ভোলার তজুমউদ্দিন উপজেলার বিছিন্ন চর- ‘চর রায়হান’ দখলের অভিযোগে আ.লীগ নেতা সহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ওই চরের বসবাসরত এলাকাবাসী ঝাড়ু মিছিল করেন।
গত (১৮ এপ্রিল) রাতে ওই চরের এক নারীকে কুপ্রস্তাব দেন আঃ হাই চৌধুরী’র এক কর্মী। এতে রাজি না হয়ে প্রতিবাদ করলে রাতে ওই নারীর উপর হামলা চালানো হয়, পিটিয়ে নারীর হাত ভেঙে দেয়।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এতে উভয় পক্ষের আহত হয় অন্তত ১০ জন।
ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ – ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাতে আঃ হাই চৌধুরী’র এক কর্মী ওই নারীকে কুপ্রস্তাবে দেয়। কুপ্রস্তাবে রাজি না হয়ে এর প্রতিবাদ করলে তার উপর হামলা চালায়, এতে ওই নারীর ডান হাত ভেঙে যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরদিন দুপক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়।এতে কুলসুম, লিপি,সালাম ও মোহাম্মদ আলী সহ বেশ কয়েকজন আহত হয়।তাদেরকে উদ্ধার করে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের অভিযোগ আঃ হাই চৌধুরী সহ আরও কিছু নেতার ইন্ধনে বাহাদুর ভূইয়া, জলদস্যু ফরিদ, মো. হোসেন ও কামাল সহ আরও বেশ কয়েকজন মিলে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। তিনি আরও জানান- মো.হোসেন একজন চিহ্নিত জলদস্যু তার নামে একটি ডাকাতি মামলা, একটি মারামারি মামলা আছে, যাহার মামলা নং জি আর ৬৯/২৩, আরেকটি জি,আর ৬৮/১৯..
চরে বসবাসরত মো.জাকির মাল বলেন-নদী ভাঙ্গনের পর জেগে উঠে ১ নং বড় মলংচড়া ইউনিয়ন। এরপর বর্তমান চেয়ারম্যান নুরনবী শিকদার নতুন করে নাম দেয় ‘চর রায়হান’ আস্তে আস্তে জেগে উঠা চরে বসবাস শুরু করে মানুষ। অনেকেই এই চরে ঘরবাড়ি করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে বর্তমান চেয়ারম্যান নুরনবী শিকদার। তাদের সুখে দুঃখে পাশে থাকেন। তিনি একটু একটু করে আমাদের নেতা ভোলা ৩ আসেনর এমপি আলহাজ্ব নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ভাইয়ের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় অনুদান এনে এই চর রায়হান’কে বসবাসের উপযোগী করে তুলেন। হঠাৎ করে এক দুই বছর ধরে আঃ হাই চৌধুরী সহ কিছু নেতার চোখ পরে ‘চর রায়হানে’ তারা দিনরাত চিহ্নিত জলদস্যু সন্ত্রাসী বাহাদুর ভূইয়া, মো. হোসেন, ফরিদ, ও কামালসহ নিয়ে চরে লুটপাট চালাচ্ছেন। নারীদের শ্লীলতাহানি করে আসছেন। গরু,মহিষ ও ভেড়া দিনের পর দিন চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এতে প্রতিবাদ করতে গেলেই সৃষ্টি হয় বিরোধের।
তিনি আরও বলেন- আঃ হাই চৌধুরী এক সময় বিএনপি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। এরপর তিনি আ.লীগে যোগ দিয়ে ক্ষমতা প্রয়োগ করে চর দখলের পায়তারা শুরু করছেন। আঃ হাই চৌধুরী তজুমউদ্দিন আ.লীগের সহ- সভাপতি, তজুমউদ্দিন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন দুলাল, নাজিম উদ্দীন বাবুলের ছত্র ছায়ায় থেকে এসব তাণ্ডব করছেন।
উল্লেখিত বিষয় জানতে চাইলে আঃ হাই চৌধুরী বলেন-দলীয় ক্ষমতা দেখিয়ে চর দখল করার চেষ্টা হচ্ছেনা, মূলত বাপ-দাদার সম্পত্তি দাবী করে চর দখল করতে চাচ্ছি। বাপ-দাদার সম্পত্তি প্রমাণে জমির কাগজ পত্র আছে কিনা এবং আপনার ইন্ধনে চরে হামলা চালায় এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর তিনি দিতে পারেনি, ব্যস্ত দেখিয়ে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন। এরপর ও যোগাযোগের চেষ্টা করলে ফোন বন্ধ করে দেন।
অভিযুক্ত বাহাদুর ভূইয়ার সাথে কথা বলার জন্য তার মুঠোফোনে কল দিলে রিসিভ করে,প্রথমে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি হ্যালো হ্যালো বলে ফোন কেটে দেন। পুনরায় চেষ্টা করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তজুমউদ্দিন থানার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ারুল হক জানান -চর রায়হান একটি বিছিন্ন চর। ওই চরের পুরো জমি এখনো জেগে উঠেনি। যতোটুকু জেগে উঠেছে, তাতে কিছু মানুষ বসবাস শুরু করেছেন। পুলিশের কাছে মৌখিক অভিযোগ করা হচ্ছে, চর রায়হানে আঃ হাই চৌধুরী নামক এক আ.লীগ নেতা চরের কিছু অংশ দখলে নেওয়া পায়তারা চালাচ্ছে। তবে পুলিশ খোঁজ নিয়ে জেনেছে, উভয় পক্ষই পেশিশক্তিতে এগিয়ে আছে। কোন পক্ষই এই বিরোধ নিয়ে কোন লিখিত অভিযোগ কিংবা মামলা করেনি।