ভারতের লোকসভা নির্বাচনে দল হিসেবে ক্ষমতাসীন বিজেপি সবচেয়ে বেশি আসন পেতে চললেও চার বছর আগের নির্বাচনের চেয়ে এবার তাদের আসন কমছে। অপরদিকে আসন বাড়ছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত ফল অনুযায়ী, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক আসন পেতে চলেছে। তবে ওই জোট থেকে শরিকদের নিজেদের পক্ষে টানতে পারলে কংগ্রেসেরও সেই সম্ভাবনা তৈরি হবে।
এ প্রেক্ষাপটে লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার মধ্যে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী মঙ্গলবার দিল্লিতে কংগ্রেসের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, এ নির্বাচন কেবল একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল না। নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিলেন এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছিলেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীকেও কারাগারে পুরেছে।
জনগণ ব্যবসায়ী গৌতম আদানির সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির সম্পর্ককে এক করে দেখেছে মন্তব্য করে রাহুল গান্ধী বলেন, এটা দুর্নীতির সরাসরি সম্পর্ক। ভোটাররা মোদিকে বলে দিয়েছেন, তারা আর তাকে চান না।
সংবাদ সম্মেলনের সময় বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ২৯০ আসনে এগিয়ে ছিল। আর কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট এগিয়ে ছিল ২৩৪টি আসনে। ৫৪৩ আসনের লোকসভায় সরকার গঠনে প্রয়োজন ২৭২ আসন। একক দল হিসেবে বিজেপি এগিয়ে ছিল ২৪০ আসনে আর কংগ্রেস এগিয়ে ছিল ১০০টি আসনে। বর্তমানে এনডিএ জোটে থাকা তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ১৬টি আর জনতা দল (ইউনাইটেড/জেডি-ইউ) ১২টি আসনে এগিয়ে ছিল।
সরকার গঠনের চেষ্টায় সাবেক জেডি–ইউ ও টিডিপির সঙ্গে কংগ্রেস আলোচনা করবে কি না, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘ইন্ডিয়া জোটের সদস্যদের নিয়ে আগামীকাল (বুধবার) আমরা বৈঠক করব। আগামীকাল আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
এ সময় রাহুল বলেন, ‘আমরা ইন্ডিয়া জোটের সব সদস্যের প্রতি সম্মান জানাই। আমরা একসঙ্গে এ নির্বাচনে লড়েছি। জাতির সামনে নতুন রূপকল্প তুলে ধরেছে কংগ্রসে।’
ভোটের ফলাফলকে মোদির বিরুদ্ধে গণরায় দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেআইনিভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছিল বিজেপি। এসব প্রতিষ্ঠানকে তারা বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছিল।
লোকসভা নির্বাচনে জনগণ ও গণতন্ত্রের জয় হয়েছে উল্লেখ করে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, জনগণ কোনো একটি দলকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেয়নি। বিজেপি এক ব্যক্তির জন্য ভোট চেয়েছিল। মোদিজির বিরুদ্ধে গণরায় এসেছে।