দৌলতের কান্দিতে অন্যরকম এক বিদায় সংবর্ধনা পেল শিক্ষক সেলিনা আক্তার চিন্ময়ের গ্রেফতার ও সাইফুল হত্যাকাণ্ড নিয়ে যত অপতথ্য ছড়িয়েছে বাংলাদেশকে ২২৬৫ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জার্মানি দুদকের মামলায় অব্যাহতি পেলেন জামায়াত সেক্রেটারি

প্লাবিত এলাকা যেন এক হাওড়, শুধুই পানি আর পানি

কুমিল্লায় প্লাবিত এলাকা যেন হাওড়ে রূপ নিয়েছে। দুচোখজুড়ে শুধুই জলরাশি। এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে তাকালে পানি ছাড়া কিছুই দেখা যায় না। বাঁধভাঙা গোমতীর পানিতে ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া। বানের পানি পাশের দেবিদ্বার ও মুরাদনগরেও ছড়িয়ে পড়ছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২০-২৫ গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। বানভাসিদের দিন কাটছে আতঙ্ক আর হতাশায়। কখন মুক্তি মিলবে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সেই অপেক্ষার প্রহর গুনছেন তারা।

সোমবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়া থেকে মহিষমারা, কালিকাপুর, ভরাসার এলাকার মাঝের বিলগুলো হাওড়ে পরিণত হয়েছে। উপজেলার দুর্গম এলাকাতে পানিবন্দি হাজারো মানুষ। উদ্ধারকর্মীরা শুকনো খাবারসহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ যেতে পারছেন, আবার অনেকে ফিরে আসছেন। কারণ প্রায় সব সড়কই পানির নিচে। নৌযানের সংকটে প্রত্যন্ত এলাকায় যেসব মানুষ বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা বা উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন তারা কাপড়চোপড় ও খাবার না পেয়ে হাহাকার করছেন। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ওইসব মানুষ সন্ধ্যা হলে এক ভীতিকর পরিস্থিতির মুখে পড়ছেন।

বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহিদা আক্তার বলেন, যারা ত্রাণ দিতে আসবেন, তারা যেন কষ্ট করে হলেও নৌকার ব্যবস্থা করে আসেন। তাহলে একদম দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আবেদ আলী বলেন, কুমিল্লার ১৭ উপজেলার মধ্যে ১৪টি বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১১৮টি ইউনিয়নের ৭ লাখের বেশি মানুষ। আমরা বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছি। সহায়তা অব্যাহত রাখতে মন্ত্রণালয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাসিমা আক্তার জানান, চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ২২৭টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক খন্দকার মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমান বলেন, বন্যাকবলিত মানুষের জন্য শুকনা খাবার, স্যালাইন ও ওষুধ মজুত আছে। ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত আছে। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি।

প্রসঙ্গত, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি ঢলে গোমতী নদীর পানির প্রবাহ ৩০ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। ওই রাজ্যের ডুম্বুর গেট খুলে দেওয়ায় বিশাল জলরাশি গোমতীতে আছড়ে পড়ে। এতে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে বুড়িচংয়ের বুড়বুড়িয়া এলাকা দিয়ে ভেঙে যায় গোমতীর বেড়িবাঁধ।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রাজশাহী পলিটেকনিক এক্স স্টুডেন্টস ফোরাম (আরপিইএসএফ) এর নির্বাচন ২০২৪-২৬ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্লাবিত এলাকা যেন এক হাওড়, শুধুই পানি আর পানি

আপডেট সময় ১১:২১:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪

কুমিল্লায় প্লাবিত এলাকা যেন হাওড়ে রূপ নিয়েছে। দুচোখজুড়ে শুধুই জলরাশি। এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে তাকালে পানি ছাড়া কিছুই দেখা যায় না। বাঁধভাঙা গোমতীর পানিতে ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া। বানের পানি পাশের দেবিদ্বার ও মুরাদনগরেও ছড়িয়ে পড়ছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২০-২৫ গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। বানভাসিদের দিন কাটছে আতঙ্ক আর হতাশায়। কখন মুক্তি মিলবে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সেই অপেক্ষার প্রহর গুনছেন তারা।

সোমবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়া থেকে মহিষমারা, কালিকাপুর, ভরাসার এলাকার মাঝের বিলগুলো হাওড়ে পরিণত হয়েছে। উপজেলার দুর্গম এলাকাতে পানিবন্দি হাজারো মানুষ। উদ্ধারকর্মীরা শুকনো খাবারসহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ যেতে পারছেন, আবার অনেকে ফিরে আসছেন। কারণ প্রায় সব সড়কই পানির নিচে। নৌযানের সংকটে প্রত্যন্ত এলাকায় যেসব মানুষ বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা বা উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন তারা কাপড়চোপড় ও খাবার না পেয়ে হাহাকার করছেন। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ওইসব মানুষ সন্ধ্যা হলে এক ভীতিকর পরিস্থিতির মুখে পড়ছেন।

বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহিদা আক্তার বলেন, যারা ত্রাণ দিতে আসবেন, তারা যেন কষ্ট করে হলেও নৌকার ব্যবস্থা করে আসেন। তাহলে একদম দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আবেদ আলী বলেন, কুমিল্লার ১৭ উপজেলার মধ্যে ১৪টি বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১১৮টি ইউনিয়নের ৭ লাখের বেশি মানুষ। আমরা বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছি। সহায়তা অব্যাহত রাখতে মন্ত্রণালয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাসিমা আক্তার জানান, চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ২২৭টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক খন্দকার মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমান বলেন, বন্যাকবলিত মানুষের জন্য শুকনা খাবার, স্যালাইন ও ওষুধ মজুত আছে। ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত আছে। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি।

প্রসঙ্গত, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি ঢলে গোমতী নদীর পানির প্রবাহ ৩০ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। ওই রাজ্যের ডুম্বুর গেট খুলে দেওয়ায় বিশাল জলরাশি গোমতীতে আছড়ে পড়ে। এতে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে বুড়িচংয়ের বুড়বুড়িয়া এলাকা দিয়ে ভেঙে যায় গোমতীর বেড়িবাঁধ।