সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিসহ ভোট বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে রাজপথের প্রধান বিরোধীদল বিএনপি ও সমমনারা।
রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া ১৩তম দফার সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এরআগে গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ১২ দফা অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি-সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো।
দিনব্যাপী সড়ক-রেল-নৌপথে অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। তবে, সংবাদপত্র পরিবহনকারী বা গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ পরিবহনকারীসহ জরুরী যানবাহন অবরোধের আওতার বাইরে থাকবে।
অবরোধের সমর্থনে এরই মধ্যে কুমিল্লার চান্দিনা এলাকায় সকাল সাতটায় ঝটিকা বিক্ষোভ মিছিল করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এছাড়া জামায়াত ইসলামীও রাজধানীতে মিছিল করেছে।
অবরোধ সফল করতে নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। পাশাপাশি গত তিনদিন ভোটবর্জন ও অসহযোগ আন্দোলন সফল করার আহ্বান জানিয়ে লিফলেট বিতরণ করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘এরশাদের আমলেও আমরা নির্বাচন বর্জন করেছি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বর্জন করেননি? তখন তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছিলেন, নির্বাচন পছন্দ হয়নি তাই নির্বাচন বর্জন করেছিলেন। ২২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণ, বুদ্ধিজীবী মহল, এমনকি আন্তর্জাতিক মহল থেকেও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। শুধু উনার (শেখ হাসিনা) একগুয়েমিতে তিনি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করছেন না। তিনি জানেন, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ জিতবে না।’
রিজভী আরও বলেন, ‘বিএনপি ও সমমানা দল যে আন্দোলন করছে সে আন্দোলন ন্যায়সঙ্গত। সত্যের স্বপক্ষের আন্দোলন। যারা সত্যের পক্ষে থাকে তাদের ওপরে তো নিপীড়ন নির্যাতন নেমে আসেই। আমাদের সব বাধা অতিক্রম করতে হবে। সরকারের সব রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’
এর আগে ২০ ডিসেম্বর নির্বাচন বর্জনসহ সরকারকে সব ক্ষেত্রে অসহযোগিতা করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানায় বিএনপি। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোটগ্রহণে নিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘নির্বাচনের নামে বানর খেলায় যাবেন না। ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। নির্বাচনে কারা এমপি হবেন সেই তালিকা তৈরি হয়ে গেছে।’
সরকারকে সব ধরনের কর, খাজনা, পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎবিল দেওয়া স্থগিত রাখার অনুরোধ জানান রিজভী। তিনি বলেন, ‘ব্যাংক খাতের মাধ্যমে সরকার সবচেয়ে বেশি অর্থ লুটপাট করেছে। ফলে ব্যাংকে টাকা জমা রাখা নিরাপদ কি না সেটি ভাবুন।’
পাশাপাশি মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় অভিযুক্ত লাখ লাখ রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে আদালতে হাজিরা দেওয়া থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানান রিজভী।