সাদা রঙের নোহা (ঢাকা মেট্রো গ- ১৪-৬৮৫২) মাইক্রোবাস। গাড়ীতে বিভিন্ন মিডিয়া হাউজের স্টিকার, ভিজিটিং কার্ড, বুম। আর ওই গাড়ীতে চেপে কথিত ৫ সাংবাদিক সরাসরি উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে। এসেই নিজেদের অনেক বড়মাপের সাংবাদিক পরিচয় দিতে শুরু করে এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে দেখা করেন। সেখানে গিয়ে তার সাথে দেখা করেন এবং আর্থিক সুবিধা দাবি করেন। তিনি তাতে রাজি না হলে সবশেষে তারা দূর থেকে এসেছেন তাই গাড়ীর তেল খরচ ও দুপুরের খাবারের জন্য অর্থ দাবি করেন। পরে বিষয়টি সন্দেহ হলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয় মূলধারার গণমাধ্যম কর্মী এবং পরিচয় দেওয়া হাউজগুলোের সাথে যোগাযোগ করেন। তাতে প্রতারনার প্রমান মিলে।
এতক্ষণ বলছিলাম মঙ্গলবার (১৩ জুন) বিকেলে গাজীপুরের কালীগঞ্জে উপজেলা ভূমি অফিসে সাংবাদিক পরিচয়ে টাকা দাবি করা ৫ প্রতারক সাংবাদিকের গল্প।
পরে নামদারি ওই ৫ সাংবাদিকদের গণ উপদ্রব দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ২৯১ ধারায় প্রত্যেককে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরো ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। আর এ দন্ডাদেশ প্রদান করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাফছা নাদিয়া।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলো- নেত্রকোনা জেলার সদর এলাকার মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে মনিরুজ্জামান (৫৪)। তিনি নিজেকে বিটিভির খোঁজ খবর অনুষ্ঠান ও সাপ্তাহিক এশিয়া বার্তার সাব-এডিটরের পরিচয় দেন। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পূবাইল করমতলা এলাকার বাহার আলী দেওয়ানের ছেলে মাজহারুল ইসলাম অনিক দেওয়ান (২৪)। তিনি নিজেকে দৈনিক আজকের আলোকিত সকালের ক্রাইম রিপোর্টারের পরিচয় দেন। একই পত্রিকার ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি পরিচয় দেন টঙ্গী আরিচপুর এলাকার বাচ্চু সরকারের ছেলে নাজমুল ইসলাম সেলিম সরকার (৩৪) ও টঙ্গী এরশাদনগর এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে কামরুজ্জামান (২৪)। এছাড়াও একই পত্রিকার রিপোর্টার পরিচয় দেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সোয়াইবপুর গ্রামের ফখরুল ইসলামের মেয়ে রোজিনা আক্তার (১৯)।
উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাফছা নাদিয়া বলেন, যারা মিডিয়া হাউজের নাম ব্যবহার করে নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে উপজেলার বিভিন্নস্থানে এ ধরনের ঘটনা ঘটাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, নিজেকে সাপ্তাহিক এশিয়া বার্তার সাব-এডিটরের পরিচয় দানকারী মনিরুজ্জামান নিজের ভুল স্বীকার করে বলেন, স্থানীয় এক টেলিভিশন সাংবাদিক তাদেরকে এখানে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে এসেছিল। তবে তিনি ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেননি।