সিলেট সিটি করপোরেশনের টানা চার বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সদ্য সাবেক যুগ্ন আহবায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর পর এবার আসন্ন সিসিক নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন সিসিকের টানা দুইবারের নির্বাচিত বর্তমান মেয়র ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী।শনিবার বিকেল ৪টার দিকে নগরীর রেজিস্ট্রারী মাঠে আয়োজিত এক নাগরিক সভায় তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আরিফ বলন, ভোট নিয়ে মানুষের আস্তা আজ তলানিতে চলে গেছে। নির্বাচন আসনে মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে ভোট কি তারা দিতে পারবে, না আগের রাতেই ভোট শেষ হয়ে যাবে। এই মুহুর্তে শুধু সিলেটেই নয়, সারাদেশেই কোন নির্বাচনী পরিবেশ নেই। বিশ্বের উন্নত দেশে যখন ইভিএমকে গ্রহন করা হচ্ছে না, তখন নির্বাচনে ইভিএম নিয়ে আসা হয়েছে। এই নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন না করে ভোট ডাকাতি করতে চায়। সিলেটবাসী ইভিএম বুঝে না, ইভিএম চায় না। নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোট ডাকাতির নীলনকশা চুড়ান্ত করা হয়েছে। প্রহসনের নির্বাচনের জন্য যত উপকরন দরকার তা বিদ্যমান। ভোট দিবেন এক প্রতীকে চলে যাবে অন্য প্রতীকে। এই নিয়ে নির্বাচন হবে প্রহসনের নির্বাচন, তাই আমি বিএনপি দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহৃানের পরামর্শে এই প্রহসনের নির্বাচনে অংশ নেব না।
তিনি আরো বলেন, বিএনপির দলীয় মনোনয় নিয়ে আমি দুই বার সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বচিত হয়েছি। গত কয়েক সপ্তাহ থেকে আমার উপর যে মানসিক চাপ যাচ্ছে তা কেউ উপলব্ধি করতে পারবে না। আমার সাথে যে অশুভ কাজ করা হয়েছে তা সময় সুযোগ হলে পরবর্তীতে আপনাদের কাছে খোলাসা করব। নগরবাসী সব সময় আমার সুখে, দুঃখে সব সময় পাশে ছিলেন। আমার কোন সংকটেই নগরবাসী আমাকে ছেড়ে যাননি। আপনারা বিএনপিকে ভালোবাসেন বলেই বিগত নির্বাচনে কেন্দ্র পাহারা দিয়ে ধনের শীষের বিজয় নিশ্চিত করেছিলেন। নগরবাসীর এই নিঃস্বার্থ ভালোবাসাই আমার জন্য অমূল্য সম্পদ।মেয়র আরিফ আরো বলেন, আমি মেয়র পদে মনোনয়পত্র সংগ্রহ না করলেও আমার দলের নেতাকর্মীদের বিনা কারনে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে। এটি তো কোন নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষণ হতে পারে না। আমি ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে শুরু করে বিএনপিতে আছি, এবং আমৃত্যু থাকতে চাই। দলের জন্য ক্ষতিকর কোন কর্মকাণ্ডের আমি যেতো পারি না। আমাকে যারা ‘উকিল আব্দুস সত্তার’ মনে করেছিলেন তাদের ধারনা ঠিক নয়। বিএনপি দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আন্দোলন চলমান রয়েছে।
এসময় তিনি সিলেটবাসীর মায়া ও মমতা নিয়ে যেন চিরবিদায় নিতে পারেন সে জন্য নগরবাসীর প্রতি দোয়া চান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, বিএনপি কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সহ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, মহানগর বিএনপির সদ্য সাবেক সদস্য সচিব মিফতাহ্ সিদ্দিকী, সিলেট জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, সিলেট সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শামীম আহমদ, কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ, বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দাল মিয়া,
উল্লেখ্য, এর আগে গত বৃহস্পতিবার সিলেট সিটি করপোরেশনের টানা চার বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সদ্য সাবেক যুগ্ন আহবায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদী সংবাদ সম্মেলনে দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি সর্বস্থরের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্বাচন বর্জন করে মাঠে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয় হওয়ার আহবান জানান।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ২৩ মে এই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। মনোনয়নপত্র বাছাই ২৫ মে ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১ জুন। আগামী ২১ জুন ইভিএমে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।
আমাদের মাতৃভূমি/মাজহারুল