ইউক্রেনে ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটির একাধিক গ্রাম ও শহরে এ হামলা চালনো হয়েছে। সোমবার এক্স বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ভলোদিমির জেলেনস্কি।
তিনি জানান, রুশ বাহিনীর অধিকাংশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় বিভিন্ন শহর ও গ্রামে আঘাত হেনেছে। ইউক্রেনের সেই অঞ্চলগুলো রুশ সীমান্তবর্তী।
সম্প্রতি ইউক্রেনজুড়ে বেড়েছে রাশিয়ার হামলা। শনিবার থেকে রুশ হামলায় ২৪ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। রুশ কর্মকর্তারা বলেছেন, রাশিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে ইউক্রেনের হামলায় তাদের ৬ জন নিহত হয়েছেন।
এদিকে কিয়েভের দাবি, রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে আরও গভীরে অগ্রসর হয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
অন্যদিকে ইউক্রেনে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। সোমবার স্থানীয় সময় সকালে রাজধানীতে হওয়া হামলায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়। দেশটির সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দিনের শুরুতে দুই দফা ড্রোন হামলা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৬ জন নিহতের খবর দিয়েছে বিবিসি।
ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়, রাশিয়ার ১১টি টিইউ-৯৫ বোমারু বিমান ইউক্রেনের আকাশসীমায় দেখা গেছে। তারা নিশ্চিত করেছে, একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। রাজধানীর বাইরে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হওয়ার শব্দ শোনা গেছে।
শনিবার দেশটির স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে কিছু দিন ধরেই একটি মারাত্মক হামলার আশঙ্কা করছিল ইউক্রেন। মার্কিন দূতাবাস এ বিষয়ে গত সপ্তাহেই তাদের সতর্ক করেছিল। কিয়েভের সেনা প্রশাসনের প্রধান সের্গেই পপকো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে বলেছেন, আন্তর্জাতিক সময় ২টা ৩০ মিনিটের দিকে কিয়েভের কাছাকাছি এলাকায় ১০টির বেশি ড্রোন ধ্বংস করা হয়।
এদিকে লুটস্ক শহরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বিস্ফোরণের তথ্য নিশ্চিত করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তারা জানিয়েছে। সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি যাচাই করা হচ্ছে।
এদিকে পোল্যান্ড সামরিক বাহিনীর অপারেশনাল কমান্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ জানিয়েছে, রুশ হামলার পর মিত্রদের বিমানের সঙ্গে যৌথভাবে তারা সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। হামলায় দেশটির সীমান্তবর্তী ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চল আক্রান্ত হয়েছিল।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রিয়ে ইয়েরমাক প্রতিশোধের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে টেলিগ্রামে বলেছেন, ‘আমাদের হামলা করার জন্য রাশিয়াকে চড়া মূল্য দিতে হবে। তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস করা হবে।’
তবে এ হামলার বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করা হয়নি। বেসামরিকদের লক্ষ্য করে হামলা পরিচালনার অভিযোগ দুপক্ষই বরাবর অস্বীকার করে আসছে। প্রত্যেকেরই দাবি, প্রতিপক্ষের যুদ্ধ প্রচেষ্টা দুর্বল করতে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস করাই তাদের উদ্দেশ্য। সূত্র: রয়টার্স ও এএফপি