আমেরিকার ইচ্ছাতেই ড. ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হয়েছেন। এখনকার সরকারের প্রধান বা ভবিষ্যতের নির্বাচিত বিএনপি বা জামায়াত থেকে নির্বাচিত মন্ত্রী পরিষদ আমেরিকার পাপেট হবে। যতদিন বাংলাদেশে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ততদিন আমেরিকা বাংলাদেশে বেশ কিছু সুবিধা করতে পারেনি। আমেরিকা শেখ হাসিনার কাছে একটা প্রস্তাব দিয়েছিল যেখানে তারা বলেছিল, আমেরিকা সেন্ট মার্টিন দ্বীপে সেনা ঘাঁটি তৈরি করতে চায় এবং এর জন্য তারা শেখ হাসিনা ও তাঁর দলকে বহুদিন পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে সাহায্য করবে। তবে শেখ হাসিনা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এর জন্য সেদিন ভারত ও চিন উভয় দেশের স্বার্থ সুরক্ষা করেছিলেন শেখ হাসিনা।
তবে হাসিনার স্বার্থ সুরক্ষিত হয়নি। ২০২৪ সালে নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতলেও আগস্টে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য হন। যার মূলে আমেরিকা আছে এটা পৃথিবীর কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। উল্লেখ্য, পাকিস্তানে ইমরান খানের সাথে ঠিক এই রকম কিছুই হয়েছিল এবং সেখানে আজ সৌদি পরিবার ঘনিষ্ঠ, ঘুরপথে আমেরিকা ঘনিষ্ঠ শেহবাজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী। দুর্নীতি জর্জরিত নওয়াজ শরিফ যিনি ইংল্যান্ডে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনিও আজ পাকিস্তানেই আছেন।
কিছু মাস আগেই ইরানের রাষ্ট্রপ্রধান ইব্রাহিম রাইসি বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান। সবাই ইজরায়েলকে দোষ দিলেও মনে রাখতে হয় ইব্রাহিম রাইসিও আমেরিকা বিরোধী। তাই ইজরায়েলের পিছনে আমেরিকা যে সাহায্য ৭০%-ও নেই, এটা না ভাবাই ভালো।
উল্লেখ্য, এই দুই দেশের সরকার প্রধানরা যখন ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন তখন দেশগুলোতে জন বিক্ষোভ হয়েছে। ইরানের হিজাব বা পাকিস্তানের অর্থনৈতিক। আর পরবর্তী যে শাসক আসছেন তিনি অনেকটাই বা পুরোটাই পশ্চিমীপন্থী। ইরানের নতুন রাষ্ট্র প্রধান পশ্চিমী ভাবধারাপন্থী। আর বাংলাদেশের অবস্থাও ঠিক এই রকমই। শেখ হাসিনা বাংলাদেশে যে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার অবসান ঘটেছে তবে তাঁর চলে যাওয়ার পর পশ্চিমা সংস্থাগুলোর অনুপ্রবেশ ঘটছে। কিছু বছরের মধ্যে বাংলাদেশে (চট্টগ্রাম) সংখ্যালঘু সম্প্রদায় খ্রিস্টানদের জনসংখ্যা চোখের আড়ালে বাড়বে এবং মায়ানমারের রাজনীতিতেও পরিবর্তন আসছে। মহম্মদ ইউনূস আমেরিকার সেই পথকেই মসৃণ করবে।
আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে টিকে থাকার জন্য এবং নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য, নিজের উন্নতি ও গুরুত্ব বজায় রেখে অন্যের বিরোধিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি সেই রাষ্ট্র মোড়ল দেশের সঙ্গে বিরোধিতা করার ক্ষমতা রাখে তাহলে সেই দেশ চর্চা ও গুরুত্বের মধ্যে পড়ে। তবে যে বিরোধিতা করতে পারে না, তার গুরুত্বও কম।