ঢাকা ১১:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শহীদ জিয়া গবেষণা পরিষদের আন্তর্জাতিক সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ বোরহানউদ্দিনে র‍্যাবের অভিযানে ধর্ষণ মামলার পলাতক আসামী আটক সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন সমন্বয়‌কের বাড়ির দেয়া‌লে ‘মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নাও’ লিখে হুমকি কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামে বীরমুক্তিযোদ্ধা লাঞ্ছিতের ঘটনায় আটক ৫ ১৬ বছরের জেদ, বিএনপি ক্ষমতায় এলেই চুল কাটবেন সাবু! পর্যটক সীমিত করলেও নির্মাণ হচ্ছে বহুতল ভবনসেন্টমার্টিনে জামালপুরে ফুলকপি ও লাউয়ের মিশ্র চাষে লাভবান আনিস আওয়ামী লীগ ক্ষমতাকে নিজের মনে করে ব্যবহার করেছেন:রংপুরে জামাতের আমীর মঠবাড়িয়ায় আ.লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ

এক মাস ধরে ছাদ ছিদ্র করেছিল সেই ৪ আসামি

কনডেম সেলের ছাদ ছিদ্র করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে সেখানকার নিরাপত্তা নিয়ে। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ওই চার আসামি একটি সেলে গাদাগাদি করে ছিলেন। প্রায় এক মাস ধেরে তারা ওই ছাদ ফুটো করেন।

জানা গেছে, বগুড়া জেলা কারাগার ১৮৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত। ১৪১ বছরের প্রাচীন কারাগার চুন-সুরকির গাঁথুনি দিয়ে নির্মিত। ছাদের নিচে লোহার বিম দেওয়া থাকলেও ভেতরে কোনো রড নেই। এতে ছাদ দুর্বল হয়ে গেছে। এ সুযোগে কনডেম সেলে থাকা চার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি পরিকল্পনা করে বালতির লোহার হাতল দিয়ে প্রায় এক মাস ধরে ছাদের কর্নারের একটি অংশ ছিদ্র করে।

পুলিশ বলছে, কারাগারের সব সিসিটিভি ক্যামেরা সচল নেই। ৭০০ বন্দী ধারণক্ষমতার কারাগারটিতে তিন গুণের বেশি ২ হাজার ২০০ বন্দী আছেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ওই চার আসামি একটি সেলে গাদাগাদি করে ছিলেন। ওই সেলের ভেতরে কারারক্ষী যাওয়ার সুযোগ ছিল না। কারাকক্ষের যে জায়গায় ছাদে ফুটোটি করা হয়েছে, সেটি ভেতরে না ঢুকলে বোঝার উপায় নেই।

কারাগারের পূর্ব-উত্তর কোণে তিনটি কনডেম সেল রয়েছে। সেখানে ১৩ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদিকে রাখা হয়েছে। জাফলং ভবনের কনডেম সেলে ছিল এই চারজন। এরা সেলের ছাদ দুর্বল জেনে ছিদ্র করে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। প্রায় এক মাস আগে সেলের বাথরুমে থাকা বালতির লোহার হাতল খুলে সোজা করে।

এরপর পুরোনো কাপড় ও বিছানার চাদর পেঁচিয়ে রশির মতো করে নেয়। এসব রশি দেওয়ালে বেঁধে তারা ছাদ স্পর্শ করতে পারে। এরপর ওই লোহার হাতল দিয়ে প্রতিদিন একটু একটু করে ছিদ্র করতে থাকেন। সম্প্রতি ছিদ্রটি বড় হয়ে সেদিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

মঙ্গলবার রাত ৩টা ৫৫ মিনিটের দিকে চার কয়েদি একে একে ওই ছিদ্র পথে কনডেম সেলের ছাদে আসেন। এরপর তারা হামাগুড়ি দিয়ে গ্রিলের বেষ্টনী পার হন। পরে ওই কাপড় ও চাদর দিয়ে তৈরি রশি বেয়ে জেল চত্বরে নামেন। এরপর পাশে করতোয়া নদী পেরিয়ে কাছেই চাষি বাজারে গিয়ে সমবেত হন। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভোর ৪.১০ মিনিটের দিকে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সহায়তায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শহীদ জিয়া গবেষণা পরিষদের আন্তর্জাতিক সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ

এক মাস ধরে ছাদ ছিদ্র করেছিল সেই ৪ আসামি

আপডেট সময় ১০:২৬:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০২৪

কনডেম সেলের ছাদ ছিদ্র করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে সেখানকার নিরাপত্তা নিয়ে। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ওই চার আসামি একটি সেলে গাদাগাদি করে ছিলেন। প্রায় এক মাস ধেরে তারা ওই ছাদ ফুটো করেন।

জানা গেছে, বগুড়া জেলা কারাগার ১৮৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত। ১৪১ বছরের প্রাচীন কারাগার চুন-সুরকির গাঁথুনি দিয়ে নির্মিত। ছাদের নিচে লোহার বিম দেওয়া থাকলেও ভেতরে কোনো রড নেই। এতে ছাদ দুর্বল হয়ে গেছে। এ সুযোগে কনডেম সেলে থাকা চার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি পরিকল্পনা করে বালতির লোহার হাতল দিয়ে প্রায় এক মাস ধরে ছাদের কর্নারের একটি অংশ ছিদ্র করে।

পুলিশ বলছে, কারাগারের সব সিসিটিভি ক্যামেরা সচল নেই। ৭০০ বন্দী ধারণক্ষমতার কারাগারটিতে তিন গুণের বেশি ২ হাজার ২০০ বন্দী আছেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ওই চার আসামি একটি সেলে গাদাগাদি করে ছিলেন। ওই সেলের ভেতরে কারারক্ষী যাওয়ার সুযোগ ছিল না। কারাকক্ষের যে জায়গায় ছাদে ফুটোটি করা হয়েছে, সেটি ভেতরে না ঢুকলে বোঝার উপায় নেই।

কারাগারের পূর্ব-উত্তর কোণে তিনটি কনডেম সেল রয়েছে। সেখানে ১৩ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদিকে রাখা হয়েছে। জাফলং ভবনের কনডেম সেলে ছিল এই চারজন। এরা সেলের ছাদ দুর্বল জেনে ছিদ্র করে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। প্রায় এক মাস আগে সেলের বাথরুমে থাকা বালতির লোহার হাতল খুলে সোজা করে।

এরপর পুরোনো কাপড় ও বিছানার চাদর পেঁচিয়ে রশির মতো করে নেয়। এসব রশি দেওয়ালে বেঁধে তারা ছাদ স্পর্শ করতে পারে। এরপর ওই লোহার হাতল দিয়ে প্রতিদিন একটু একটু করে ছিদ্র করতে থাকেন। সম্প্রতি ছিদ্রটি বড় হয়ে সেদিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

মঙ্গলবার রাত ৩টা ৫৫ মিনিটের দিকে চার কয়েদি একে একে ওই ছিদ্র পথে কনডেম সেলের ছাদে আসেন। এরপর তারা হামাগুড়ি দিয়ে গ্রিলের বেষ্টনী পার হন। পরে ওই কাপড় ও চাদর দিয়ে তৈরি রশি বেয়ে জেল চত্বরে নামেন। এরপর পাশে করতোয়া নদী পেরিয়ে কাছেই চাষি বাজারে গিয়ে সমবেত হন। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভোর ৪.১০ মিনিটের দিকে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সহায়তায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।